আইটি রুলস, ২০২৩— ইন্টারনেটের আর্কাইভ থেকে ভিন্নমত মুছে দেওয়ার আইন

অভিজ্ঞান সরকার

 



তথ্যচিত্র নির্মাণকর্মী, আংশিক সময়ের অধ্যাপক

 

 

 

 

জনগণের কাছে মিথ্যার বেসাতি করে, সরকারি তথ্য চেপে দিয়ে, ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েও মোদিজিরা নিশ্চিন্ত নন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের গোলযোগ তাঁরা সইতে পারছেন না। মোদি সরকারের দেওয়া তথ্যই পরম সত্য, সেই তথ্যের বাইরে অন্য কিছু লেখা আইন করেই নেটমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার ব্যবস্থা হল আইটি রুলস, ২০২৩-এর মাধ্যমে

 

ভারত সরকারের মিনিস্ট্রি অফ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড আইটি (MEITY) একটি আইন পাস করেছে, ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যামেন্ডমেন্ট রুলস, ২০২৩, সংক্ষেপে আইটি রুলস, ২০২৩। এই আইটি রুলস, ২০২৩ মোতাবেক মোদিজি এবার কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ফ্যাক্ট-চেক ইউনিট খুলছেন। এ কি বিধির লীলাখেলা, কাকের গলায় তুলসিমালা? ক্ষমতায় আসা ইস্তক যে মোদিজি ও তার দলবল ফেক নিউজের বন্যা বইয়ে দিল, যে ফেক নিউজ ধরতে ধরতে প্রতীক সিনহা বৃদ্ধ হলেন, অল্টনিউজের ভাগ্য খুলে গেল, সেই মোদি সরকার এবার ফ্যাক্ট-চেক ইউনিট খুলছে? এখানে অবশ্য একটি বিষয় আছে, এই ফ্যাক্ট চেক ইউনিট কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়ে, মোদিজির বিকাশের বিষয়ে, তাদের ডাবল ইঞ্জিন সরকার বিষয়ে যেকোনও ‘ফেক, ফলস বা মিসলিডিং’ তথ্য চিহ্নিত করবে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্যাক্ট-চেক ইউনিট কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী/সম্পর্কিত যাবতীয় সংবাদ বিশ্লেষণ করবে, এক্ষেত্রে অপছন্দের খবরটিকে এবং ইন্টারনেট তথা সোস্যাল মিডিয়া থেকে থেকে উড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। এবং কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কিত ‘ফেক’ বা ‘মিসলিডিং’ খবরের ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যান্য ‘মিসলিডিং’/‘ফেক’ খবর বহাল তবিয়তে থেকে যেতে পারে।

এই আইনের বিষয়ে ইতিমধ্যেই এডিটরস গিল্ড তীব্র আপত্তি জানিয়েছে, ফেক নিউজের মূল্যায়নের সর্বোচ্চ দায়িত্ব কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে সমর্পন করার অর্থ হল সরকারের প্রতি পক্ষপাতপূর্ণ ফ্যাক্ট চেকিং-এর ব্যবস্থাকে পাকাপাকি করা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর, মুক্ত মতামতের উপর চূড়ান্ত আক্রমণ বলে এই আইনকে চিহ্নিত করেছেন তারা।

এডিটরস গিল্ডের এই কথা বলার যৌক্তিকতা আছে। মোদিদের বিরুদ্ধতা বা সমালোচনার ক্ষেত্রে, সরকারি নীতির ব্যর্থতার খতিয়ান প্রকাশের ক্ষেত্রে এখনও সুস্থ ও মান্য হাতিয়ার হচ্ছে রাশিবিজ্ঞান ও তথ্য। মোদি সরকারের আজগুবি কৃতিত্ব ও অর্জনগুলির বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদমাধ্যম, ব্লগ, নিউজপোর্টাল লড়াই চালিয়েছেন এই রাশি ও তথ্যকে হাতিয়ার করেই। ক্ষমতায় বসা ইস্তক মোদি সরকারি তথ্য প্রকাশ বন্ধ করার যাবতীয় অপচেষ্টা চালিয়েছিল। সেই ইতিহাস খানিক ঝালিয়ে নেওয়া জরুরি বলেই মনে হয়।

মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর, ২০১৪ থেকে ২০১৯ অব্দি দেশের দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বিষয়ক কোনও তথ্য প্রকাশ করতে দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল কমিশন তাদের রিপোর্টে লিখেছিল ডিমনিটাইজেশনের পর ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে  দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ, গত পয়ঁতাল্লিশ বছরে সর্বাধিক। এছাড়া ভারতের ভোক্তা ব্যয় (Consumer Expenditure) হ্রাস পেয়েছে, মানুষের হাতে ক্রয় করার বিশেষ পয়সা নেই সেসবও ছিল ওই রিপোর্টে। স্বাভাবিকভাবেই সেই রিপোর্ট চেপে দেওয়ার মতলবে ছিল মোদি সরকার। অবস্থা বুঝে ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল কমিশনের দুই অধিকর্তা, যারা সরকার নির্বাচিত নন, রিপোর্ট দেরিতে প্রকাশের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন। এদিকে ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল কমিশন থেকে রিপোর্টটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ফাঁস হয়ে যায়। ঝুলি থেকে বেকারত্বের বেড়াল বেরিয়ে যাওয়ায় বিকাশপুরুষের গোঁসা হয়েছিল। ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনের আগে বল্লভভাই প্যাটেলের অতিকায় মূর্তি নির্মাণ, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডর নির্মাণ ইত্যাদি বিকট সাফল্যের মধ্যে দেশে বেকার বেড়ে যাওয়ার তেতো খবর মোদিজির না-পসন্দ হবেই। এমনিতেই শাসক সমালোচনা পছন্দ করে না, নানাভাবে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে। আবার ফ্যাসিস্টরা চেষ্টা করে কোথাও কোনও বিরোধীই যাতে না রয়, সমাজে খালি থাকবে প্রিয়ভাষীরা। সেই জন্যই কত রকমের পরিকল্পনা, ফন্দি! আমাদের দেশে শ্রমশক্তি সম্পর্কিত তথ্য জোগাত ন্যাশেনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন (NSSO), তাদের পরিচালিত এমপ্লয়মেন্ট-আনএমপ্লয়মেন্ট সার্ভের (NSSO-EUS) মাধ্যমে। ২০১১-১২ সাল অব্দি পাওয়া NSSO-EUS-এর তথ্য প্রাইমারি সোর্স হিসাবে মান্য গবেষণার কাজে ব্যবহার হত। NSSO-EUS মাধ্যম অত্যন্ত ব্যাপক ও গভীরভাবে তথ্য সমাবেশিত করত। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন, প্ল্যানিং কমিশন থেকে শুরু করে মাওবাদীরা অন্দি তাদের লেখাপত্রে NSSO-র তথ্য ব্যবহার করত। মোদিজি নীতি আয়োগ-এর সঙ্গে পরামর্শ করে NSSO-EUS তুলে দিলেন। বদলে এলো পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (PLFs), যার ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে একাধিক সমালোচনা বিদ্যমান। বস্তুত PLFs-এর তথ্য মোদির সুবিধামত প্রচার চালানোর একটি যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি মিনিস্ট্রি অফ লেবার অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে কিছু ‘প্রাইভেট অর্গানাইজেশন’ দ্বারা প্রকাশ করা কর্মসংস্থান ও বেকারত্বের হারের তথ্য ‘অবৈজ্ঞানিক ও ত্রুটিপূর্ণ’, ‘বায়াসড’, এবং PLFs-এর মাধ্যমে পাওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০২২-এর ডিসেম্বরে কর্মসংস্থান কোভিডের পূর্বের কর্মসংস্থানকে ছাপিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ‘প্রাইভেট অর্গানাইজেশন’ বলতে মূলত ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’ (CMIE)-র কথা বলা হয়েছে, যাদের হিসাব অনুযায়ী কোভিডের পরবর্তী সময়ে ভারতের বেকারত্ব প্রায় ৮ শতাংশের কাছাকাছি। মনে রাখা দরকার আনন্দবাজার থেকে শুরু করে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মত বড় মিডিয়া হাউসগুলিও গত কয়েকবছর ধরে CMIE-র রিপোর্টকে মান্যতা দিয়ে বেকারত্বের এই হারকে স্বীকার করে নিয়েছে, কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও তথ্য নেই বেকারত্ব বিষয়ে— ইন্টারনেট খুঁজে দেখুন, পাবেন না।

