ছটি কবিতা
(১)
হাড়ের ভেতর দুঃখ হচ্ছে?
চোখ খোলা রাখো। বসে বসে দেখবে না?
সমস্ত ভালোবাসা
কীভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়
দেখবে না?
পৃথিবীর চোখের ওপর থেকে
ওই সরে যাচ্ছে আণবিক চাদর
এই মহাদেশেও,
যারা ঘুমোতে পারছে বা পারছে না,
তাদের প্রতি আমাদের যেন কোনও হিংসা নেই
(২)
স্বপ্ন কীভাবে দরজা খুলছিল,
একথা লেখা ছিল গানের বইতে
আমাদের কোনওদিনও দেখা না হলে
কলকাতা কি একেবারে একই থেকে যাবে?
কেউ কি কখনও ঘরে আসে, ওইভাবে
‘স্বপনদুয়ার খুলে’
সমস্ত দরজা কীভাবে বন্ধ হয়
আর প্রথম ঔরস ভেসে যায় যমুনা থেকে গঙ্গায়
লেখা ছিল মহাভারতে
(৩)
একটা গোটা দেশ কেন খুন হয় অমিতাভ?
লক্ষ জন্ম
লক্ষ ভিটা
আমরা তো জানি
দ্যাশের বাড়িঘর সব কীভাবে হঠাৎ অন্যের হয়ে যায়
মাটির হাঁড়িতে ভাসে ইলিশের ঝোল আর
কাঁটাগুলো বেছে কেউ সাজিয়ে দেয় সীমান্তে
গীতা-সারাৎসার
সমস্ত মানুষ আগেই শেষ হয়ে আছে
(৪)
মাংস কেনা ছাড়া জীবন আছে? বলে যাও!
তুমি কি জানো না, কোথায় ছাপা হয় পয়সাকড়ি?
তবু দুশো ডলারের চেকে পা ঠেকলে
আধ-বাঁকা ভক্তির আঙুল উঠে আসে কপালে
কতশত দিনের ফল, জীবন ভাসানো খেলা
রাজাধিরাজ, এত গ্রীষ্মে কি আদর বাঁচে?
আমাদের পায়ে চুমু-খাওয়া দিনগুলো শেষ হচ্ছে হঠাৎ,
তবু দেখো, প্রণামের হাত উঠতে চায় না
(৫)
একটি মিষ্টি বুড়ি-বেড়ালনি হতে হবে
অদরকারে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাবে ছেলেমেয়েগুলি।
ছয় দশক, তোমাকেও আগলে রাখতে ইচ্ছে
অথচ তোমার বর্ম কত কঠিন হয়েছে ঝড়-জলে
এখন হঠাৎ কার প্রথম টিউশনির রোজগার শুনে আনন্দ ভর করে আসে
কোথায় জমা থাকে পৃথিবীর ঋণ?
সুইস ব্যাঙ্কগুলোর ঠিকানা তো আমরা কেউই জানি না
চারশো টাকা অসীম হয়ে ওঠে মাংস-ভাতে..
(৬)
আমরা এখন স্বর্গ তৈরি করার দিকে তাকাচ্ছি;
নিজস্ব ফ্ল্যাশব্যাকে
অবশ্যই
কিছুটা মুসুরির ডাল ফুটছিল, সরষের তেল
বড়জোর যেটুকু লাগে মরিচ, শাকভাজায়
আরও এক পলার বিলাসিতায় স্বর্গের ছবি কিছুতেই ভাসে না
তারপর যুবনাশ্বের আখ্যান লেখা হল
যন্ত্রণাহীন জন্মের কথা
আমি তুমি ও ব্রেকাপ সমৃদ্ধ ন্যাকা ন্যাকা বাংলা কবিতার পাল্টা স্বর, নিজস্বতা এবং আদ্যন্ত রিলেটেবেল।
কবিকে সেলাম।