স্বপন ভট্টাচার্য
প্রাবন্ধিক, গদ্যকার, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক
বিজ্ঞানের যে সব খবর ২০২১ এর শেষার্ধে সম্পূর্ণ ভুল কারণে শিরোনাম কেড়ে নিল তা হল ওমিক্রনের উদ্ভব। খবরের পরিবেশনা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এমনভাবে হতে থাকল যাতে আমজনতার ধারণা হওয়ার সুযোগ থেকেই যায়— এটা বুঝি আর একটা নতুন ভাইরাস। শুধু সংবাদমাধ্যম কেন, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য শোনা গেছে এই মর্মে যে ওমিক্রনই হল কোভিডের যম। সে এসে পড়েছে, সুতরাং এবার কোভিড দূর হবে। আদতে ওমিক্রন কিন্তু সার্স-কোভ ২-এর নবীনতম প্রকরণ। বাংলা করে বললে— ভ্যারিয়ান্ট! ২০২১-এর শুরু হয়েছিল মোটামুটি আশাব্যঞ্জকভাবে। টিকা এসে গেছে, সুতরাং আর চিন্তা নেই। টিকাকরণের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের উপর চাপ কমল। টিকা লবি বলল— এটা তাদের সাফল্য আর অ্যান্টি-ভ্যাক-রা বলে চলল আসলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে এবং সংক্রমণের হার একটা ক্রিটিক্যাল লিমিট অর্জন করবার পরে এমনটা হওয়ারই কথা। ওমিক্রন এই দুই তরফের মধ্যে সিরিয়াল ঠাকুরপোর মত সেতুবন্ধ করে দিয়েছে। কীভাবে সেটা বলবার আগে বলা দরকার ভ্যারিয়ান্টগুলোর উদ্ভব হয় কীভাবে?
জীবনবিজ্ঞানের ভাষায় প্রকরণ বা ভ্যারিয়ান্ট হল তারা যারা মূল জীবাণুর জিনচরিত্রে কিছু অদলবদলের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। ধরুন, আমগাছের কথা। ল্যাংড়া, হিমসাগর, চৌষা, ফজলি থেকে শুরু করে অ্যালফনসো— হাজারো ভ্যারাইটি হলেও মূল গাছটা যে আমই তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তা ভালো আম থেকে ভালোতর আম তৈরি করবার জন্য উদ্যানপালক কী করেন? কলম করেন, গ্র্যাফটিং করেন। আর আম্রগবেষক কী করেন? পছন্দের আমগুলোর জার্মপ্লাজম (যৌন জননকোষ বা কলা) বা সোমাপ্লাজম (দেহকোষ বা কলা) সংগ্রহ করেন, এটার সঙ্গে ওটা মেশান এবং টিস্যু কালচার করে অগণন নতুন ভ্যারাইটির চারা আমাদের রসনা তৃপ্তির ‘সরস মেলা’য় সাজিয়ে দেন। আদতে যা হয় এসব করে তা হল আদি আম্রফলের জিনচরিত্রে বদল। বদল যদি স্থায়ী হয় এবং প্রার্থিত ফল দেয় তবেই তা ভ্যারাইটি হিসেবে মান্যতা পায়, নতুবা সে ট্রায়াল বৃথা যায়। ভাইরাস এ কাজটাই করে প্রাকৃতিকভাবে। কৃত্রিমভাবেও তা করানো সম্ভব বলে চিনের দিকে এত আঙুল, কিন্তু যদি ধরেও নেওয়া যায় উহানের ল্যাবরেটারি থেকে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, তবুও এই যে আলফা, বিটা, ডেল্টা এবং সাম্প্রতিকতম ওমিক্রন, এদের উদ্ভব কিন্তু ২০১৯-এর শুরুতে প্রথমবার শনাক্ত হওয়া সার্স-কোভ ২-র স্বতঃস্ফূর্ত জিনচরিত্র বদলের মাধ্যমে। এমনিতে ভাইরাসের সজীবতার সপক্ষে যুক্তি বলতে এক, সুনির্দিষ্ট পোষক বা পোষকগোষ্ঠীকে সংক্রামিত করবার ক্ষমতা যাকে আমরা তার অ্যান্টিজেনধর্মিতা বলতে পারি এবং দুই, আক্রান্ত পোষকের দেহকোষের সব জরুরি ক্রিয়াকলাপকে নিজের নিয়ন্ত্রণাধীন করে, কার্যত সেটিকে দাস বানিয়ে ফেলে বংশবৃদ্ধি করা। এই দুটি কাজের জন্যই প্রয়োজনীয় খবরাখবর থাকে ওদের জিনবস্তুতে, কোভিডের ক্ষেত্রে যেটা হল আরএনএ। সেটায় বদল এনে ভাইরাস তার অনেক কিছুই বদলে ফেলতে