অনির্বাণ ভট্টাচার্য
অলোক বলছেন, সরকার হোক বা কর্পোরেট হোক, প্রতিবাদীদের সঙ্গে সেই একই ক্রনোলজি আক্রমণ চলতে থাকে— প্রথমে ওরা তোমাকে বোঝাতে আসবে, তারপর লোভনীয় কিছু দেওয়ার মুখবন্ধ ব্যবস্থা করবে, একটা সময় হুমকি দেবে এবং শেষে শারীরিক, মানসিক নানারকম আক্রমণের পথ বাছবে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যে-কোনও আন্দোলনকে বিদেশি স্পনসর্ড, বহিরাগত ইত্যাদি বলে দাগিয়ে দেওয়ার বিষাক্ত পদ্ধতিও নতুন নয়। এবং এখানে যেহেতু সরকার-কর্পোরেট একসঙ্গেই আছে, ফলত আক্রমণের তীব্রতাও অনেক বেশি। বারবার আন্দোলন থেমে গেছে, মুখ বন্ধ হয়ে নতুন কোনও মোড় বেছে ঘোরাতে হয়েছে গতিপথ
হাসদেও অরণ্যের কথা দিয়ে শুরু হোক। হোক ছত্তিশগড়ের কথা। কোরবা, সুরজপুর, সুরগুজা জেলা দিয়ে ঢাকা উত্তর ছত্তিশগড় এবং হাসদেও নদী ও অরণ্য। ট্রাম্পেট ভারত, ঢক্কানিনাদের ভারতে ৪৪ শতাংশ ট্রি কভারে ঢাকা ছত্তিশগড়ে গোন্ড, ওঁরাও সহ বিভিন্ন আদিবাসীদের মোট ১৫,০০০ বাসিন্দা হাসদেও অরণ্যকে নির্ভর করে বেঁচে আছে। জীবনযাপন, সংস্কৃতি— সবকিছুর ধাত্রীই এই হাসদেও। ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট বলছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্তত ৬০-৭০ শতাংশের বার্ষিক আয়ের উৎস এই হাসদেও। ১,৭০,০০০ হেক্টর ঘন হাসদেও অরণ্য অন্যতম ক্রিটিকাল টাইগার করিডর হওয়া ছাড়াও অন্তত ৫০টি সঙ্কটাপন্ন হাতির অন্যতম বাসস্থান। আরও অন্তত ২৫টি এনডেঞ্জার্ড প্রজাতি, যার মধ্যে লেপার্ড, স্লথ বিয়ার, গ্রে উলফ, স্ট্রিপড হায়না পড়ছে এই করিডরে। সঙ্গে হোয়াইট আইড বাজার্ড-সহ অন্তত ৯২টি প্রজাতির পাখি এবং ১৬৭টি বিরল এবং ওষধি গাছের প্রজাতির আশ্রয় এই হাসদেও। আইসিএফআরই-র রিপোর্টে এই হাসদেও দেশের ‘largest unfragmented forest in Central India consisting of pristine sal and teak forests.’ এবং ভৌগোলিকভাবে এই অরণ্য হাসদেও নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকা, যে নদী সরাসরি মহানদীতে গিয়ে মিশছে এবং ৭,৪১,০০০ একর কৃষিজমিকে জলের জোগান দেওয়া হাসদেও বোঙ্গো রিজার্ভারের ওয়াটারশেড হিসেবে কাজ করছে।
অবস্থানগত তাৎপর্যে জীবসম্পদের সঙ্গে চলে আসে আশ্চর্য খনিসম্পদের প্যারাডক্স। যা সম্পদ, তাই হয়তো পরবর্তীকালের সমাপ্তির ইঙ্গিত— ‘আপনা মাংসে হরিণী বৈরি’। হাসদেও অরণ্যের নিচেই রাখা দেশের অন্যতম বৃহৎ কয়লা রিজার্ভ হাসদেও ১,৮৭৯.৬ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে থাকা অঞ্চলে ২৩টি কোল ব্লক দিয়ে চিহ্নিত ৫.৬ বিলিয়ন টন কয়লার আশ্চর্য সঞ্চয়, যার ভেতর এখনও অবধি প্রমাণিত রিজার্ভের পরিমাণ ১.৩৬৯ বিলিয়ন টন। পাশাপাশি, গ্রহের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা উৎপাদক ও গ্রাহক ভারতবর্ষে ২০২২-২৩-এর হিসেবে উৎপাদিত মোট ৭৬১ মিলিয়ন টন কয়লা গোটা দেশের ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ একাই জোগান দিচ্ছে এবং এই কয়লার ২১ শতাংশেরও বেশি আসছে ছত্তিশগড় থেকেই।