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর CMIE-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন, ২০২১-এর ডিসেম্বরের রিপোর্টে হরিয়ানার বেকারত্ব ৩৯ শতাংশ দেখানোয়। CMIE-র রিপোর্টও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়, জঁ দ্রেঁজ ও সোমানচিরা লিখেছেন CMIE-র অনুসন্ধানপদ্ধতির ত্রুটির কথা। মজার ব্যাপার হল CMIE অনুসন্ধান ও সমীক্ষার ত্রুটি সংশোধন করলে ভারতের বেকারত্বের হার আরও বেশি হওয়ার কথা। CMIE ছাড়া আরেকটি প্রাইভেট অর্গানাইজেশনের কথা উল্লেখ করা যায়, অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া যারা ভারতের অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে বাৎসরিক রিপোর্ট ইত্যাদি বার করত। তাদের মোদিজি টাইট দিয়ে দিয়েছেন, সিবিআই নামক পেয়াদা পাঠানো হয়েছে অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার অফিসে। মোদ্দা বিষয় হল ভারতের কর্মসংস্থান, বেকারত্ব ও দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বিষয়ে কোনও তথ্য নেই, বলা ভাল সরকারি তথ্য নেই। দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকা লিখছে “India’s once-vaunted statistical infrastructure is crumbling”। তথ্যই যদি না থাকে তাহলে তো ধরে নেওয়া যায় ভারতের সকলের কর্মসংস্থান হয়ে গেছে, সবাই বড়লোক, রামরাজ্য প্রতিষ্ঠিত।

মোদিজির আমলে বেকার নাই, গরিব নাই এইসব প্রমাণ করার পাশাপাশি জিডিপি বৃদ্ধি যে সর্বাধিক তা প্রতিষ্ঠা করতে জিডিপির নির্ধারণের পদ্ধতিটিই বদলে ফেলেছে। মোদিজির প্রাক্তন অর্থনৈতিক প্রধান উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রমানিয়ম হার্ভার্ডের জার্নালে পেপার লিখে জানালেন ২০১১-১২ থেকে ২০১৬-১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার শতকরা ২.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৭ শতাংশ দেখানো হচ্ছে। জালিয়াতি ও চালিয়াতির আশ্চর্য উদাহরণ আমাদের মোদিজি।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (NCRB) ২০১৬ সালের রিপোর্ট ২০১৯-এ প্রকাশ করেছিল। মোদিজির আমলের আগে এই রিপোর্ট প্রতিবছর প্রকাশিত হত। ওই সময়ে ঘটে যাওয়া অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি যে ঘৃণ্য রাজনৈতিক সংখ্যাগুরুবাদী অপরাধ অর্থাৎ ‘লিঞ্চিং’ ও ‘হেট ক্রাইম’, গোরক্ষকদের দ্বারা মুসলিম হত্যা, সেসব বাদ পড়ে যায় NCRB-র রিপোর্ট থেকে। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সেই সময় বাণী ঝেড়েছিল ‘লিঞ্চিং’ শব্দটি পশ্চিমি দেশগুলির নির্মাণ, ভারতকে কলঙ্কিত করবার জন্য— NCRB কী করে আর এই পবিত্র হত্যাকাণ্ডগুলিকে অপরাধের গোত্রভুক্ত করে? সেই বছর থেকে NCRB প্রকাশিত কৃষক আত্মহত্যার রিপোর্টে আত্মহত্যার কারণের জায়গাগুলি আর পূরণ করা হয় না, কৃষকরা পারিবারিক অশান্তি ও পরকীয়ার কারণেই খালি আত্মহত্যা করেন, মহাজনি ঋণ বা ফসলের দাম না পাওয়ার কারণে নয়।

কোভিডের দ্বিতীয় পর্যায়ে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ জুড়ে মৃত্যুমিছিল, সরকারি অব্যবস্থা ও ভয়াবহ পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে নদীর চরে লাশ পুঁতে রাখার বেনজির দৃশ্য আমাদের মনে আছে। ওইসময় কোভিডে মৃত্যুর খবর গোপন রাখতে সরকার হেন ঘৃণ্য কাজ ছিল না যা করেনি।