পারে। তবে বিপদ হয় যখন অ্যান্টিজেনধর্মিতায় বদল আসে। তখন শরীরের পূর্বেকার সব চেনাজানাই চৌপাট, মনে হয় ইনি নতুন অতিথি বটেন, শরীরের স্বাভাবিক অথবা টিকাসঞ্জাত প্রণোদিত প্রতিরোধক্ষমতা তাকে চিনে ঊঠতে পারে না। ২০২১-এর গোড়া থেকে টিকা কর্মসূচির ব্যাপকতা কোভিডের আলফা বিটা গামা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে কিছু প্রতিরোধ যে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে তা তো সংক্রমণহার এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ক্রমহ্রাসমান লেখচিত্রেই প্রতীয়মান। তবে ভারতবর্ষে গত বছরের মার্চ-এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ঢেউয়ের যে ভয়াবহতায় রাম তেরি গঙ্গা মইলি হয়েছিল তা মূলত ডেল্টা সংক্রমণের কারণে। যেহেতু টিকার প্রতিরোধক্ষমতা পূর্বেকার ভ্যারিয়ান্টগুলোর তুলনায় ডেল্টার ক্ষেত্রে কম। ওমিক্রন, শোনা যাচ্ছে টিকাসঞ্জাত প্রতিরোধক্ষমতাকে অকেজো করে ছেড়েছে। সংখ্যাবৃদ্ধি— এই একটিই উদ্দেশ্য সংক্রমণের, এবং জিন-চরিত্রে বদল আনার উদ্দেশ্যও একটিই— আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে। যে ছানাপোনারা সংক্রমণের পর তৈরি হবে এবং যে বিপুল সংখ্যায় তৈরি হবে তাদের জন্য নতুন পোষকদেহ, নতুন কোষের সরবরাহ সুনিশ্চিত করা। অসংক্রামিত কোষ যখন নতুন সংক্রমণের মোকাবিলা করবে তখন তার অবস্থা যেন ঝানু ফাস্ট বোলারের সামনে ক্রিজে আসা টেল-এন্ডারের মতই হয় তা সুনিশ্চিত করতেই এই বদল। সুতরাং বিস্মিত হওয়ার মত কিছু নেই, বরং বলা যায়, এটাই হওয়ার ছিল।
মনে হতে পারে, জিনোম বা আমরা যাকে বলছি জিন-চরিত্রে বদল আনা যে কোনও সময়েই ভাইরাসের কেরামতি এবং তার সুবিধেমত যখন খুশি, তখন এই বদল আনা কি তার বাম হাতের খেল? কথাটা ঠিক নয় পুরোপুরি। জিনবিন্যাসে বদল সবচাইতে স্বাভাবিকভাবে আসে যে পদ্ধতিতে তাকে বলে মিউটেশন। ভাইরাসের ক্ষেত্রে বিশেষত ইনফ্লুয়েঞ্জা বা করোনাভাইরাসের মত আরএনএ ভাইরাসের ক্ষেত্রে মিউটেশনের হার আর পাঁচরকম ভাইরাসের তুলনায় বহগুণ বেশি। এছাড়া দুটো ভিন্ন ভিন্ন ভ্যারাইটি নিজেদের মধ্যে জিন আদানপ্রদান করে তৃতীয় কোনও ভ্যারিয়ান্টের জন্ম দিতে পারে— রিকম্বিনেশন যার নাম। এই সব কয়টি সম্ভাবনা প্রথম থেকেই খোলা ছিল, ওমিক্রন এসে যাওয়ার পরেও খোলা আছে। সব সময় এই মিউটেশন আরও অচেনা ভ্যারিয়ান্টের সূচনা করবে তা নয়। মিউটেশন ভাইরাসকেই ঝাড়েবংশে নির্মূল করে দিতে পারে। যেমন হয়েছিল ইতিপূর্বে ২০০২-এর সার্স বা ২০১৩-র মার্স করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে। তাদের মারণক্ষমতা অনেক বেশি ছিল, কিন্তু দ্রুত মিউটেশন হয়ে অকেজো হয়ে যাওয়ার ফলে সেসব রোগের টিকার দরকারই হয়নি। আমাদের দুর্ভাগ্য, কোভিড ১৯-এর বেলায় তেমন কোনও লক্ষণ নেই, সে যেতে আসেনি, থাকতে এসেছে বলেই মনে হয়, যেমন থেকে গেল ইনফ্লুয়েঞ্জা।
