অশোক মুখোপাধ্যায়
যে-কোনও ধর্মের একটু-আধটু বুদ্ধিধারী লোকেরা বুঝে যান, বিজ্ঞানে এই প্রথম এমন একটা তত্ত্ব এসেছে যাকে কিছুতেই ধর্মশাস্ত্রের পবিত্র খাপে সাঁটানো যায় না। ভগবানের গুণাবলি নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায় যে! ফলে এই তত্ত্বকে বিজ্ঞানে থাকতে দিলে ঈশ্বরমহাশয়কে নিয়ে আর ভাল ভাল কথাগুলো বলা যাবে না। তাই যতটা পারা যায় একে বিরোধিতা করতেই হবে। সিলেবাসে একে কোনঠাসা না করলেই নয়
পূর্ব-প্রসঙ্গ: সেই ঘড়িওয়ালার কথা
এই চিন্তাগুলি কীভাবে সেদিন সমাজকে আলোড়িত করেছে বোঝানোর জন্য এখানে একটা অণুগল্প বলি। গল্পটার স্রষ্টা অবশ্য উনিশ শতকের আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের একজন যুক্তিবাদী চিন্তাশীল মানুষ— রবার্ট গ্রিন ইঙ্গারসল (১৮৩৩-৯৯)। একাধারে দুঁদে উকিল, সুবক্তা, সুলেখক এবং যুক্তিবাদ ও সংশয়বাদের একনিষ্ঠ প্রচারক। সবচাইতে বড় কথা, একজন মার্কিনি ঘরানার ভারি সুরসিক চরিত্র।
তিনি লিখেছেন: এক পাদ্রি তাঁর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছেন। ঘুরতে ঘুরতে তাঁরা একটা ঝিলের ধারে এসে দেখলেন— একটা সারস জলের ঠিক কিনারে বসে আছে আর মাঝেমাঝে লম্বা ঠোঁট ডুবিয়ে পানির ভেতর থেকে মাছ বা ব্যাঙ তুলে তুলে খাচ্ছে। তাঁর ছেলে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। পাদ্রি সাহেব তাঁর ছেলেকে তখন বললেন, “দ্যাখো দ্যাখো খোকা, মহান করুণাময় ঈশ্বরের কী সুন্দর বন্দোবস্ত। সারসকে তার খাদ্য জোগাড় করার জন্য কী চমৎকার একটা ঠোঁট দিয়েছেন, দেখেছ?”
তাঁর ছেলেও ব্যাপারটা দেখছিল আর ভাবছিল। তবে কিশোর মন তো। সে আবার নিবিষ্ট চিত্তে অন্য কিছু বোঝার চেষ্টা করছিল। বাবার কথায় সম্বিত পেয়ে সে তখন বলল, “আচ্ছা, বাবা! ভগবান কি শুধু সারসদের বাঁচিয়ে রাখার কথাই ভেবেছেন? মাছ বা ব্যাঙের আত্মরক্ষার কথা একেবারেই ভাবেননি?”
গল্পটা খুব শিক্ষাপ্রদ। ইঙ্গারসল দেখাতে চেয়েছিলেন, জীবজগতের বৈচিত্র্য দেখিয়ে খাপে খাপে মেলানোর কথা বলতে গেলে এবং তাকে ঈশ্বরের মহিমা হিসাবে বর্ণনা করতে গেলে তার দ্বারা ঈশ্বরের বহুবিধ ক্ষমতাকে আবার অস্বীকার করতে হয়। ঈশ্বর সারসের বেঁচে থাকার খাপটা মেলাতে পারলেও মাছ বা ব্যাঙদের বেঁচে থাকার নকশাটা বানাতে ভুলে গেছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ধারণার পক্ষে তো সেটা ভাল নয়। কিন্তু মন থেকে ঈশ্বরচিন্তা একবার ঝেড়ে ফেলতে পারলে তখন ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের আলোকে এই খাপে খাপে মেলার বা না-মেলার ব্যাপারটাও সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। জীবজগতের যে প্রজাতিগুলি টিকে গেছে তাদের সমস্ত বৈশিষ্ট্যই ঠিকমতো ব্যাখ্যা করা যায়।
গল্পটা শুনে অবশ্য কারও কারও এমনও মনে হতে পারে, না না, এখানেও ভগবানের একটা সাঙ্ঘাতিক দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। তিনি সারসদের লম্বা ঠোঁট জুগিয়ে দিয়ে এমন একটা স্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন যাতে দুনিয়ায় মাছ বা ব্যাঙের সংখ্যা খুব বেশি সংখ্যায় বাড়তে না পারে। সারসরা খেয়ে খেয়ে তাদের একটা সীমিত সংখ্যায় বেঁধে রাখবে। নইলে এক বাস্তুতান্ত্রিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।
সমস্যা হল, এমন হলে সারসদের সংখ্যা আবার বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাবে যে! বাস্তুতন্ত্রে সেও এক বিশাল ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে। মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী আর তখন মাছ খেতেই পাবে না। ভগবানকে তো সেই দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। তা আর সে রাখল কই? শুধু সারসদের কথাই সে ভেবেছিল। বা আসলে কারও কথাই সে ভাবেনি, ভাবা সম্ভব নয় বলেই। আমরা খামোখাই তার ঘাড়ে এত ভাবনাচিন্তার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছি।
যাই হোক, আবার বিবর্তনের কথায় ফিরে যাই। জীবজগতে কারা টিকবে? কারা কারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে? দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে ঠিক হয় সেটা?