মোদিজির আমলে তথ্য গোপন ও বিকৃতির উদাহরণ দিয়ে পাতার পর পাতা ভরিয়ে দেওয়া যায়। আমরা জানি এই মোদিজি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের রাজনৈতিক পদ্ধতি হচ্ছে গোয়েবেলসীয়, অহরহ মিথ্যা বলে যাওয়া, ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়ে যাওয়া, এবং ক্রমাগত মিথ্যার নির্মাণ করে করে যাওয়া। আমার নিজের ধারণা মোদিজি হানা অরেন্ট খুব পড়েন। হানা অরেন্ট তার ট্রুথ অ্যান্ড পলিটিক্স বইতে লিখেছিলেন:

Truthfulness has never been counted among the political virtues, and lies have always been regarded as justifiable tools in political dealings… Lies are often much more plausible, more appealing to reason, than reality, since the liar has the great advantage of knowing beforehand what the audience wishes or expects to hear. He has prepared his story for public consumption with a careful eye to making it credible, whereas reality has the disconcerting habit of confronting us with the unexpected, for which we were not prepared.

মোদিজি ও তার দলবল হানা অরেন্টের ব্যাখ্যা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। ‘হাম জো চাহে উয়ো সন্দেশ জনতা তক পৌঁছা সাকতে হ্যাঁয়, চাহে খাট্টা হো ইয়া মিঠা হো, সাচ হো ইয়া ঝুট হো’— বিজেপির সোশাল মিডিয়া ভলিন্টিয়ারদের মিটিং-এ অমিত শাহ বলেছেন— “ইয়ে কাম কর সকতে হ্যাঁয়, মগর উয়ো ইস লিয়ে হো পায়া, হাম ৩২ লাখ হোয়াটস অ্যাপ কা এক গ্রুপ বানা কে খাড়ে হ্যাঁয়”— যেই গ্রুপে নিয়ম করে, প্রতিদিন সকাল ৮ টায় গ্রুপের অ্যাডমিনরা পোস্ট করেন, বিদ্বেষ ও মিথ্যার চাষ শুরু হয় নিপুন দক্ষতায়।

জনগণের কাছে মিথ্যার বেসাতি করে, সরকারি তথ্য চেপে দিয়ে, ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েও মোদিজিরা নিশ্চিন্ত নন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের গোলযোগ তাঁরা সইতে পারছেন না। মোদি সরকারের দেওয়া তথ্যই পরম সত্য, সেই তথ্যের বাইরে অন্য কিছু লেখা আইন করেই নেটমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার ব্যবস্থা হল আইটি রুলস, ২০২৩-এর মাধ্যমে। মোদি আমলের ইতিহাস, অর্থনীতি, সমাজনীতি লেখা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের পছন্দসইভাবে, ভিন্নমত মুছে যাবে ইন্টারনেটের আর্কাইভ থেকে, বশংবদ ফ্যাক্টচেকাররা খাঁড়া হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে এখন। অনেকেই এই পরিস্থিতিকে অরওয়েলীয় বাস্তবতার সঙ্গে তুলনা করছেন। আমার ধারণা অরওয়েল মোদির আমলে ভারতে এলে ভেবলে যেতেন। তাঁর ভাবনায় পুঁজিবাদী সমাজ ও তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক সমাজের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার চিত্র ছিল। কিন্তু অরওয়েল মোদিজিকে দেখেননি, যজ্ঞি বাসুদেবকে দেখেননি, রাজীব মালহোত্রাকে দেখেননি, নবারুণবর্ণিত নুনু কামানের মতো অস্ত্র নিয়ে বিরাট বীর হিন্দু যোদ্ধাদের মসজিদ আক্রমণের ভিডিও দেখেননি। খুবই বেদনার সঙ্গে ফ্যাক্ট চেক বিষয়ে এক কমেডি শো-এর উল্লেখ করে এই তুচ্ছ লেখা শেষ করি— অল্ট নিউজের ফ্যাক্ট চেকারদের করুণ অবস্থা নিয়ে বরুণ গ্রোভার এক শোয়ে মজা করেছেন যে বেচারারা রাত জেগে প্রমাণ করার চেষ্টা করে মোদিজির ছবির পিছনে ওই জিনিসটা ডাইনোসর নয়! আইটি রুলস, ২০২৩-এর পরে রামসেতু নির্মাণে ওই ডাইনোসর যে অংশগ্রহণ করেছিল তা মেনে নিতে হতেও পারে।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4880 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...