সৌমিত দেব
কলকাতা শহরে প্রথম প্রাইড ওয়াক হয়েছিল পঁচিশ বছর আগে। এতদিনের একটা ঘটনাকে যখন ‘হঠাৎ’ মনে হয় তখন জোর করেই দেখাতে হয়। একটা সমকামী বা একটা ট্রান্সজেন্ডার মানুষকে ছোট থেকে কী কী সহ্য করতে হয়, কীসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সেটা অন্য কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব না। সহ্য করতে করতে একটা সময় গলা তুলতেই হয়, লাউড হতেই হয়
জজসাহেব: হ্যাঁ, চলো চলো, শুরু করো, দেরি কোরো না, আমার আজকে ওদিকে আবার… এই এসব কী? আদালতে এসব রেনবো প্রিন্টেড ছাপাশাড়ি উড়ছে কেন? আজ কি ওয়ার্ল্ড রংধনু ডে নাকি?
জজটেনিয়া: না না স্যার এটা ওই… ওই নোংরাগুলোর ফ্ল্যাগ!
জজ: নোংরা? ওহ… আজ কি ওই মেথর ইউনিয়নের কেসটা…
ব্লগার: ব্যস! টুইট করে দিয়েছি, ইগনোরেন্ট জাজ প্রাইডের ফ্ল্যাগ চেনে না। যান আপনি ক্যানসেল হয়ে গেলেন।
অ্যাকটিভিস্ট: স্বাভাবিক, নোংরা বলতেই মেথরদের কথা যদি না মনে পড়ল তবে আর সমাজের বিচারক হবেন কী করে!
জজ: তাই না! ঠিক! আমার তো বাড়িতে আবার দুটো দরজা, একটা দিয়ে ওরা ঢোকে, আর আরেকটা দিয়ে বেরোয় যাতে করে কোনও… কিন্তু এই ক্যানসেলটা কী ভাই?
বিবেক: এই রাইটারদা, শোনো না, তুমি না রাখো! শালা যে কোনও টপিকের লেখাতেই তোমার এই সব সোশাল ইস্যু গুঁজে দেওয়াটা মানে…
আমি: কই? আমি কুস্তিগিরদের যৌনহেনস্থা বা তাদের ওই অবরোধ নিয়ে কিছু বললাম কি?… আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে ঠিক আছে… আর করব না সরি! রিস্টার্ট করছি!
বিবেক: গুড! টেক টু। অ্যাকশন!
জজসাহেব: হ্যাঁ, চলো চলো, শুরু করো, দেরি কোরো না, আমার আজকে ওদিকে আবার… এই এসব কী? আদালতে এসব রেনবো প্রিন্টেড ছাপাশাড়ি উড়ছে কেন? আজ কী ওয়ার্ল্ড রংধনু ডে নাকি?
জজটেনিয়া: না না স্যার এটা ওই… ওই নোংরাগুলোর ফ্ল্যাগ!
জজ: নোংরা?
টেনিয়া: আরে স্যার, একটু বাঁদিকটায় চোখ বুলিয়ে দেখুন না!
জজ: ও মা… বাহ, আমারও ছোটবেলায় খেলতাম জানেন, গো অ্যাজ ইউ লাইক… আমি একবার অন্ধকানুন সেজে সে কী প্রশংসা! কিন্তু ওরা গাদাগাদি করে বাঁদিকেই বসেছে কেন? দুদিক মিলিয়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে…
টেনিয়া: না স্যার আমাদের দিকে আমরা এসব নোংরামো অ্যালাও করি না!
উকিল: মহামান্য আদালাত! আজকের এই বিচারসভা এক ঐতিহাসিক বিচারসভা। মানুষের বিচারসভা। আজকের এই বিচারসভায় আমরা জড়ো হয়েছি এক ভীষণ স্বাভাবিক ঘটনাকে…
উকিল ২: অবজেকশন মাইলর্ড! আমার লার্নেট ফ্রেন্ড যেটাকে স্বাভাবিক বলছেন সেটা স্বাভাবিক হলে মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদের হেঁটে বাড়ি ফেরার মতো…
বিবেক: আবার! আবার!
আমি: আর করব না। মাইরি বলছি আর করব না! টেক থ্রি! অ্যাকশন!