ডারউইনের যুক্তিধারা অনুসরণ করেই এবার এই বিষয়টার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করা যাক। ডারউইন সমুদ্রপথে প্রায় সমস্ত উপকূলই পরিক্রমা করেছেন। তিনি দেখেছেন দক্ষিণ আমেরিকায়, আফ্রিকায় বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে, যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ, মাটির চরিত্র, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, জলবায়ু, গড় উষ্ণতা ও আর্দ্রতা, ইত্যাদি বাস্তুতান্ত্রিক উপাদানগুলি প্রায় একই রকম, সেখানেও এক জায়গার উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে অন্য জায়গার উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈশিষ্ট্য মেলে না। প্রজাতিগুলো সব আলাদা আলাদা।
যেমন ধরুন, এশিয়া আফ্রিকার বানর আর দুই আমেরিকার বানর দেখতে একেবারেই অন্যরকম। আমাদের বাঘ আর ওদের জাগুয়ার প্রথম দর্শনে একরকম মনে হলেও আসলে বেশ অনেকটাই আলাদা। প্রজাতি হিসাবেও তারা ভিন্ন। আবার, কোনও কোনও ক্ষেত্রে, যেমন গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের পাশাপাশি চোদ্দোটি দ্বীপে তিনি চোদ্দোরকম প্রজাতিরই কচ্ছপ দেখেছেন এবং সেগুলো রঙে আকারে দেহের গঠনে এতটাই আলাদারকমের যে স্থানীয় অধিবাসীরা তুলে আনা কচ্ছপ দেখেই নাকি বলে দিতে পারে, সেটা কোন দ্বীপ থেকে ধরা হয়েছে।
ভারি আশ্চর্যের ব্যাপার তো!
ডারউইনের মনে সেদিন এমন একটা প্রশ্ন জেগেছিল যা এর আগে কারও মাথায় আসেনি। বিপুল ক্ষমতাধর নকশাকারী ভগবান যদি সত্যিই খাপে খাপে মিলিয়ে সমস্ত জীবজগৎ সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে একইরকম খাপের জন্য এতরকম বৈশিষ্ট্য কেন? দ্বীপগুলোর পরিবেশ তো একদম এক, তাহলে কচ্ছপগুলি আলাদা কেন? নকশাগুলো কি সত্যিই পরিবেশ দেখে বানানো হয়েছিল? শুধু ভগবান নয়, ল্যমার্কের তত্ত্বও এই জায়গাতে তাঁর কাছে বেখাপ্পা মনে হয়েছে। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়েই যদি জীবদেহের পরিবর্তন হয়, তাহলে একই পরিবেশে এতরকম আলাদা আলাদা কচ্ছপ কেন তৈরি হবে? বা কীভাবে হবে? একইরকম হলেও তো চলত। বস্তুত, একরকমই তো হওয়ার কথা। এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর হিসাবে তাঁর মাথায় যে চিন্তাটা তখন এসেছে তা হল, পরিবেশ অনুযায়ী খাপ মিলিয়ে আদৌ জীবের বৈচিত্র্যগুলি তৈরি হয়নি। জীবের বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়েছে তার জৈব প্রক্রিয়ার নিজস্ব কোনও এক অশৃঙ্খল প্রভেদন (random variation)-এর পথে। তারপর সেখানে যে প্রজাতির যে যে বৈচিত্র্য পরিবেশের খাপে মিলেছে তারা সাধারণভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচনে টিকে গেছে। বাকি বৈচিত্র্যগুলি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এই অশৃঙ্খল প্রভেদনের পরিঘটনাটিকে আর এক দিক থেকেও বোঝার চেষ্টা করা যাক।
