রাত এলেই লোকটি চাঁদ দেখতে বের হয়। চাঁদ ও অন্ধকারের সঙ্গে তার এই সখ্যতা মলি ভালোভাবে নেয়নি। ভেবে নিয়েছিল অন্য কোনও মেয়ের সঙ্গে খালেদের সম্পর্ক আছে। অজয়দার মেয়ের সঙ্গে একটা সম্পর্কের কথা কেউ একজন বেনামে মোবাইলে জানিয়েছিল মলিকে। প্রথমে অতটা গুরুত্ব দেয়নি। পরে রাত গভীর হলে খালেদের বেরিয়ে যাওয়া আবার সেই আজান হলেই ফেরত আসা ক্রমশ বেড়ে যেতে লাগল।
ইদানীং প্রতি রাতে বের হতে শুরু করেছে খালেদ। মলির প্রেগনেন্ট না হওয়া মেনে নিতে পারছে না খালেদ। সঙ্গমে আপত্তি নেই মলির। কিন্তু কিছুতেই বাচ্চা নেবে না খালেদের। তাহলে কি স্বপ্নটা অন্য কারও জন্যে তুলে রাখছে মলি? যে জন্য সে প্রেগনেন্ট হতে চাইছে না।
ভূতের মতো গোয়ার্তুমি পেয়ে বসেছে খালেদের। আজ আবার মাঠের দিকে হাঁটতে শুরু করে। মাঠে খালেদ পৌঁছনোর আগেই রুপোর ডিবের মতো চাঁদটা হঠাৎ করে নেমে আসে যেন। সেদিকেই ঘোরগ্রস্ত খালেদ হাঁটতে হাঁটতে এগোয়– মনে হয় অজয়দার মেয়ে বীণার এ্যাবরশন করা বাচ্চাটাই মহাকালের চাঁদ হয়ে ঝুলে থাকে সন্ধ্যা থেকে রাত্তির পর্যন্ত। শেষ রাতে মাঠের মধ্যে নেমে ওর সঙ্গে জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকে।
তুহিন দাস আমি প্রতিদিন খুঁজে পেতাম চুলের কাঁটা এখানে আসার পরে। ঘর কুড়োতে গিয়ে খাটের নিচে, আমার আগে যে ইরাকী মেয়েটি থেকে গেছে এখানে তার অস্তিত্বের অংশ এখনও লেগে গেছে। আমি কিছুদিন হল প্রবাসে এসেছি। এসে, আমার পাড়ায় বিকেলবেলায় হাঁটতে বেরিয়ে অথবা পার্কে যখন পড়শিরা কুকুর নিয়ে খেলা করে…
তুহিন দাস লোকটি, আবুল খায়ের, খেলায় কোনওদিন মেডেল পায়নি। একদিন দোকান থেকে অনেকগুলো সাধারণ মেডেল কিনে এনে ড্রইংরুমের দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখে সবাইকে দেখাতে লাগল : এই যে আমার মেডেল...। তারপর সে খেলা ছেড়ে দিল। রাত্রিবেলা ঘুমের সময়ে ওই মেডেলগুলো ঝনঝন করে বেজে উঠত। খুব ভোরবেলা উঠে সে লিখত মেডেলগুলোর…
তুহিন দাস প্রশ্নটা সৌমিত্রই প্রথম তুলল। --তাহলে জীবনানন্দ কি বরিশাল থেকে স্থায়ীভাবে কলকাতা চলে যাওয়ার সময়ে, তার মাঝারি মাপের ট্রাঙ্কে করে তার সব খাতাপত্র নিয়ে যাননি? --হতে পারে। বরিশাল বিএম কলেজের বাংলার বিভাগের অধ্যাপক বি. চক্রবর্তী বললেন। --জীবনানন্দ তার চেয়ার-টেবিল-আসবাবপত্র-- এসব তো আর নিয়ে যেতে পারেননি। কিন্তু তার স্নেহভাজন…