দেবাশিস মিথিয়া
বাজেটে সাধারণের আয় বাড়ানোর যেমন দিশা নেই তেমন নেই খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোরও। ভারতে প্রতিটি পরিবার তাদের আয়ের ৫০ শতাংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করে। দরিদ্র জনগণের ক্ষেত্রে তা ৬০ শতাংশ। নিম্ন আয়ের মানুষ তাঁদের আয়ের বেশি অংশ যদি খাদ্যদ্রব্য কিনতেই ব্যয় করেন তাহলে শিল্পদ্রব্যের চাহিদা আসবে কোথা থেকে? খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি শিল্পদ্রব্যের কার্যকরী চাহিদাকে কমিয়ে দেয়। কৃষির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ। ফলে অর্থনীতির কার্যকরী চাহিদার অনেকটাই কৃষিনির্ভর। কৃষকের আর্থিক অনটন বাজার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই বাজেটে কৃষকদের আয়ের দিকটিও অবহেলিত থেকেছে। কার্যকরী চাহিদার এই ঘাটতি শিল্পে বিনিয়োগ কমাবে। কমিয়ে দেবে কর্মসংস্থান। অধরা থেকে যাবে জিডিপি বৃদ্ধির স্বপ্নও
বাজেট হল, নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে সরকারের প্রত্যাশিত আয় এবং ব্যয়ের রূপরেখা। অন্যভাবে বললে, বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে এবং কর্মসূচিতে সরকার যে অর্থ বরাদ্দ করে তার একটি সুসংহত পরিকল্পনাই হল বাজেট। বাজেটের দুটি খাত, রাজস্ব খাত এবং মূলধনী খাত। সরকারের যে-লেনদেনগুলি ভবিষ্যৎ আয়-ব্যয়ের সঙ্গে যুক্ত সেগুলি মূলধনী খাতে যায়, বাকি আয়-ব্যয় যায় রাজস্ব খাতে। বাজেট সাধারণত তিন ধরনের— রাজস্ব আদায় ব্যয়ের সমান হলে তা সুষম বাজেট। যদি ব্যয় রাজস্ব আদায়ের থেকে কম হয় তাহলে তা উদ্বৃত্ত বাজেট। উল্টো ক্ষেত্রে অর্থাৎ ব্যয় রাজস্বকে ছাড়িয়ে গেলে তখন ঘাটতি বাজেট। এ হল বাজেটের সাধারণ ধারণা।
যে-কোনও অর্থনীতির বিশেষ কতকগুলি জায়গা রয়েছে, বাজেটে সেগুলিতে গুরুত্ব না দিয়ে সরকারের উপায় থাকে না। গুরুত্বের বিচারে সবার আগে থাকে জিডিপি-র বৃদ্ধি যা অর্থনৈতিক বিকাশের প্রাথমিক শর্ত। সেই বৃদ্ধির হার বাড়াতে হলে প্রয়োজন অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রের অগ্রগতি। নচেৎ জিডিপির বৃদ্ধি থমকে যাবে। অর্থাৎ জিডিপির বৃদ্ধি ঘটিয়ে দেশের উন্নতিতে দরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নতি, শিল্পের উন্নতি। দরকার সেবাক্ষেত্রের রমরমা। তবে, জিডিপি-র বৃদ্ধি অর্থনৈতিক বিকাশের সূচক হলেও উন্নয়নের নির্দেশক নয়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও কিছু দাবি করে। তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আয়ের সুষম বণ্টন। ২০২৩ সালের শেষে দেখা গেছে বর্তমান ভারতে ১ শতাংশ ধনী লোকের হাতে রয়েছে দেশের মোট সম্পদের ৪০.১ শতাংশ। সেখানে দেশের ৫০ শতাংশ জনগণ মাত্র ৩ শতাংশ সম্পদের মালিক। আয়ের এই বৈষম্য ক্রমশ বেড়েছে। তা কমানো জরুরি। উন্নয়নের অপর দুটি উপাংশ দারিদ্র্য দূরীকরণ ও কাজের সুযোগ তৈরি করা। দেশে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কম-বেশি ৮.৭০ শতাংশ হয়ে আছে। দামস্তর বৃদ্ধি পেলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের দুর্দশা সবচেয়ে বেশি। তাদের খাদ্যের সংস্থান করতে নাভিশ্বাস ওঠে। যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মহিলাদের ক্ষমতায়নের সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাকেও অবহেলা করা যায় না। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে চর্চিত বিষয় হল জলবায়ু পরিবর্তন। ভারতকেও সেই সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর বাইরেও রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিষয়।
গতকাল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে মোদি-৩ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন। গোটা দেশের দৃষ্টি ছিল সেদিকে। তবে এবারের পরিস্থিতি গতবারের তুলনায় আলাদা। গত বাজেট ছিল নির্বাচনমুখী, ফলে জনগণকে খুশি করার একটা বাধ্যবাধকতা থেকে গিয়েছিল। এ-বছর পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। সবে নির্বাচন শেষ হয়ে দেশে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আশা ছিল দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রী কিছু সাহসী পদক্ষেপ নেবেন।
