পাঁচটি কবিতা
গান
হেঁটে আসছি নিজের মত। এদিকে খাদের কিনার।
ঠোঁটে শিস। গুম্ফায় ঘণ্টা বাজলে বাচ্চা লামা
কীভাবে সাইকেলে উঠে বসে। নদীর পারে পারে
সে কি নূতন মন্ত্রের শরীরে নূতন কোনও গানের জন্ম
দেয় যা পরজন্মের রাস্তায় ঢুকে পড়তে থাকা
তীব্র জিপগাড়ি!
জীবন আদ্যন্ত এক ডানামেলা পাখি।
আর তোমার লাজুক মুখে দ্যাখো মরা বিকেলের আলো
জীবন
জনমভরের কত কথা থাকে মানুষের। কোথাও
হাঁটুজলের নদী পেরোতে গিয়ে মানুষের চোখের
সাদায় এক ব্যথা জেগে থাকে। জাগরণ থেকে ঘুমে ফিরতে গিয়ে কথার খেপলা জাল অন্যমনস্কতার
ভেতর ঢুকে পড়ে। অথচ দীর্ঘ কোনও সেতু পেরোতে
আজকাল তো খুব বেশি সময় লাগে না! গ্রামদেশের
কাকতাড়ুয়া পাহারা দেয় বেগুনক্ষেত। নূতন জলের
প্রবাহে সতেজ শিং মাগুরের ঝাঁক আবহমানের
দৃশ্যের কিনারেই বুঝি মানুষকে টেনে নিয়ে আসে। জনমভরের কথায় কথায় কি তীব্র হয়ে ওঠে মানুষের
জীবন!
ডাইরি
শুকিয়ে যাওয়া গাছে তো আর ফুল ফোটে না
হাওয়ায় উড়তে থাকে তোমার চুল।
দিগন্তটুকু বিস্তারিত হলে দেখি মেঘের
গম্বুজ
তাঁবুতে লণ্ঠন জ্বলে।
ওঁৎ পেতে বসে থাকা বেড়ালের চোখ।
আমরা কেউ সুরক্ষিত নই।
পাটি বিক্রি হয় যে গ্রামে সেখানে পানীয় জলের
সমস্যা
প্রেম খসে পড়তে থাকা এই জীবন।
ঢেঁকিশাকের ঝোপের দিকে তাকিয়ে থাকি।
আমার অবসর নেই
আমার অবসাদ নেই
লাইন হারিয়ে গেলেও ডিটিপি করতে শুরু করি
ডাইরি
তান্ত্রিকের বাসায় ঘুণপোকা বেড়াতে এলে
অনূদিত নাটকের পাশে ছুটে আসে চকিত
হরিণ
ফ্রেম
ছুড়ে মারছি আধখাওয়া আপেল।
হুইসেল না বাজিয়ে চলে যাওয়া লোকাল
ট্রেন
অবরোধ সরিয়ে আমাদের সাঁকো পেরোতে
হয়
বিষণ্ণতম বাদ্যযন্ত্র বাজাতে আবার শহরে ফিরে
এলে
কত কিছু এসে যায় ফ্রেমে।
চৌকাঠ, পায়রা, হার্ট ক্লিনিক।
সূর্যাস্তের আলোয় ঘরে ফেরে
হাঁসেরা
বর্ষা
সার্চলাইটের আলো থেকে দূরে ভাঙা রেডিও নিয়ে
বসে আছি।
ভরা দুপুরবেলা, বর্ষা ঢুকছে
বর্ষা প্রকৃতই এক ফণাতোলা সাপ
বৃষ্টি পড়ে আমাদের প্রস্তুতিহীন যাপনে
যে রাস্তায় বাঘ উঠে এসেছিল
সেখানে বিকল হয়ে পড়া জিপগাড়ি
এখন অভিমানের গল্প আদুরে বেড়ালের মত পাশ
ফিরে শুয়ে থাকে।