উকিল: মহামান্য আদালাত! আজকের এই বিচারসভা এক ঐতিহাসিক বিচারসভা। মানুষের বিচারসভা। আজকের এই বিচারসভায় আমরা জড়ো হয়েছি এক ভীষণ স্বাভাবিক ঘটনাকে…
উকিল ২: অবজেকশন মাইলর্ড! আমার লার্নেট ফ্রেন্ড যেটাকে স্বাভাবিক বলছেন সেটা স্বাভাবিক তো নয়ই বরং প্রকৃতিবিরুদ্ধ!
সাধারণ মানুষ ১: ঠিক ঠিক! ওই বালের মগাগুলোর গাঁড় ভেঙে…
জজ: এ কী! আদালতে এসব কী ভাষা!
টেনিয়া: ও আমার ভাই স্যার, রাগের মাথায় বলে ফেলেছে!
উকিল: একজ্যাক্টলি মাই লর্ড! এইটাই, সমাজের একটা, অবশ্য একটা বলছি কেন, বরং বলা ভাল সমাজের একটা বিরাট অংশের মানুষের LGBTQ’দের প্রতি বর্তমান ধারণা এখনও এটাইই। সে যতই ব্রোকব্যাক মাউন্টেন, মাই ব্রাদার নিখিল দেখে কেঁদে ভাসাক না কেন!
জজ: খুব ভাল কথা! কিন্তু আমার দুটো প্রশ্ন আছে উকিলভাই, প্রথমত এই বিচারে চাইছেনটা কী? আর দ্বিতীয়ত LGBTQ মানে কী?
উকিল: লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুইয়ার… মানে…
সাধারণ মানুষ ২: মানে ছক্কা! ওই ‘এক লড়কি কো দেখা’ গানটার মতো! এক লড়কি কো দেখা তো অ্যাইসা লাগা বলে অত পাঁচালি না পড়ে ‘হেব্বি’ বলে দিলেই মিটে যেত, তেমন!
জজ: আমার কান মাথা ঝাঁ ঝাঁ করছে!
উকিল: তাহলেই ভাবুন যাদের এটা রোজ রোজ ফেস করতে হচ্ছে তাদের কী অবস্থা হবে?
জজ: আমার আরও দুটো প্রশ্ন আছে। এক, আগের প্রশ্নটাই আবারও করছি, বিচারে কী চাইছেন আর দুই, আপনার দিকে লোকগুলো কথা বলছে না কেন?
সাধারণ মানুষ ৩: কারণ সভ্যতার অনেকগুলো শর্তের মধ্যে একটা হচ্ছে সামনের পক্ষকেও বলতে দেওয়া। যেটা ওদিককার মানুষগুলো জানেন না!
উকিল: আর বিচারে আমরা চাই পার্মিশন, একটা নির্দিষ্ট এলাকায় মিছিল করার।
জজ: কীসের মিছিল?
সাধারণ মানুষ ৩: এটা প্রাইড মান্থ। প্রাইডের মিছিল।
সাধারণ মানুষ ৪: মগাগুলো ওদের মাগিগুলো মিলে ব্রা-প্যান্টি, জোকার সেজে পোঁদ দুলিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটবে!
সাধারণ মানুষ ১: এসব নোংরামো আমাদের ভদ্রলোকের পাড়ায় হবে না!
উকিল ২: আশা করি বুঝতে পারছেন সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কারণটা ঠিক কী? একটা সভ্যভদ্রলোকের সমাজে এই অসভ্যতা, এই ধরনের নোংরামো…
উকিল: কীসের অসভ্যতা? কীসের নোংরামো?
উকিল ২: ওই তো… ওই তো… বলল তো…
উকিল: আপনি বলুন না কী বলল… বলুন… কী হল, আমতা আমতা করছেন কেন? বলুন!
জজ: হ্যাঁ উকিলভাই, বলুন বলুন…
উকিল ২: ও বলল তো স্যার!
জজ: ও তো উকিল নয় উকিলভাই!
সাধারণ মানুষ ৫: এদিকে আমাদের ছক্কা বলে ডাকে বান্টুগুলো! আম জাম সব টাকে উঠে গেল তো!
সাধারণ মানুষ ৬: আমি যা খুশি পরব, তাতে তোর কী রে শুয়োরের বাচা? তোর মায়ের থেকে এনে পরেছি নাকি?
