গুচ্ছ কবিতা
নতুন পাহাড়
শহরের তলায় তলায় খুঁড়ে রেখে দেব শালা
রাজপথের তলা থেকে মাটি নিয়ে তুলব হুই দূরে
পঁচাশি তলার ভিতে এফোঁড় ওফোঁড়
আমাদের চলার পথ হবে
শহরের লোক অবাক হয়ে দেখবে
দূরে গজিয়ে উঠেছে নতুন পাহাড়।
যেদিন সব বাড়ি রাস্তা
হুড়মুড় করে ধসে যাবে,
লোকে বলবে— শালা, ইঁদুরের এত জোর
শহর ভাঙে, পাহাড় তোলে!
ম্যাজিক
সবাই জানে এই গাছে নয়নতারা ফোটার কথা
তবুও নয়নতারা ফুটলেই সবাই আশ্চর্য হচ্ছে
চিনির স্বাদ মিষ্টি বলে লোকে অবাক হচ্ছে,
মানুষ মানুষের পাশে বসলে
আমরা ভাবছি পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য।
আমরা জানি সবাই ভাল আছে
তাও দেখা হলে বলছি— ভাল আছেন তো?
কোথাও কোনও ম্যাজিক হচ্ছে না
কেবল ম্যাজিক হচ্ছে ভেবে হাততালি দিচ্ছে সবাই
পার্সেল
প্রতিদিন একটা একটা পার্সেল আসছে
আমি না খুলে জমিয়ে রাখছি
জমিয়ে জমিয়ে ছাত ছুঁল
ছুঁল চিলেকোঠার ঘর,
কোনওটাতে আঙুল আছে,
কব্জি অবধি হাত, চোখ
পায়ের পাতা, ছিঁড়ে যাওয়া নাড়ি—
অনন্ত যুদ্ধের সামনে দাঁড়িয়ে
হেমন্তের বিকেলে এর থেকে বেশি
কীই বা দিতে পারো তুমি
উপহার
কেউ চলে যেতে বাধ্য করেনি
থেকে যেতেও বাধ্য করেনি কেউ
এর মাঝখানে অনির্দিষ্ট হয়ে
কুড়িয়ে রাখছি
শেষ অক্টোবরের ঝরে থাকা রোদ
অভ্যাস না হওয়া শহরের
খেলনা বেচা শিশুর চোখ।
বলা যায় না,
যুদ্ধ শেষে দেখা হয়ে যেতে পারে
যখন তুমি ফিরে যাচ্ছ
যখন আমি ফিরে যাচ্ছি
উপহার বিনিময়ের সময়
কী তুলে দেব তোমার হাতে
মৃত্যুদিন
আজ কারও জন্মদিন নয়
আজ কেবল মৃত্যুদিন।
হেমন্তের পিচরাস্তায়
হলুদ পাতা বিছিয়ে দেয় গাছ,
তীব্র নীল আকাশে
তাই কেউ
মেঘের অবকাশ রাখেনি।
আজ কারও জন্মদিন নয়।
আজ কেবল
একটি মৌমাছির মৃত্যুদিন।