দখলি মন্দিরের ইতিকথা

অশোক মুখোপাধ্যায়

 


রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময়সূচি দেখলেই বোঝা যায় ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। মার্চ মাসে লোকসভা ভোটের সম্ভাবনা। নির্বাচনের নোটিস জারি হয়ে গেলে আর এরকম ভোটাকর্ষী কাজ প্রধানমন্ত্রী কিংবা অন্য কোনও ভোটপ্রার্থী রাজনৈতিক নেতা বা তাদের দল করতে পারবেন না। সুতরাং ভোটসূচি ঘোষণার আগেই কাজটা সেরে রাখতে হবে। আবার বেশি আগে করা যাবে না, যাতে অন্য কোনও বড় ঘটনা ঘটে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মে বিশ্বাসী লোকজনের আবেগাচ্ছন্নতায় টান পড়ে

 

সত্য আর মিথ্যার নানা পার্থক্যের মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল: যে-কোনও মিথ্যার অমোঘ পরিণতি হচ্ছে তার ভাষ্য-বিভিন্নতা। এর অন্যথা হওয়ার উপায় নেই। এই একটি পরিঘটনার উপর ভিত্তি করেই পুলিশের গোয়েন্দারা বহু অপরাধের সত্যাসত্য নির্ণয় করে ফেলেন। আবার, আদালতে যখন কোনও অপরাধমূলক ঘটনার উপর পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়, সেখানেও এই যাচকাঠিই একটা আবশ্যিক উপকরণ হিসাবে কাজ করে থাকে।

এই কথাগুলি হয়তো নতুন নয়। সকলে না হলেও অনেকেই জানেন। তবে আমি দাবি করতে পারি, জানলেও বেশিরভাগ মানুষই প্রয়োজনের সময় এটা স্মরণ করা বা এর শরণ নেওয়ার কথা ভাবতে ভুলে যান।

এই যেমন ধরুন ঠিক এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় প্রাক-বাবর আমলের সাতশো বছরের পুরনো বাবরি মসজিদ ভেঙে সেই জমি দখল করে সঙ্ঘ পরিবারের প্রকট উদ্যোগে রামমন্দির নির্মাণের কেচ্ছা। সর্বোচ্চ আদালতকে দিয়ে ভাঙার “গুন্ডামি” সত্ত্বেও বিশ্বাসের নামে মসজিদের জমি হাতবদল করিয়ে সেখানে সরকারি অর্থ ব্যয় করে একটা রাম-নামী মন্দির তৈরি হতে চলেছে। কাজ প্রায় শেষ। এবার প্রধানমন্ত্রী তার দ্বারোদ্ঘাটন এবং রামের মূর্তিতে “প্রাণ”-এর উদ্বোধন করলেই গোটা কর্মসূচির ষোলোকলা পূর্ণ হবে।

প্রশ্ন হল: এই সবই কি সত্যসত্যই ধর্মবিশ্বাসের পথরেখা ধরে হচ্ছে?

এক কথায় এর উত্তর হল, না।

কী করে জানা গেল?

এর সময়সূচি দেখে। মার্চ মাসে লোকসভা ভোটের সম্ভাবনা। নির্বাচনের নোটিস জারি হয়ে গেলে আর এরকম ভোটাকর্ষী কাজ প্রধানমন্ত্রী কিংবা অন্য কোনও ভোটপ্রার্থী রাজনৈতিক নেতা বা তাদের দল করতে পারবেন না। সুতরাং ভোটসূচি ঘোষণার আগেই কাজটা সেরে রাখতে হবে। আবার বেশি আগে করা যাবে না, যাতে অন্য কোনও বড় ঘটনা ঘটে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মে বিশ্বাসী লোকজনের আবেগাচ্ছন্নতায় টান পড়ে। এক মুদ্দাকে তো অন্য মুদ্দাই ভাসিয়ে নিয়ে যায়!

অতএব ২২ জানুয়ারি ২০২৪।

ব্যাপারটা গোলমেলে হলেও এই অবধি সব ঠিকঠাক চলছিল। সংবাদমাধ্যমগুলো তৈরি হয়ে গেছে। ব্যান্ড অর্কেস্ট্রা বাজাতে শুরু করে দিয়েছে। রোজই অযোধ্যার কিছু না কিছু ছবিটবি দিয়ে পাঠক ও দর্শকদের মন এবং চোখ কান ওদিক থেকে যেন সরে না যায় তার জোর প্রস্তুতি চলছে। মণিপুরের আগুন এখন অমাবস্যার আরও গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে ফেলা হয়েছে। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের গুজরাত পুলিশ যে নাগাল পাচ্ছে না, তার খবরও এখন দুরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তর এখন নিশ্চয়ই সেই “পবিত্র” দিনের সাজপোশাক সামান্য বিশ-পঁচিশ লাখ টাকা দিয়ে কিনেটিনে গায়ের মাপ মিলল কিনা পরখ করে ফেলেছে। মেক-আপ ম্যানও সম্ভবত তৈরি!