খননের ক্রনোলজি একটু জেনে নিই। ২০১০ সালে তৎকালীন ভারত সরকার থেকে হাসদেওয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যথাক্রমে ৭৬২ ও ১,১৩৬ হেক্টর এলাকায় খননের জন্য ভার দেয় রাজস্থানের আরআরভিইউএনএল-এর মালিকানায় থাকা ১,২৫৭ হেক্টরের পারসা ইস্ট অ্যান্ড কেতে বাসান বা পিইকেবি কোলফিল্ডকে। তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রীর ক্লিয়ারেন্সের ওপর ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের সরাসরি চ্যালেঞ্জ এবং সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে থাকা গল্পের বাকিটা অংশ। এই গল্পের মাঝে নতুন টুইস্টে ঢুকে পড়েছিল আদানি এন্টারপ্রাইজ। ২০১৩-র ১৩ এপ্রিল এন্টারপ্রাইজের সাবসিডিয়ারি আদানি মাইনস রাজস্থানের পাওয়ার কোম্পানির থেকে চুক্তিতে খনির ৪৫০ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব পায়।
২০২২। মার্চ ও এপ্রিলে পিইকেবি-র দ্বিতীয় দফার ড্রাফট পরিকল্পনাকে ছত্তিশগড় সরকার মঞ্জুর করে খনি উত্তোলনে গ্রিন সিগন্যাল দেয়, যার জন্য ‘কোল্যাটারাল ড্যামেজ’ হিসেবে গাছ কাটা হতে পারে প্রায় ২,৪২,৬৭০, যা ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্টের কমিউনিটি ফরেস্ট রাইটসের তীব্র পরিপন্থী। এবং এখানেই ভারত থেকে ২০২৪-এর গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্ট পুরস্কারজয়ী অলোক শুক্লা এবং টিমের উত্থান।
২০১১-য় হাসদেও মাইনিংয়ের পরিকল্পনার কথা জেনে তখন থেকেই ছোটবড় প্রতিবাদ শুরু হয় অলোকের নেতৃত্বে। ২০১০-এ তৈরি ছত্তিশগড় বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য অলোক একটা সময়ে আন্দোলনের ফোরফ্রন্টে চলে আসেন। কৃষিকে পেশা হিসেবে দেখা পরিবারের শেকড় থেকে উঠে এসে ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন জলদূষণ, বৃক্ষচ্ছেদন, মাইনিং, জীববৈচিত্র্যসঙ্কট এবং অন্যান্য পরিবেশ-পরিপন্থী বিষয়গুলি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসংগঠিত প্রতিবাদে কাজ হত না কিছুই। ২০১০-এই হাসদেওকে ‘নো-গো এরিয়া’ বলে চিহ্নিত করে পরের বছরেই আশ্চর্য টুইস্টে অরণ্যের মধ্যে খননকাজের জন্য সক্রিয় চিন্তাভাবনা শুরু করে সরকার। চিহ্নিত ২৩টি কোলব্লকের জন্য অলোক হিসেব করে দেখলেন অরণ্যের ভেতর ১৫০ লাখ একর জায়গা সঙ্কটে পড়ছে, কাটা হচ্ছে অসংখ্য গাছ। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলেন, সামান্য কিছু অবগতির বাইরে প্রায় ৩০টি গ্রামের আগাম উচ্ছেদ ও অরণ্য ধ্বংস সম্পর্কে প্রায় কোনও খবরই রাখছেন না কেউই। এবং এখানেই বদল দরকার। ২০১২-য় ২০-২৫টি গ্রামের এক বিরাট সংখ্যক আদিবাসী অংশকে একত্রিত করে প্রতিষ্ঠিত হয় হাসদেও অরণ্য বাঁচাও কমিটি, যার নেতৃত্বে অলোক। ২০১৪-য় তিনটি কোম্পানিকে মাইনিং গ্র্যান্ট দেওয়া, ‘নো গো’ সিদ্ধান্ত ক্রমশ লঘু করতে করতে একসময় পুরোপুরি উঠিয়ে দেওয়া— রাষ্ট্র বাকি রাখেনি কিছুই। ক্রমশ ২০২০-র জুন। সরকারের আরও অনেকগুলি নিলাম। অবশ্য এই সময় ২০১৪-র একটি ল্যান্ডমার্ক সুপ্রিম কোর্ট রায়ে দেশের ২০৪টি কোলব্লকের কাজ বাতিল করার সিদ্ধান্তের অন্যতম অংশ হাসদেও অঞ্চলের ২০টি ব্লক। হাসদেও বাঁচাও কমিটির লাগাতার আন্দোলনে পিকেবিই ব্লকের বাইরে আর নতুন কোনও খনি স্থাপনের পথ আপাত বন্ধ হয়ে গেল। আবার টার্ন। ২০২০-র ডিসেম্বরে একটি বড়সড় নিলামে প্রায় জরুরি ধারা জারি করে ২১টি কোলব্লকের কাজ অতি দ্রুত শুরু করার পরামর্শ দেয় সরকার। এবং ঠিক এইসময়ই কোভিড অতিমারি। তবু, থেমে থাকলে চলবে! কারণ অরণ্য ধ্বংসের কাজ অতিমারি, অসুখেই অতি দ্রুত সেরে ফেলতে চায় রাষ্ট্র। ২১টি কোলব্লক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২০-র জুন থেকেই গণ-প্রতিরোধ শুরু করে অলোকের টিম। সে-বছর অক্টোবরে গ্রামের লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে একটি গণ-সমাবেশ এবং ধর্নায় হাসদেওয়ের ৯,৪৫,০০০ একর অংশকে ‘লেমরু এলিফ্যান্ট রিজার্ভ’ হিসেবে চিহ্নিত করে পরিকল্পিত কোলব্লকের বাইরে রাখার সুপারিশ করে প্রতিবাদী গোষ্ঠী। এই দাবি খুব তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই রিজার্ভ অংশেই ছিল প্রস্তাবিত ১৪টি কোলব্লকের অবস্থান। ক্রমশ নিরন্তর প্রতিবাদে সেপ্টেম্বরেই অবশ্য গণ-নিলাম থেকে তিনটি কোল মাইনের সিদ্ধান্ত তুলে নিয়েছিল সরকার। ২০২১-এর অক্টোবরে রায়পুরে ৫০০ গ্রামবাসীকে নিয়ে অলোকের নেতৃত্বে ১০ দিনের ১৬৬ মাইল প্রতিবাদ ম্যারাথনের ফলে সেই রিজার্ভ অন্তর্ভুক্ত ১৪টি মাইনের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। আপাত জয় পায় দরিদ্র ভারত, অরণ্য ভারত। অবশ্য তার ঠিক পরেই ২০২১-এর আরেক টার্ন। সেপ্টেম্বরে ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং অক্টোবরে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেস্ট্রি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনের পরপর দুটি অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট জমা হয় কেন্দ্র সরকারের কাছে। প্রথমটিতে হাসদেও অঞ্চলকে অত্যন্ত সেনসিটিভ বলে কোনওরকম মাইনিং না করতে সতর্কতা জারি করা হয়। দ্বিতীয় রিপোর্টে পরিবেশগত ভারসাম্যের কথা বলেও চারটি মাইনিংয়ের আশ্চর্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এবং কেন্দ্র সরকার থেকে প্রথমটিকে চেপে দিয়ে দ্বিতীয়টিকে একক মান্যতা দিয়ে পজিটিভ রিপোর্ট হিসেবে দেখিয়ে ফ্রেশ ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয় হাসদেও অঞ্চলে। অলোক বলছেন, কয়লা মন্ত্রকের থেকে দেশের খোদ পরিবেশ মন্ত্রক ‘ডেভেলপমেন্ট’-এর প্রতি বেশি নজর দেখালে তার কারণ খুব সুস্পষ্ট হয়। এবং বিশেষ কোনও গোষ্ঠী সেই উন্নয়নের অন্যতম স্টেকহোল্ডার হলে, সে কারণটি আরও সুস্পষ্টতর হয়ে ওঠে স্বাভাবিকভাবেই।