উকিল ২: দেখুন জজসাহেব আপনি নিজেই দেখে নিন এদের পোশাক, মুখের ভাষা…
জজ: অ্যাই অ্যাই না না উকিলভাই! এতক্ষণ আপনার দিকের ভাষারও কোনও ইয়ে ছিল না! এরম করলে কিন্তু খেলব না!
টেনিয়া: আরে স্যার আমরা তো ভালর দলে!
জজ: এই আপনি আদালতের মাইনে পান। আগামী পাঁচমিনিট কোনো কথা বলবেন না। আর এই যে সমস্ত সাধারণ মানুষদের বলছি, এটা আদালত। পাড়ার ক্লাব না! শুধু উকিল দুজন কথা বলবে না। না হলে সবকটাকে জোর করে শাবাশ কেলুদা দেখাতে নিয়ে যাব। হ্যাঁ উকিলভাই আপনি বলুন তো!
উকিল: স্যার, ১৯৬৯ সালের স্টোনওয়াল রায়টকে ট্রিবিউট দিয়েই প্রতি জুন মাসটা প্রাইড মান্থ বলে পালন করা হয়। কারণ…
জজ: এই স্টোনওয়াল না কী সেটা কী বললে…
উকিল ২: মাইলর্ড আপনার কাছে আমার আবেদন এই যে এইসব অমূলক ঐতিহাসিক উপন্যাসের চক্করে না গিয়ে যদি আমরা বর্তমানের ওপর নজর দিই তাহলে ভাল হয় নাকি? যে বিষয়ে আমরা আজ জড়ো হয়েছি সেটা নিয়ে কথা বললাম ধরুন!
জজ: বেশ বলুন।
উকিল ২: বলছি স্যার ভদ্রলোকের পাড়াতে এই ধরনের মুখে রং মেখে, যা-নয়-তাই জামাকাপড় পরে এমন উগ্রভাবে…
উকিল: আপনার সমস্যাটা কোথায়? জামাকাপড়ে, রঙে, না উগ্রতায়? কারণ উগ্রতা, সাজপোশাক, তলোয়ার, ছুরি, বন্দুক নিয়েও তো মিছিল হয়, কই তখন তো সেটা অসভ্যতা মনে হয় না, কেন হয় না?
জজ: বাহ বেঁড়ে বলেছেন তো! হ্যাঁ উকিলভাই কেন হয় না ভাই?
উকিল ২: দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। একটা আমাদের সমাজের আমাদের সভ্যতার, অঙ্গ! বহুদিন ধরে চলে আসছে!
উকিল: আরে বহুদিন ধরে চলে আসছে বলেই তো আর একটা ভুল জিনিস ঠিক হয়ে যেতে পারে না!
বিবেক: আবার কনটেক্সট থেকে সরে যাচ্ছে কিন্তু!
উকিল: তো যেটা বলছিলাম। মহামান্য আদালত সমস্যাটা একেবারে গোঁড়ায়। সমস্যাটা অ্যাক্সেপটেনসে। আমি চিরকাল দেখে এসেছি প্রেম ভালবাসা ছেলে-মেয়েতে হয়। যৌন চাহিদার ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু যেই আমি দেখলাম যে একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে চাইছে বা একটা মেয়েকে, বা দুজনকেই বা দুজনকে ঠিক দুজনের মতো করে না অন্যভাবে…
জজ: বাবাহ এত কিছুও হয়! আমার তো খুব কৌতূহল হচ্ছে!
উকিল: হ্যাঁ সেটা তো স্বাভাবিক! কৌতূহল হওয়া তো স্বাভাবিক! তাহলে কথা বলুন! আমরা তো বনমানুষ নই। তাহলে কথা হোক। জানার চেষ্টা হোক বোঝার চেষ্টা হোক!
সাধারণ মানুষ ৭: আদালত অনুমতি দিলে আমি কটা কথা বলতে চাই।
জজ: বাহ! আপনার বেশ সৌম্যকান্তি চেহারা। আপনি বলুন!