একশো বছর আগে যে স্প্যানিশ ফ্লু পাঁচ কোটি লোক মেরে দিয়েছিল ১৯১৮ থেকে ২০-র মধ্যে তার চার-চারটে ঢেউ এসেছিল। প্রথম ঢেউয়ের এপিসেন্টার ছিল ইউরোপ। তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সেন্সরশিপ চলছে। অসুখের আতঙ্কে দেশপ্রেম মার খেলে সেনা পাওয়া যাবে না, ফলে সব দেশই খবর চাপছিল। স্পেন ছিল নিউট্রাল, প্রেস সেন্সরশিপ তারা আরোপ করেনি বলে খবরের সূত্র ছিল ওই স্পেন। তার থেকে নাম স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮-র প্রথমার্ধে আক্রান্তের হার কম ছিল না, কিন্তু মৃত্যুহার সাধারণ ফ্লু-র আশেপাশেই ছিল। ১৯১৫-তে আমেরিকায় ফ্লুতে মারা গিয়েছিল ৬৩০০০ আর ১৮-র প্রথম ঢেউয়ে ৭৫০০০, সুতরাং এতটা বিপন্ন বোধ করার কারণ ছিল না। বলা ভালো, সেটা যে ভাইরাস থেকে হচ্ছে এটা বোঝা গেছে ত্রিশ বছর পরে, তখন ফ্লু নয়, দায়ী করা হচ্ছিল ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়াকে। যাই হোক, সেকেন্ড ওয়েভ এল আগস্টে। আমেরিকান সৈন্যরা ফিরতে শুরু করেছে সারা বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে। দ্বিতীয় ঢেউ প্রথমে মারতে শুরু করল সৈন্যদের, তাগড়াই, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী অল্পবয়সি ছেলেদের, এবং তারপরে সারা উত্তর আমেরিকায় এবং বছরের শেষে পুরো ল্যাটিন আমেরিকাতেও। এত লোক মরেছিল আমেরিকায় যে সে দেশে লাইফ এক্সপেক্টেন্সি ৫৯ থেকে নেমে এসেছিল ৩৯-এ। এখানেই শেষ নয়, ১৯১৯-এর জানুয়ারিতে এসেছিল তৃতীয় ঢেউ যখন জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল তখন। আর এর পরেও একটা ছোট চতুর্থ ঢেউ ১৯২০ সালে আমেরিকায়। স্প্যানিশ ফ্লু অ্যান্টিবায়োটিক-পূর্ব যুগের কথা। গণ-ভ্যাক্সিনেশন তখনও হাইপোথেসিস স্তরে। আজকের দুনিয়ার সঙ্গে তার কোনও তুলনা হয় নাকি? রোগের কারণ যদি ভাইরাস না হয়ে অন্য কিছু হত তা হলে বলা যেত— না, সত্যিই হয় না। কিন্তু ভাইরাস এক অতি ভয়ঙ্কর প্রায় অপার্থিব বস্তু। উপরন্তু, স্প্যানিশ ফ্লু-এর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আর আজকের করোনাভাইরাস জেনেটিক ও চরিত্রগতভাবে প্রায় সমধর্মী। সুতরাং ধরে নেওয়া যায় আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে পড়েছি।
ওমিক্রনের প্রথম হদিশ বোতসোয়ানা ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মাত্রই নভেম্বর মাসের শেষাশেষি। ইতিমধ্যেই সে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে বিশেষত ইউরোপ ও আমেরিকায়। সে দেশগুলোতে টিকাকরণের হার সর্বোচ্চ হওয়া সত্ত্বেও এই তৃতীয় তরঙ্গ তারা আটকাতে পারল না তার কারণ সে ভ্যাকসিনসঞ্জাত ইমিউনিটিকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। কেন এবং কীভাবে তা পারছে ওমিক্রন তা এখনও পর্যন্ত পুরো বুঝে ওঠা গেছে বলা যায় না। তবে টিকা আর জীবাণুর সম্পর্কটা জানা থাকলে তা অনুমান তো করাই যায়। টিকা আসলে ভোঁতা করে দেওয়া ভাইরাস বা ভাইরাস প্রোটিন যার যুদ্ধাস্ত্রটি অবিকল সংক্রামক ভাইরাসের মতই কিন্তু সেটা রোগ সৃষ্টিতে অক্ষম। আমদের শরীরে এই টিকা প্রয়োগের পর শরীর এই যুদ্ধাস্ত্রটিকে চিনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটা ঢাল তৈরি করে। যুদ্ধাস্ত্রকে বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্টিজেন এবং ঢালকে অ্যান্টিবডি বলা হয়ে থাকে। এদের সম্পর্ক তালা আর চাবির মত। সুনির্দিষ্ট চাবিতেই সুনির্দিষ্ট তালা খুলবে। অ্যান্টিবডি যদি চাবি হয় তাহলে যতবার সে পরিচিত অ্যান্টিজেনটির মুখোমুখি হবে অন্তত নীতিগতভাবে ততবারই ভাইরাসের তালা