ডারউইন বললেন— আমরা সাধারণভাবে জানি, যে সমস্ত পতঙ্গ বা যে সমস্ত পাখি ভাল উড়তে পারে অস্তিত্বের সংগ্রামে তারাই টিকে থাকে। খাদ্য সংগ্রহ এবং আত্মরক্ষা— দুদিক থেকেই তারা অনেকটা সুবিধা পায়। আর যারা ভাল উড়তে পারে না তারা টেকে না। অর্থাৎ, আপাতদৃষ্টিতে নকশার যুক্তি এখানে কাজ করছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সামুদ্রিক দ্বীপগুলিতে, বিশেষ করে ছোটখাটো দ্বীপে, ব্যাপারটা আবার উল্টো। এই নকশার তত্ত্ব সেখানে কাজই করে না। যে পাখি বা যে পতঙ্গ ভাল উড়তে পারে, তারা মাটি থেকে একটু উঁচুতে উঠলেই প্রবল হাওয়ার টানে জলের দিকে চলে যায়, খাবার পায় না, অনেক সময় জলে ডুবেও যায়। সেইজন্য এই জাতীয় প্রজাতিগুলো ওখানে নেই। ওখানে আছে সেইসব পতঙ্গ এবং সেইসব পাখি যাদের উড়বার ক্ষমতা কম, ডানা অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা অগঠিত। অর্থাৎ, তথাকথিত design-এ ভুল থাকলে তবেই এরা বাঁচে এবং টেকে।
সুতরাং নকশার যুক্তি দিয়ে এটারও ব্যাখ্যা হয় না। কেন না, যুক্তিটা মানলে দেখা যাচ্ছে, কোনও কোনও জীবের ক্ষেত্রে ভগবান আপাত-অর্থে ভাল নকশাই বানিয়েছে, কিন্তু তাতেও তাদের ক্ষতি করে ফেলেছে। বা বলতে হয়, নকশাটা জানলেও পরিবেশের প্রয়োজন অনুযায়ী নকশাটা করতে পারেনি। কী অদ্ভুত পরিস্থিতি ভাবুন! নকশার যুক্তি মেনে নিলে ভগবানের কাণ্ডজ্ঞান বুদ্ধিসুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। নতুবা নকশার যুক্তিটিই হাতছাড়া করতে হয়। নান্য বিকল্পম্!
তখন ডারউইন আর একবার সিদ্ধান্ত করলেন যে পরিবেশ অনুযায়ী জীবের বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়নি। কিংবা— ল্যমার্ক যেরকম ভেবেছিলেন— জীবেরা পরিবেশের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের বদলাতে পারেনি, কেননা সেটা এক প্রজন্মে সম্ভবই নয়। অশৃঙ্খল প্রভেদনের মধ্যে দিয়ে জন্ম নেওয়া অনেকরকম বিভিন্নতার মধ্যে যে বৈচিত্র্যযুক্ত জীবগুলি পরিবেশের সঙ্গে সফলভাবে খাপ খেয়েছে, তারাই প্রকৃতিতে টিকে গেছে। আর যারা খাপ খায়নি তারা ধীরে ধীরে সংখ্যায় কমতে কমতে অবশেষে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যাঁরা ফসিল নিয়ে কাজকারবার করেন তাঁরা জানেন সেটা। কিন্তু সাধারণ মানুষ বিলুপ্ত প্রজাতিগুলিকে তো আর দেখেনি। বা প্রজাতি বিলুপ্ত হতেও দেখেনি (তাদের বাপ-ঠাকুর্দাও সম্ভবত দেখেনি)। শুধু সেকালে নয়, একালেও দেখতে পাচ্ছে না। তারা সফলভাবে টিকে থাকা প্রজাতিগুলিকেই দেখেছে এবং ভেবেছে, ঈশ্বর এইগুলোকেই খাপে খাপে মিলিয়ে তৈরি করেছে।
হ্যাঁ, ডারউইনের বাক্সগুলোতে এরকম আরও যে-সব নমুনা ছিল, সেগুলিকে যত আমজনতার সামনে আনা হল, ততই মহামহিম ঈশ্বরের ক্ষমতাহীনতা প্রকট হতে থাকল।
সেই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসু মন থেকেই ডারউইন আমেরিকার একজন ঈশ্বরবিশ্বাসী জীববিজ্ঞানী আসা গ্রে-কে একটি চিঠিতে একবার প্রশ্ন করেছিলেন, আচ্ছা মশাই, বলুন তো, মশা বা মাছির জন্ম দিয়ে ঈশ্বরের কী অভিপ্রায় পূরণ হল। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের অন্ত্রে ঘর বানিয়ে বসবাস করা পরজীবী কৃমিদেরই বা সে কোন্ নকশা অনুযায়ী সৃষ্টি করল। কলেরা, ম্যালেরিয়া, বসন্ত রোগের জীবাণুদের জন্মদান করেই বা সে কী মহান উদ্দেশ্য সাধন করতে চেয়েছে।[1]
আমাদের মনে হয়, আজকের দিনে হলে তিনি অবশ্যই প্রাক্তন মন্ত্রী সত্যপাল সিংকে হাতের কাছে পেলে জিজ্ঞেস করতেন, থ্যালাসেমিয়া, ক্যান্সার বা পার্কিনসন জাতীয় রোগের ডিজাইনপুঞ্জ ভগবান সাহাব কী ভেবে বানিয়েছিল? বা যে সমস্ত ডিজাইনে এই রোগগুলি হয়, সে-ও তারই নির্মাণ কিনা!