২০২২। দেশের পরিবেশ-লেখচিত্রের অনিশ্চিত ওঠানামার কোনও বদল নেই। রাজ্য সরকার থেকেই আবার দ্বিতীয় দফার কাজের জন্য নতুন করে সুপারিশ। নতুন করে আরও ৩০০টি গাছ কাটার ঘটনার পর হাসদেও অরণ্য বাঁচাও কমিটি থেকে টানা ধর্না এবং বিশনয়-চিপকো-আপিকো ঘরানার ‘গাছ জড়িয়ে ধরো’ আন্দোলন। অলোকের নেতৃত্বে রাজ্য এবং কেন্দ্রে একাধিক বৈঠক, সম্মেলন, প্রচারমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ার হ্যাশট্যাগ আন্দোলন, চিঠি, পিটিশন, গ্রামসভার পর গ্রামসভা, প্রোটেস্ট মার্চ— পরিণতিতে ২০২২-এর জুলাই স্টেট লেজিসলেচার থেকে মাইনিং-বিরোধী রেজোল্যুশন পাশ করে এবং সমগ্র হাসদেও অরণ্যভুক্ত অঞ্চলে মাইনিং নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। সে-মাসেই রাজ্য সরকার থেকে ২১টি কোলব্লক সরকারি ঘোষণা করে তুলে নেওয়া হয় হাসদেও থেকে। অলোকের কথায়, ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ এটি। অবশ্য প্রতিবাদ, রেজোল্যুশন সত্ত্বেও একাধিক বাতিল কোল-ব্লকে চোরাগোপ্তা মাইনিং চলছে। পারসা ব্লকে জাঁকিয়ে বসেছে মাইনিংয়ের কাজ। উচ্ছেদ হতে চলেছে অন্তত তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। প্রতিবাদ ৭৭০ দিনে পড়েছে। সম্পূর্ণ হাসদেও অরণ্যে খননের ভাবনা উঠিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত কাজ থামাচ্ছেন না অলোক শুক্লা।
অলোক বলছেন, সরকার হোক বা কর্পোরেট হোক, প্রতিবাদীদের সঙ্গে সেই একই ক্রনোলজি আক্রমণ চলতে থাকে— প্রথমে ওরা তোমাকে বোঝাতে আসবে, তারপর লোভনীয় কিছু দেওয়ার মুখবন্ধ ব্যবস্থা করবে, একটা সময় হুমকি দেবে এবং শেষে শারীরিক, মানসিক নানারকম আক্রমণের পথ বাছবে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যে-কোনও আন্দোলনকে বিদেশি স্পনসর্ড, বহিরাগত ইত্যাদি বলে দাগিয়ে দেওয়ার বিষাক্ত পদ্ধতিও নতুন নয়। এবং এখানে যেহেতু সরকার-কর্পোরেট একসঙ্গেই আছে, ফলত আক্রমণের তীব্রতাও অনেক বেশি। বারবার আন্দোলন থেমে গেছে, মুখ বন্ধ হয়ে নতুন কোনও মোড় বেছে ঘোরাতে হয়েছে গতিপথ।
পড়ুন, ইলেকশন এক্সপ্রেস ২০২৪