এইভাবে যখন সবকিছু গুছিয়ে তোলা হয়ে গেছে, তখন হঠাৎ এমন এক প্রান্ত থেকে এমন কিছু বেচাল কথাবার্তা ভেসে এল যার আবেশে গোটা অযোধ্যাকাণ্ডই প্রায় ওলটপালট হয়ে যাওয়ার জোগাড়!

সবচাইতে বড় কথা, তাতে বিরোধীদের অনেকবার বলা কথাটা আরও একবার অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ হয়ে যেতে বসেছে।

কী সেই কথা?

এই রামমন্দিরের সঙ্গে সংখ্যাগুরু হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসের কোনও সম্পর্কই নেই। সমস্তটাই রাজনীতির বীজগণিত এবং ভোটের পাটিগণিত।

 

শঙ্করাচার্যদের আপত্তি

১৯৯২ সালে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য বিজেপি সরকারের পরিপূর্ণ মদতে আদবানি-উমা ভারতী প্রমুখর উৎকট উৎসাহ দানের প্রক্রিয়ায় করসেবক গুন্ডাগিরির মাধ্যমে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর থেকেই ওখানকার পুরনো ধর্মগুরুরা অভিযোগ করছিলেন, যারা ১৯৪৯ সাল থেকে চোরাগোপ্তা ঢোকানো রামলালা সীতার মূর্তির পূজাপাঠ করে আসছিল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের আর সেখানে ঢুকতে বা পুজো দিতে দিচ্ছে না। বেশি হইচই করায় এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলায় নির্মোহী আখড়ার এক সাধুকে তারা হত্যাই করে ফেলে।

শুনেছিলেন কেউ সেকালে, সেইসব ঘটনায় পুরী বা দ্বারকা, বদ্রি বা রামেশ্বরম পীঠের কোনও শঙ্করাচার্য নিন্দা করেছেন, সমালোচনা করেছেন, কিংবা এই মন্দির প্রোজেক্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন? তাঁরা কি সেদিন ঘোষণা করেছেন, অন্য ধর্মের ধর্মস্থান ভেঙে সেখানে মন্দির করায় তাঁদের সায় নেই? রামসীতার আদি পূজারীকে অপসারণ বা হত্যায় তাঁদের সায় নেই? আমার অন্তত জানা নেই। কেউ জানলে আমাকে অনুগ্রহ করে জানাবেন।

না। সেই কাজ তাঁরা কেউ করেননি।

যাঁরা সংশ্লিষ্ট ইতিহাস নিয়ে খোঁজখবর করেছেন, তাঁরা জানেন, বাবরি মসজিদের গায়ে গায়ে অন্তত ষোলোটা হিন্দু মন্দির এবং/অথবা চিহ্নিত পবিত্র স্থান ছিল। হনুমানগড়ি, সীতা কি রসোই, রাম চবুতরা, কৌশল্যাভবন, ইত্যাদি। দীর্ঘ সাতশো বছর ধরেই ছিল। মুসলমান সমাজও তাতে আপত্তি করেনি, হিন্দুরাও মসজিদের ছোঁয়ায় অথবা গোমাংসভোজী মুসলিমদের আনাগোনায় তা অপবিত্র হয়ে গেল বলে মনে করেনি। কেননা, ধর্ম যতক্ষণ রাজনৈতিক বীজগণিতের বাইরের এবং অন্তরের বিশ্বাসের জিনিস, বিশ্বাসটা (আমাদের চোখে) ভুল হলেও পরস্পরের মধ্যে কোনও অপর-বোধ বা শত্রুতার জন্ম দেয় না। অযোধ্যাতেও দেয়নি। দেশের অন্যত্র কোথাও দেয়নি। এইসব তথ্য সচরাচর কেউ বাইরে প্রকাশ্যে বলে না। কেন, তার কারণটা সহজেই বোধগম্য। ১৯৯২ সালের পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের লোকেরা সেই ষোলোটা মন্দির একে একে ভেঙে ফেলে, যাতে, এক, ওখানে সৌভ্রাতৃত্বের যে সমস্ত স্মারকচিহ্ন ছিল তা লোপাট করে দেওয়া যায়; দুই, একক রামমন্দিরের জন্য জায়গাটাকে পুরোপুরি খালি এবং খোলা অবস্থায় নিয়ে আসা যায়, এবং সেখানে আর কোনও দাবিদার না থাকে।

হিন্দু হয়ে হিন্দু মন্দির ভেঙে ফেলছে, লোপাট করে দিচ্ছে— কেউ কি শুনেছিলেন, শঙ্করাচার্যগণ তার প্রতিবাদ করেছেন?

