চারটি সনেট
আলোর আস্তাকুঁড়ে
জলার পারে অন্ন দিয়ে
সোমত্ত বিকেল যায়
নিঃসার সাঁঝে হারিয়ে
বাদামি মায়ায়, অমরতার আশায়।
আঁধার ভালবেসে যে আলো
ডুব দিল জলায়,
কোন সুতলে বলো
সে আমায় আবার বাঁচতে শেখায়?
কাদামাটি মাখা আমার শরীর
ঘুমের অলিগলি ঘুরে
ফের দ্যাখে ভিড়
আলোর আস্তাকুঁড়ে।
একা ভাসে মান্দাস,
কাটে দিন, কেটে যায় মাস।
(০৩/০৬/২০২৩)
ফেরারি ঘুম
আঁধারে লালিত হর্ম্যকোণে
ঘর বানিয়ে ভোমরা,
বিদায় নেওয়ার ক্ষণ গোনে
থামিয়ে ডানার হররা।
সেখানেই আমার মনের ঘর
আমার কান্নাভেজা ঠিকানা,
থামলে যেখানে ঝড়
মুছে যায় মোহ-বাসনা।
দাপিয়ে বেড়ায় অকালবর্ষণ
ফেরারি ঘুম তবু অসাড়,
মুহূর্ত করে মুহূর্তের হনন
আজ বলে কিছু নেই আর।
লাগলে ঘরে চুল্লির আগুন
ভাদুরে হাওয়ায় মত্ত ফাগুন।
(২৩/০৯/২০২৩)
চারধাম যাত্রা
একচল্লিশজন, মন্দেভালোয়
সুড়ঙ্গে মাপছে মানবজমিন,
ছাই ঘষে নিকষ কালোয়
দেখতে চায় তারা চেকনাই দিন।
কেঁপেছিল পাহাড়, অমানিশায়
ঘুমঘোরে আকাশ ভেঙেছিল,
ভোরের আলো ঢেকেছিল কুয়াশায়
পথরেখা ধুলোয় মিশেছিল।
হরে-দরে হাঁটুজল
স্বর্ণসীতার দোসর, একচল্লিশজন,
ত্রাণের পাহাড়ে মাছির দল
কার কপালে, কার ধন!
স্থগিত উদ্ধারকার্য
বন্দি আর্য, বন্দি অনার্য।
(২৫/১১/২০২৩)
স্বপ্ন ক্ষণিকের
অংশুকণায় আশ্রিত অভিমান
ফালাফালা যেন টাওয়ারে-মাস্তুলে,
মেঘে-মেঘে রাঙা আকাশবাগান
যেন আবির ঢালে কংক্রিটে-পাংশুলে।
নৈর্ঋতে শানিয়ে আগুন
দিন পুড়ে ছাই—
হাওয়ায় চলকে খুন
শূন্যে গড়ায় রোশনাই।
চিলের খোলা ডানায়
পেতে দিনের অন্তশয্যা,
কার্তিকের রাত চেনায়
উজল নিশাজল-সজ্জা।
সাধ্য নেই নাগরিকের
গড়ে স্বপ্ন ক্ষণিকের।
(২/১২/২০২৩)