ঠিক কোথায় স্বতন্ত্র হাসদেও কমিটির আন্দোলন? ঠিক কোথায় কোথায় পাথেয় হবে ভবিষ্যতের অন্যান্য আদিবাসী পরিবেশ-আন্দোলনের ক্ষেত্রে? অলোকের মতে আসল মাস্টারস্ট্রোক আইনের পথে হাঁটা। স্লোগান, ধর্নায় কিছুই হবে না যদি না সে আন্দোলন সুস্পষ্ট আইন দেখিয়ে চোখে চোখ রেখে কথা বলবে সরকারের সঙ্গে। স্লোগান দমন করা যায়, আইনি আন্দোলনে শক্তিশালী রাষ্ট্রও পিছু হটবে। ঠিক যেমন হাসদেওয়ের ক্ষেত্রে Provisions of the Panchayets (Extension to Scheduled Areas) Act (PESA), Forest Rights Act বা Land Acquisition Act ইত্যাদি অস্ত্র হিসেবে ছিল আদিবাসীদের। যদিও আইনের লুপহোল খুঁজতে উঠেপড়ে লেগেছিল সরকার-কর্পোরেট। ২০১৪ সালে যখন কোলব্লকের কাজ শুরু করা হয়েছিল, হাসদেও গ্রামসভা থেকে একাধিক প্রতিবাদে বলা হল পেসা অ্যাক্টের কথা। হাসদেও সংবিধানের পঞ্চম সিডিউলে পড়ছে এবং পেসা আইন অনুযায়ী গ্রামসভাকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়া আছে। ঠিক উল্টোদিকে, Coal Bearing Act দেখিয়ে পেসা আইনের ধারাগুলি কয়লাখনি অঞ্চলগুলির ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না বলে দাবি করেছিল রাষ্ট্র। কিন্তু সংবিধান? তার ওপরে কে? ঠিক এই দিকটিই অস্ত্র করে অলোকের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়। গোল্ডম্যান প্রাইজজয়ী মনে করছেন, এই পুরস্কার শুধুমাত্র অলোক শুক্লার পুরস্কার না, পুরস্কার বারো বছর ধরে কাজ করা গোটা হাসদেও অরণ্য বাঁচাও কমিটির প্রত্যেকের, এবং এর বাইরেও সামনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা সামান্য হলেও এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন, তাঁরাও এই পুরস্কারের ভাগীদার।
হাসদেও অরণ্য বাঁচাও কমিটির আদিবাসীরা আন্দোলন থেকে আসছেন না। সভ্যতার আদিপর্ব থেকে আদিবাসীরাই অরণ্যের কাস্টডিয়ান। অরণ্যেই তাঁদের সমস্ত প্রাপ্য অধিকার। যদি সেই অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়ার খেলা জারি থাকে, তাহলে প্রতিবাদও জারি থাকবে। প্রতিবাদ চলবেই…
ঋণস্বীকার
- Alam, Mohammad Sartaj. In lush, ancient Chattisgarh forest, thousands of trees cut to mine coal for Rajasthan, THREATENING Adivasi homes, water, livelihoods. Article 14. February 19, 2024.
- Gandhi, Divya. ‘The Hasdeo movement is a model of resistance’: Alok Shukla. Frontline. April 30, 2024.
- Ghai, Rajat. Alok Shukla wins Goldman Prize or ‘Green Nobel’ for Hasdeo Aranya campaign. Down to Earth. April 30, 2024.
- Gupta, Priyanshu. How Delhi & Raipur Ignored Expert Warnings To Clear Coal Mine In Vast Chhattisgarh Forest. December 16, 2021. Article 14.
- Pal, Sumedha. Why Adivasis of Hasdeo Aranya are back on the streets, again. Behan Box. January 9, 2024.
- Sirur, Simrin. [Interview] “This is in honour of adivasis fighting for their land, water, forest,” says Goldman Prize winner Alok Shukla. Mongabay. April 30, 2024.
- 2024 Goldman Prize Winner Alok Shukla. goldmanprize.com.