না।

আমিও শুনিনি।

নতুন সংসদ ভবন যেদিন উদ্বোধন হল, চোল রাজাদের সেঙ্গোল নামক রাজদণ্ড মোদির হাতে তুলে দেওয়ার মাইমের মাধ্যমে— যা আসলে মধ্যযুগের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুকরণে রাজতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনারই প্রতীকী অভিনয়— সেখানে সেদিন এই সকল শঙ্করাচার্যগণ উপস্থিত থেকে দামোদরদাসকে দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছিলেন। তাঁদের কারও কি মনে হয়েছিল, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনীতির পক্ষে এই আচরণ শোভা পায় না? এ-যুগে আর রাম বা যুধিষ্ঠিরের “ধর্মরাজ্য” স্থাপন সম্ভব নয়। তাঁরা কিন্তু আপত্তি জানাননি।

সেই তেনারা আজ হঠাৎ করে রামমন্দির উদ্বোধনের ব্যাপারে ব্যাপক আপত্তি জানাতে শুরু করেছেন এবং চারটি পীঠের চারজন শঙ্করাচার্যই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই অনুষ্ঠানে থাকছেন না।

কী ব্যাপার? কেন? রহস্যটা কী?

আপাতদৃষ্টিতে তাঁরা বলছেন, রামমন্দির এখনও অসম্পূর্ণ। এই অবস্থায় এর উদ্বোধন করা ধর্মীয় মতে সমীচীন নয়। দেবমূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা ধর্মীয় বিচারে সিদ্ধ নয়। সনাতন হিন্দু ধর্মে নতুন কোনও মন্দির উদ্বোধন সম্পর্কে বা তার ভেতরে স্থাপিত দেবমূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কী কী শাস্ত্রীয় নির্দেশ আছে আমার জানা নেই। ফলে শঙ্করাচার্যগণ যা বলছেন তার সত্যতা মিথ্যাত্ব নিয়ে বলার কোনও যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু অন্য একটা জিনিস, যেটা আমার জানা আছে, সে সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন আছে।

সেটাই বলি তাহলে।

এই চারটি পীঠের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আদি শঙ্করাচার্য (৭৮৮-৮২০)। সুতরাং ধরে নিতে পারি, বর্তমান শঙ্করাচার্যগণ তাঁরই মত ও পথের অনুসারক। তাই যদি হয়, সেই আদি আচার্য শঙ্করের মতে তো এই গোটা জগৎটাই মায়া, মিথ্যা, স্বপ্নময়, নিদ্রালু, অধ্যাস, ইত্যাদি মাত্র। বাস্তবে সবই তো একমেবাদ্বিতীয়ম ব্রহ্মন্‌ বই নয়। মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ হোক বা না হোক, রামের প্রতিষ্ঠা পুরো হোক বা না হোক, যেটা যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, সেটা সেই অবস্থাতেই পূর্ণব্রহ্ম স্বরূপ। তাহলে তাঁদের আপত্তির কী যথার্থ কারণ থাকতে পারে!

আমার মাথায় ঢুকছে না।

অদ্বৈত বেদান্তের সারমর্মের সঙ্গে মিলছে না!!

 

কারণ তবে কোথায় খুঁজব!

হ্যাঁ, সেই প্রশ্নটাই এখানে আলোচনা করতে বসেছি।

আমার কেন জানি না মনে হচ্ছে, সমস্ত সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার আলো নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির মুখের উপরে পড়ছে— এতেই তাঁদের আপত্তি। তাঁদের সম্ভবত মনে হয়েছে, তুমি যখন লোকসভার নতুন ভবনের দ্বারোদ্ঘাটনের কর্মসূচি নিয়েছিলে, সে ছিল তোমার রাজনৈতিক চাল। তুমি যখন তাকে “ধর্মরাজ্য” প্রতিষ্ঠার অভিনয়ের চালে সংগঠিত করতে চেয়েছিলে, আমরা ধার্মিক গুরুরা তোমাকে সর্ব প্রযত্নে মদত দিয়েছিলাম। ওটা ছিল তোমারই খেলা। আমরা ছিলাম অনুঘটক মাত্র। কিন্তু এখন যখন রামের নামে মন্দির করতে চলেছ, যতই রাজনীতির কূটকৌশল করে এই জায়গায় এসে থাকো, এটা হচ্ছে আমাদের বনেদি খেলার মাঠ। এখানে আমরা খেলব, তুমি বড় জোর রেফারির কাজ করবে। তা না করে তুমিই প্রধান খেলুড়ে হয়ে সমস্ত প্রচার শুষে নিতে চাও, আর আমাদেরকে মাঠের ধারে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখবে— এটা আমরা কেন মেনে নেব?