খুলে তার গোপন কেরামতি প্রশমিত করে দিতে পারবে। সার্স-কোভ ২-এর তালা রয়েছে তার ওই কাঁটাসদৃশ স্পাইক অংশে, আরও ভালো করে বললে স্পাইক প্রোটিনে। যে টিকা এখন অবধি বাজারে এসেছে এবং মানুষকে একটা ছদ্ম নিরাপত্তার আত্মবিশ্বাস দিয়ে এসেছে, তাদের সক্রিয়তার স্থায়িত্বকাল নিয়ে বিতর্ক আছে, কিন্তু এপিডেমোলজি বা মারিবিজ্ঞান যে সমস্ত পরিসংখ্যানের উপর দাঁড়িয়ে আছে সেগুলি টিকার ঢাল হিসেবে কাজ করার সপক্ষে বেশ একটা পোক্ত যুক্তিজাল তৈরি করে দিয়েছিল। ওমিক্রন এসে সেই আত্মবিশ্বাসে বেশ খানিকটা ঠোনা মেরেছে, কেন না এতাবৎকালে যে সব টিকা ব্যবহৃত হয়েছে তারা তালা হিসেবে চেনে আলফা, বিটা, গামা এবং কিছুটা কমজোরি হলেও ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টকেও। ওমিক্রন দেখা যাচ্ছে সুইস ব্যাঙ্কের তালা, চালু চাবিতে তা খোলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রাথমিক গবেষণা দেখিয়েছে, ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিন টিকাসঞ্জাত অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা অন্ততপক্ষে চল্লিশগুণ সফলভাবে পাশ কাটাতে পারে। একই কথা যারা ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন তাদের বেলাতেও প্রযোজ্য। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে আক্রান্ত দেহে সংক্রমণের পরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায় এবং জীবাণুর সঙ্গে পরবর্তীকালের মোকাবিলায় কিছু প্রতিরোধের দেওয়াল তোলবার এই ধর্ম আমাদের প্রকৃতিপ্রদত্ত জিয়নকাঠি। দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রন একবার দুবার সংক্রামিত দেহের অ্যান্টিবডিকে পাত্তাই দিচ্ছে না। সুতরাং, একদিকে টিকাজনিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বোকা বানানো, অপরদিকে করোনায় ভুগে ওঠা দেহের তথাকথিত প্রোটেকশনকে নকড়া-ছকড়া করে দেওয়া— এই নিয়ে নভেল করোনার নভেলতম ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রন। চিকিৎসকেরা বলছেন এর সংক্রমণের ক্ষমতা ডেল্টার চেয়েও বহুগুণ বেশি বটে তবে ডেল্টার মত মারক তা নয়। এ নাকি মাইল্ড সংক্রমণ। হবে হয়তো, টিকা কোম্পানির ভাঁড়ার উপচে পড়ানো গবেষণা এও বলছে বুস্টার ডোজে নাকি চালু টিকাও ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দেবে। সব মিলিয়ে, আমার মনে হচ্ছে, করোনাভাইরাস এই নশ্বর মানবশরীরে প্রথমবার ল্যান্ড করার পর থেকে আজ অবধি, দুনিয়ার কোথাও কোনও গবেষণাগার যেমন এর উৎস নিয়ে বাজি রেখে কিছু বলতে পারেনি, তেমনই ট্র্যাজেক্টরি বা গতিপথ নিয়েও হাতড়ে যাচ্ছে পরিষ্কার। স্প্যানিশ ফ্লু-এর সঙ্গে তুলনা করলে এটা তৃতীয় ঢেউ নিঃসন্দেহে, অন্তত ইউরোপে তা প্রবলভাবে আছড়ে পড়েছে। এবং তা পেড়ে ফেলছে টিকা নেওয়া, করোনায় ভুগে ওঠা মানুষদেরই কাতারে কাতারে। অনুমান করা যায় আমরাও তার মুখোমুখি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছি। হয়ত কিছুটা আশায় বুকও বেঁধেছি, কেন না ঠেকে ঠেকে শোনা যাচ্ছে এই বাণী— ওমিক্রন এসে গেছে, এইবার করোনার অবসান হবে।
সূত্র:
- https://www.nature.com/articles/d41586-021-03672-3
- https://www.nature.com/articles/d41586-021-00031-0