সাধারণ মানুষ ৭: উকিলবাবুকে আমার প্রশ্ন কথা হবে কিন্তু কাদের সঙ্গে হবে? এরা কি কথা বলতে দেয়? কথা বলা যায় এদের সঙ্গে? কিছু বললেই চিৎকার করা, হোমোফোব বলা, খাপ বসানো, হোমোসেক্সুয়ালিটির কার্ড প্লে করা, এগুলো হয় না? কিছু নির্দিষ্ট ইউটিউবার যেমন কদর্যভাবে নিজেদের মেলে ধরছেন শুধুমাত্র ভিউ বাড়ানোর জন্যে সেটা কি আপনাদের পক্ষে খুব সম্মানজনক হচ্ছে? সেটা কি উলটে আরও বিরূপ মনোভাব তৈরি করছে না?
জজ: বাহ! কী গুছিয়ে কথা বলেন আপনি!
উকিল: বিরূপ মনোভাব তো স্যার অলরেডি তৈরি হয়ে আছেই, হ্যাঁ বলা যেতে পারে যে সেটার থেকে এই জাতীয় বিরূপ মনোভাবকে কিছু ইন্ধন সংগ্রহ করছেন। ধরা যাক আপনার ফুটবল নিয়ে ভালবাসা বা বিরূপ মনোভাব দুটোই নেই। এবার যদি কোনও একটা ইউটিউবার, আপনার মতে ভিউ বাড়ানোর জন্যে নিজেকে ফুটবলার বলে আবারও আপানার মতে ‘কদর্য’ সমস্ত ভিডিও বানিয়ে চলে তাহলে আপনার রাগটা কার ওপর হওয়া উচিত? সেই নির্দিষ্ট ইউটিটিবারের প্রতি না সমগ্র ফুটবল খেলাটার প্রতি? অবশ্যই ফুটবলের ওপর আপনার রাগ হবে না তাই না?
উকিল ২: এটা একটা বাজে তুলনা কারণ ফুটবল একটা খেলা আর LGBTQ একটা যাপন!
উকিল: এটাই আপনাদের স্বভাব, যেটা বলা হল সেটা বোঝার কোনও চেষ্টাই না করে নিজে আগে থেকে যেটা ভেবে রেখেছেন সেটা স্বপক্ষে যুক্তি খোঁজা! কী বললাম আর কী বুঝলেন!
সাধারণ মানুষ ৮: বুঝেছি একদম ঠিকই। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না আমরা কী বলতে চাইছি। ধরা যাক একটা গোটা গ্রাম জীবনে কোনও মাংসা খায়নি, এইবার আপনি হঠাৎ করে তাদের একজনকে ধরে প্রোটিন দরকার বলে মাংস খাইয়ে দিলেন। ফল কী হবে? সেই লোকের তো পেট ছাড়বেই তাকে দেখে বাকিরাও আর কোনওদিন মাংসা খাবে না।
উকিল: আর এই হোক, আমাদের বিষয়টার সঙ্গে ‘হঠাৎ’ শব্দটা বোধহয় যায় না। আমাদের এই কলকাতা শহরেই প্রথম প্রাইড ওয়াক হয়েছিল নয় নয় করে পঁচিশ বছর আগে। সারা পৃথিবীর কথা তো ছেড়েই দিলাম। এই এতদিনের ঘটনাকে যখন আপনার হঠাৎ মনে হচ্ছে তখন মাংসটা এবার জোর করেই খাওয়াতে হবে। একটা সমকামী বা একটা ট্রান্সজেন্ডার মানুষকে ছোট থেকে কী কী সহ্য করতে হয়, কীসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সেটা অন্য কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব না। সহ্য করতে করতে একটা সময় গলা তুলতেই হয় ভাই, লাউড হতেই হয়।
সাধারণ মানুষ ৮: না সমস্যা আরও আছে। এই সব ঝলমলে মিটিং মিছিল আমাদের বাচ্চাদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
উকিল: হ্যাঁ সেটার জন্যেই তো আরও এই ধরনের মিছিল করা যাতে আপনাদের বাচ্চারা, আপনাদের পরের জেনারেশন যখন বড় হবে তখন তারা স্বাভাবিকটাকে স্বাভাবিক বলে চিনতে শিখবে, জানতে শিখবে। নিজেদের কথা বলতে শিখবে! এখনও কথা বলতে শিখবে!
