নব্বই সিরিজের কবিতা
অন্য গল্প
ছেলেটা সরল
তার কোনও পোশাক ছিল না,
বাড়িতে লোক এলে
সে পেছনের দরজা দিয়ে
পালিয়ে যেত অরণ্যে—
তার লম্বা লম্বা দড়িলাফ,
তার টানা টানা দেবীচক্ষু,
তার ফসফরাস নগ্নতা—
সব কেড়ে নিল
এক সরলতর বালিকা…
ওর বুদবুদের মতো শরীরেও
কোনও পোশাক থাকবে না?
ছেলেটা লজ্জায় মরে গেল,
তারপরে সে এক অন্য গল্প!
লঙ্ঘন
কখনও মনে হয়
এভাবে বললে
ওকে লঙ্ঘন করা হয়,
টেবিলটা কাছেই রয়েছে,
হেমন্তের সব অপরাধ ছুঁয়ে,
ওর কান ঢেকে বরফ,
আমার মোমে এত উত্তাপ নেই, যে কাঁদাব…
মেহেন্দির মতো থোড়ের রস
হাতের পাতায়,
আঙুল এগিয়ে পিছিয়ে
ছুঁতে চায়
রাজনৈতিক ভাবে সঠিক একটি স্রোতকে,
কখনও কখনও মনে হয়
এভাবে চললে
ওকে লঙ্ঘন করা হয়।
মুহূর্ত
সেই পুরুষটি
যার মাথার পেছনে জ্যোতির্বলয়,
তাঁর খড়ের শরীর ভেসে যাচ্ছে গঙ্গায়,
আমরা তখন দেখছিলাম
লাল মেঘের নিচ দিয়ে
একটা প্লেন
উড়তে উড়তে
তালগাছের পেছনে হারিয়ে গেল,
আমরা তিনটি বালিকা, প্রায়-বালিকা
ডুবন্ত পৈঠেয় বিকেলে বসে
বিনুনি খুলে
আবার বাঁধছিলাম!
রেতাং
অনেকক্ষণ ট্রেনটা থেমে আছে,
রেতাং,
প্লাটফর্ম নেই,
তবু স্টেশনটা উড়তে উড়তে
আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টা করে,
এদিকে বদলির আশা ছেড়ে
স্টেশন মাস্টার
আজকাল লম্বা লম্বা কবিতা লেখে,
আর মাস্টারের বৌটা
রান্নার জল আনতে
চলে যায় সোজা সমুদ্দুর!
খিদে
পাশের ঘর থেকে গরম ভাতের গন্ধে
খিদেটা চাগিয়ে ওঠে,
আসলে আমার রক্তের মধ্যে এখন প্রচুর ফসফরাস,
চুলে জড়ানো ঝিনুক প্রবালের মালা…
বাস এখন চওড়া রাস্তা দিয়ে ছুটছে,
দুপাশ থেকে উঠে আসছে জাগুয়ার আর ব্রহ্মকমল,
হলুদ সাপের মতো
সরু একটা নদীর
চুল এলোমেলো করে দিচ্ছে
সাহসী সারস…
পাশের ঘর থেকে
গরম ভাতের গন্ধে
খিদেটা চাগিয়ে ওঠে,
আসলে আমার রক্তের মধ্যে এখন প্রচুর ফসফরাস,
তিনতলার বারান্দা থেকে
দোল খেয়ে দোতলার ছাদে নেমে
চুলে ঝিনুক প্রবালের মালা জড়িয়ে,
দুহাতে সমুদ্রের অন্ধ ফেনা নিয়ে
আমি ঠিক পৌঁছে যাব পাশের ঘরে।