বাজেটে তা দেখা গেল না। যা হল, কিছু কথার কারিকুরি আর সরকার বাঁচানোর মরিয়া প্রচেষ্টা। মোদি-৩ সরকারের অক্সিজেন নীতিশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুকে খুশি করতে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বাজেটে ঢালাও সুযোগসুবিধা। অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করতে গিয়ে বলেন— ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্ন পূরণ করতে সরকার নয়টি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন— কৃষি, কর্মসংস্থান, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, উত্পাদন এবং পরিষেবা, নগর উন্নয়ন, শক্তি, পরিকাঠামো, উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন এবং পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কার। বাজেট পেশের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বলেন দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং খাদ্যদ্রব্যের যথেষ্ট জোগান আছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে খাদ্যদ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে কেন? এ-বিষয়ে বাজেটে পরিষ্কার দিশা থাকা উচিত ছিল। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য আর মানুষের অভিজ্ঞতাতে বিস্তর ফারাক।
নয়টি অগ্রাধিকারের প্রথমটি কৃষি। বাজেটে কৃষির বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ ৫২ হাজার কোটি। কৃষি গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং জলবায়ু-সহনশীল ফসলগুলির বিকাশের উপর নজর দিতে কৃষি-গবেষণা সেটআপের বিস্তৃত পর্যালোচনা করার কথা বলা হয়েছে। ডাল ও তৈলবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য সরকার তাদের উৎপাদন, মজুত ও বিপণন জোরদার করবে। সরিষা, চিনাবাদাম, তিল, সয়াবিন এবং সূর্যমুখীর মতো তৈলবীজে আত্মনির্ভরতা অর্জনের জন্য একটি কৌশল তৈরি করা হচ্ছে। আগামী দু-বছরের মধ্যে সারা দেশের ১ কোটি চাষিকে প্রাকৃতিক চাষিতে রূপান্তরিত করা হবে। ফসল সংরক্ষণ, কৃষি সমবায় গঠনেও জোর দেওয়া হয়েছে। মূলত কৃষির প্রযুক্তিগত ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেওয়া হল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় এবারের বাজেট জায়গা পেল না। এক, কৃষির উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যসুরক্ষা যা এই মুহূর্তে দেশের কাছে জরুরি। জনগণের নজর ঘোরাতে তিনি যোগ করলেন ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হল এবং শোনালেন, এতে দেশের ৮0 কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। দুই, ফসলের সঠিক দাম নিশ্চিত করে কৃষকের আয় বৃদ্ধি। উল্টে তিনি জোরের সঙ্গে বলেছেন সরকার চাষের উৎপাদন ব্যয়ের উপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত চাপিয়ে সব ফসলের এমএসপি ঘোষণা করেছে। আমজনতা জানে না এমএসপি নির্ধারণে হিসেবের মারপ্যাঁচের কথা। আশা ছিল স্বামীনাথন কমিটির রির্পোট অনুযায়ী এমএসপি দেওয়া হবে, এমনটা অন্তত অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করবেন।
কৃষি ছাড়া আর কোথায় কোথায় অর্থমন্ত্রী গুরুত্ব দিলেন একনজরে দেখে নেওয়া যাক:
- কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য তিনটি নতুন স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে, সরকার আগামী পাঁচ বছরে ৪ কোটি চাকরি সৃষ্টির জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে এবং ৫০০টি শীর্ষ কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ প্রদানের জন্য একটি বৃহৎ স্কিম চালু করা হয়েছে।
- পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকার ১০০টি শহরে বা কাছাকাছি অঞ্চলে শিল্প পার্ক গড়ে তুলবে। বিহারে মোট ২৬০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হবে। এছাড়াও ওই রাজ্যে বিদ্যুৎপ্রকল্প, নতুন বিমানবন্দর, মেডিকেল কলেজ এবং ক্রীড়া পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
- মহিলাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রকল্প গৃহীত হবে তার জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাদের বেশি করে কাজের বাজারে আনতে হোস্টেল ও মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করা হবে।
- পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে এমএসএমই ক্রেডিটের একটি নতুন মূল্যায়ন মডেল চালু করা হয়েছে এবং এমএসএমই-গুলির জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করা হবে৷ স্ব-রোজগার প্রকল্পকে উৎসাহ দিতে ‘মুদ্রা যোজনা’-র অধীনে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ করে ২০ লক্ষ টাকা করা হবে।