উকিল ২: আর সঙ্গে এই প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ করতেও শিখবে।
উকিল: আরে কি তখন থেকে প্রকৃতি প্রকৃতি করতে লেগেছেন! জীবনে কোনওদিন গাছ লাগিয়েছেন একটাও? প্লাস্টিক টিফিন কৌটোয় টিফিন নিয়ে এসেছেন তো! প্রকৃতি দেখাচ্ছে! বলুন না আমার চোখ একটা ছেলেকে শাড়ি বা এই ড্রেসে দেখতে অভ্যস্ত নয়। আপনার সেটা দেখে অস্বস্তি হয়। আর কেন হয় সেটা তো আবার নিজে মুখে স্বীকার করতে আপনার এটিকেটে লাগবে নাকি? লেসবিয়ান পর্ন দেখেন তো খুঁজে খুঁজে! কেন দেখেন?
উকিল ২: এই এসব কী আজেবাজে…
জজ: হ্যাঁ উকিলভাই, এটা জনতার আদালত, এখানে এসব, যাহ, লজ্জা করে তো!
উকিল: সরি মাইলর্ড, কিন্তু কথা সত্যি।
সাধারণ মানুষ ৮: আরে এদের দেখে যদি আমাদের ছেলেমেয়েগুলোও এদের মতো হয়ে যায় তখন?
উকিল: হয়ে যায় মানে? এটা কি র্যাডিকাল নাকি? হয়ে চাইলাম হয়ে গেলাম! হয় আপনি হয়ে জন্মেছেন না হয় জন্মাননি! আর এই বেসিক কথাওগুলোও এখন দাঁড়িয়ে বলতে হচ্ছে! ছ্যা!
জজ: এই ছ্যা-ট্যা বলবেন না। খারাপ লাগে।
উকিল: সরি মাই লর্ড।
জজ: আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে ওই কথাই রইল। মিছিল হো…
উকিল ২: এই দাঁড়ান দাঁড়ান, আমার আরেকটা কথা আছে। এই যে এত বড় বড় বাতেলা দিলেন, তা আপনারা নিজেদের নিয়ে ইয়ার্কি নিতে পারেন না কেন বলুন দেখি?
উকিল: কোনটা ইয়ার্কি? ছক্কা বলা, মগা বলা, এগুলো? নাকি হিজড়ে শব্দটাকে গালাগালের মতো ব্যবহার করা, কোনটা?
উকিল ২: না এগুলো তো খারাপ, আমি বলছি এমনি সাধারণ জোক, সেগুলো বললে এরম তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন কেন? এই তো ডেভ শ্যাপেলের লাস্ট কমেডি স্পেশালটা, রিকি জার্ভিসের ক্যথলি জেনারকে বিডটা! এরা তো আমাদের মতো ব্যাকডেটেড নয়, একেবারে ফার্স্টওয়ার্ল্ড কান্ট্রির লোক! প্রিভিলেজের ঠাকুরদা সব! তারা এই সব জোকে রেগে যাচ্ছে কেন?
উকিল: ও সে যাচ্ছে তাদের ব্যাপার!
উকিল ২: ওমনি! শালা কথা বলতে ভয় লাগে আজকাল! পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি একটা ছেলে যাচ্ছে, তাই ছেলে বলেছি, আমি কী করে জানব সে নিজেকে মনে মনে অন্য কিছু ভেবে বসে আছে!
উকিল: আরে ভাই, সে একবার সেটা ঠিক করে দেওয়ার পর তো আপনি সেটা না বুঝে সেটাকে নিয়ে আরও খিল্লি করবেন, করেই যাবেন। সমস্যাটা সেখানে!
উকিল ২: এই আপনি চুপ করুন তো!
উকিল: কেন, কেন চুপ করব! চুপ করে করেই…
[আদালত জুড়ে তুমুল হইহট্টোগোল]
টেনিয়া: স্যার একটা কথা বলব?
জজ: বলো!
টেনিয়া: লাঞ্চব্রেক দিয়ে দিন, ও শালা খিদের থেকে বড় আর নেই!
জজ: এটা খুবই একটা প্রোপাগান্ডিস্ট স্টেটমেন্ট দিলেন, কিন্তু ঠিক আছে, যাই খেয়ে নিই… অ্যাই অ্যাই থামুন থামুন, লাঞ্চ ব্রেক।
বিবেক: যাক। পেরেছ। এবার যাও টাইপো চেক করে পাঠিয়ে দাও।
আমি: লেখাটা না… ঠিক জমল না রে…
বিবেক: সে তোমার কোনও লেখাই জমে না।