বুঝতে অসুবিধা হয় না, এই প্রশ্নগুলির প্রতিটিই আসলে তীক্ষ্ণ উত্তর-গর্ভা। আসা গ্রে কোনওটারই উত্তর দিতে পারেননি; আমরা জানি, এখনও কেউ এর একটারও উত্তর দিতে পারবেন না। অর্থাৎ, ডারউইন যেন বলতে চেয়েছিলেন, অন্যান্য দিকে ঈশ্বরের সম্মান বাঁচাতে হলে তাকে এই সৃষ্টিকর্তার চেয়ার থেকে সরিয়ে রাখতেই হবে।
অর্থাৎ, টেকাটিকির ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণ করছে প্রকৃতি; এতে ভগবানজির বিশেষ কিছু করণীয় নেই। সে— ধর্মতাত্ত্বিক মতে জীবজগৎ সৃষ্টির সমস্ত ব্যাপারটায় নাক গলাতে গিয়ে— ইতিমধ্যেই যথেষ্ট তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। ডারউইন চাননি, সে বেচারা আরও নাস্তানাবুদ হয়। ইউরোপের লোকেরা আবার তখন ঘড়ির ব্যাপারে খুব সংবেদনশীল ছিল (বোধহয় এখনও আছে)। ভগবানের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রাখতে গিয়ে ঘড়ির নির্মাতারাও ওরকম বেশি সংখ্যায় ভুলভাল ডিজাইনে ঘড়ি বানাক, তারা একেবারেই চাইত না।
সমস্যাটা কি বুঝলেন?
বিজ্ঞানের অন্য অনেক জায়গায় যা কিছু নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হোক, নতুন তত্ত্বের আগমন হোক, ধর্মতাত্ত্বিকরা অনায়াসে বলে দিতে পারেন, ও, এই ব্যাপার? এই কথা বলছ? এ তো সেই ভগবানই করাচ্ছে! ওনার ইচ্ছেতেই ঘটছে। কিন্তু জীবজগতের বিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপেই এই ডারউইনীয় অশৃঙ্খল প্রভেদনের ঝামেলাটা ঢুকে থাকায় সেই কথাটা আর তারা বলতে পারছে না। বলতে গেলেই এর মানে দাঁড়িয়ে যাবে, ও মা, ভগবান সব জেনেশুনেও এত ভুলভাল নকশা বানিয়েছে? প্রতিটি ধর্মশাস্ত্রে তার গায়ে যে সমস্ত বিশেষণ লেপ্টে দেওয়া থাকে— সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান, সর্বজ্ঞ, করুণাময়, এবম্বিধ, তার প্রত্যেকটাই তো চুনৌতির মুখে পড়ে যায়।
ছ্যা ছ্যা! রাগ হবে না?
এইজন্যই যে-কোনও ধর্মের একটু-আধটু বুদ্ধিধারী লোকেরা বুঝে যান, বিজ্ঞানে এই প্রথম এমন একটা তত্ত্ব এসেছে যাকে কিছুতেই ধর্মশাস্ত্রের পবিত্র খাপে সাঁটানো যায় না। ভগবানের গুণাবলি নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায় যে! ফলে এই তত্ত্বকে বিজ্ঞানে থাকতে দিলে ঈশ্বরমহাশয়কে নিয়ে আর ভাল ভাল কথাগুলো বলা যাবে না। তাই যতটা পারা যায় একে বিরোধিতা করতেই হবে। সিলেবাসে একে কোনঠাসা না করলেই নয়!
[আবার আগামী সংখ্যায়]
[1] Darwin (ed.) 1958, 67, 248, 263, etc.