ভোটের জন্য?

বেশ, তোমাকে আমরা ভোটের নৌকো পাড় করার জন্য সব রকম সাহায্য করে দিতাম। আশীর্বাদও করতাম। কিন্তু ধর্মগুরু হিসাবে আমাদেরই রাম নিয়ে, মূর্তি নিয়ে, মন্দির নিয়ে ভাবার কথা, আমাদের তরফেই তার পূজনসূচি তৈরি করার কথা। বিভিন্ন চ্যানেল থেকে ওবি ভ্যান নিয়ে যারা আসবে, তারা আমাদের মুখের উপরেই ক্যামেরা তাক করে পুরো ঘটনাবলি এবং আমাদের মুখনিঃসৃত সংস্কৃত বচন রিলে করবে— এমনটাই হওয়ার কথা!

এরকমটা না-হওয়াতেই তাঁদের গোঁসা হয়েছে বলে আমার প্রবল ধারণা। তবে আমার মতো সরল সাদাসিধে বামপন্থীরা প্রায়শই জটিল ঘটনা বুঝতে ভুল করে ফেলি। তাই আপাতত উপরোক্ত মিথ্যার পারস্পরিক ঝগড়ার এলাকা থেকে বেরিয়ে এক টুকরো সত্য হিসাবে যুক্তিবাদী লেখক চন্দ্রপ্রকাশ সরকারের একটা রচনা থেকে খানিকটা অংশ উদ্ধার করে এই শাঙ্করজিজ্ঞাসা সমাপ্ত করছি:

শুধুমাত্র হরিয়ানার মতো ছোট্ট একটি রাজ্যে কমবেশি ৩০০টি মন্দির সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সাহায্যপুষ্ট হয়েছিল। কাশ্মিরের হিন্দু মন্দিরে যে জমি ও বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে তার অধিকাংশই সম্রাট ঔরঙ্গজেবের স্বাক্ষরিত ফরমানের ভিত্তিতে। ডঃ কমল গোভেলের গবেষণায় এই তথ্য উদঘাটিত হয়েছে যে, পুনের চিঁচওয়াড়ে গণপতি মন্দিরের জমি দান করেন ঔরঙ্গজেব। বিশিষ্ট ঐতিহাসিক শের সিং ‘মুসলিম রুলার্স ডোনেশন টু টেম্পল নাগেশ্বরনাথ অযোধ্যা’ শীর্ষক একটি পাণ্ডুলিপি পাটনার খোদাবক্স লাইব্রেরিতে দান করেছেন। তাতে তেইশটি রয়্যাল অর্ডার রয়েছে। তার মধ্যে একটি সম্রাট ঔরঙ্গজেবের। শুধুমাত্র হিন্দু মন্দির নয়, একাধিক শিখ গুরুদ্বারে অকাতরে অর্থ ও জমি দান করেছেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। যে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির নির্মাণের জন্য ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে অত্যন্ত নগ্নভাবে পদদলিত করা হচ্ছে আজ, সেই অযোধ্যার দণ্ডধাবন মন্দিরে অর্থ ও জমিদান করেছেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। ফরমান জারি করে জায়গির দান করেছেন তার প্রমাণ আমরা শুরুতেই দেখেছি আমেদাবাদের শত্রুঞ্জয় মন্দিরটির ক্ষেত্রে। সেটি একটি জৈন মন্দির। মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ ও মন্দির সংস্কারের জন্য দু-হাতে অর্থ ঢেলেছেন তথাকথিত ধর্মান্ধ সম্রাট ঔরঙ্গজেব। উজ্জয়িনীর মহাবালেশ্বর মন্দিরের প্রদীপ যাতে অনির্বাণ থাকে তার জন্য দৈনিক ৪ সের ঘি বরাদ্দ করেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। এসব কথা ঢাকাচাপা দিয়ে শুধুমাত্র মন্দির ধ্বংসের কাহিনি প্রতিনিয়ত প্রচারিত হয়ে আসছে!

চন্দ্রপ্রকাশ সরকার— ইতিহাসে সম্প্রীতি; ফেসবুকে প্রাপ্ত


*মতামত ব্যক্তিগত

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4880 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...