- যে-সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা এখনও কোনও সরকারি স্কিম থেকে উপকৃত হয়নি তারা গার্হস্থ্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা ঋণ পাবে। প্রতি বছর ১ লক্ষ শিক্ষার্থীকে ঋণের পরিমাণের উপর ৩ শতাংশ সুদ ছাড়ের ই-ভাউচারগুলি সরাসরি প্রদান করা হবে।
- ২০২৫ অর্থিক বছরের জন্য রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্য স্থির হয়েছে জিডিপি-র ৪.৯ শতাংশ, পরের বছর এটিকে ৪.৫ শতাংশের নিচে নামানো হবে।
- মূলধন লাভের কর আরোপ করা হবে যুক্তিযুক্ত এবং সরলীকৃত। স্বল্পমেয়াদি মূলধন লাভের উপর ২০ শতাংশ কর ধার্য করা হবে, এবং কিছু সম্পত্তির জন্য দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভের উপর ১২.৫ শতাংশ কর ধার্য করা হবে।
- মধ্যবিত্তদের সাহায্য করার জন্য আয়কর আইন ১৯৬১-র একটি ব্যাপক পর্যালোচনা করা হবে। নতুন ব্যবস্থার অধীনে ট্যাক্স স্ল্যাবগুলি সংশোধন করা হয়েছে এবং বেতনভোগী কর্মচারীদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ৫০০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫০০০ টাকা করা হয়েছে।
এ-পর্যন্ত বাজেটে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষের আয় বাড়ানোর কোনও দিশা নেই। ট্যাক্স-কাঠামোতে একটু সাহসী পরিবর্তন করতে পারলে অর্থনীতির অনেকটা উপকার হত। উচ্চ আয়সম্পন্ন মানুষ যারা আয়কর দেওয়ার নিরিখে উপরের দিকে অবস্থান করেন তাঁদের আয়করের হার একটু বাড়িয়ে, তুলনায় কম আয়ের মানুষ যারা আয়কর দানের নিরিখে নিচের দিকে অবস্থান করেন তাঁদের আয়করের ছাড় একটু বেশি দিলে আয়-বৈষম্য কিছুটা কমানো যেত। কম আয়কর দেওয়া মানুষ একটু বেশি ছাড় পেলে অর্থনীতিতে কার্যকরী চাহিদা অনেকটা বাড়ে। তার মূল কারণ এই মানুষদের ভোগপ্রবণতা উচ্চবিত্তের ভোগপ্রবণতার চেয়ে অনেক বেশি। কার্যকরী চাহিদা কী? ‘পণ্য ও পরিষেবার পরিমাণ’, যা ভোক্তারা একটি নির্দিষ্ট মূল্যস্তরে ক্রয় করতে ইচ্ছুক এবং সক্ষম। যখন কার্যকরী চাহিদা বৃদ্ধি পায়, অর্থনীতিতে উৎপাদন বাড়ে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, বিনিয়োগ বাড়ে এবং জিডিপি-র বৃদ্ধি ঘটে।
বাজেটে সাধারণের আয় বাড়ানোর যেমন দিশা নেই তেমন নেই খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোরও। ভারতে প্রতিটি পরিবার তাদের আয়ের ৫০ শতাংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করে। দরিদ্র জনগণের ক্ষেত্রে তা ৬০ শতাংশ। নিম্ন আয়ের মানুষ তাঁদের আয়ের বেশি অংশ যদি খাদ্যদ্রব্য কিনতেই ব্যয় করেন তাহলে শিল্পদ্রব্যের চাহিদা আসবে কোথা থেকে? খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি শিল্পদ্রব্যের কার্যকরী চাহিদাকে কমিয়ে দেয়। কৃষির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ। ফলে অর্থনীতির কার্যকরী চাহিদার অনেকটাই কৃষিনির্ভর। কৃষকের আর্থিক অনটন বাজার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই বাজেটে কৃষকদের আয়ের দিকটিও অবহেলিত থেকেছে। কার্যকরী চাহিদার এই ঘাটতি শিল্পে বিনিয়োগ কমাবে। কমিয়ে দেবে কর্মসংস্থান। অধরা থেকে যাবে জিডিপি বৃদ্ধির স্বপ্নও।
বিজেপি নির্বাচনী ইশতেহারে জানিয়েছিল ক্ষমতায় ফিরলে—
- ভারতীয় অর্থনীতিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করা হবে।
- মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করবে এবং ভারতের অর্থনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।
- করদাতারা অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই তাদের বাড়তি সম্মান দেবে।
জিডিপির বৃদ্ধি ঘটিয়ে ভারতীয় অর্থনীতিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করতে হলে দরকার পরিকাঠামোর উন্নয়ন। প্রয়োজন মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ানো। বাজেটে আশানুরূপ বৃদ্ধি ঘটল কই? যদিও সংখ্যার বিচারে বেড়েছে। যা গতবারের তুলনায় মাত্র ১১ শতাংশ বেশি। গত বাজেটে মূলধনী খাতে ব্যয় বেড়েছিল ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ৩৭.৪ শতাংশ। এ থেকে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই পরিষ্কার। বাজেটে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোর কোনও ইঙ্গিত নেই। করদাতাদের সম্মান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি যদি স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনে মাত্র ২৫০০০ টাকার ছাড় হয় তাহলে বলার কিছু নেই! এই ছাড় অর্থনীতিতে খুব একটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের সদিচ্ছা তাদের সরকারের বাজেটে প্রতিফলিত হল না। এ-কথা বলাই যায়, প্রতিশ্রুতিভঙ্গের মধ্যে দিয়ে শুরু হল মোদি-৩ সরকারের বাজেটযাত্রা।
*মতামত ব্যক্তিগত