খালি পায়ের রূপকথা

বৈদূর্য্য সরকার

 


১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাশ করে তরুণ নায়ার মাদ্রাজ মেলে চড়ে এসে পৌঁছেছিলেন কলকাতায়। তখনও কলকাতায় কাজের সুযোগসুবিধা যথেষ্ট ছিল ধরে নেওয়া যায়। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি পাশ করেন। শোনা যায় প্রথমে টাইপিস্টের কাজ শুরু করেছিলেন, মাইনে ছিল ১২৫ টাকা। ধরে নেওয়া যায় তখন কলকাতা আজকের মতো নিস্তরঙ্গ নয়— সে ফুটছে রাগে উত্তেজনায় রাজনৈতিক আন্দোলনে। তবু আশ্চর্য এই কেরল থেকে আসা তরুণটি মেতে উঠল তখনকার ভাইব্র্যান্ট কলকাতায় নয় বরং তার অনেক আগের প্রাচীন কলকাতার তত্ত্বতালাশ করতে। সে-কাজে নায়ার কাটিয়ে দিলেন জীবনের অধিকাংশ। দীর্ঘ ষাট-সত্তর বছর

 

গত কয়েক দশকে কসমোপলিটন কলকাতা অনেক কিছু হারিয়েছে। তার মধ্যে সাম্প্রতিক বলা যায় পিটি নায়ারের প্রয়াণকে। ৯১ বছর বয়সে কেরলে আলুভায় পিটি নায়ারের মৃত্যুর সময় কলকাতায় একটি মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছিল ধরে নেওয়া যায়। কেননা তাঁর পা বরাবর ছিল কলকাতার মাটিতেই পোঁতা। খালি পায়ের ঐতিহাসিক হিসেবে পরিচিত তাঁর নাম লোকে শুনে আসছে কম করে পঞ্চাশ বছর ধরে। তবে প্রকাশকরা তাঁর ব্যাপারে কতটা বদান্যতা দেখিয়েছেন তাতে সন্দেহ হতেই পারে। কলকাতার ইতিহাস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সরকারি চাকরির সুযোগ পর্যন্ত ছেড়েছিলেন অবলীলায়। বলা যায় বরণ করেছিলেন কষ্টের বা দারিদ্র্যের জীবন। সম্বল বলতে প্রাচীন এক টাইপরাইটার এবং প্রচুর বইপত্র। বইপত্রের বাইরে তাঁর জীবনে কিছু ছিল না বলে শোনা যায়। ইন্টারনেট রেডিও টিভি আড্ডা ইত্যাদিকে অবহেলা করে বেঁচে ছিলেন শেষপর্যন্ত। বরাবর ছিলেন ভবানীপুরে কাঁসারিপাড়া লেনে নিজের একচিলতে বাসস্থানে। সেখান থেকে রোজ হেঁটে যেতেন ন্যাশানাল লাইব্রেরিতে। কয়েক দশক। শহরের অলিগলি লাইব্রেরি আর্কাইভ ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে তার ক্রসচেক করতেন।

১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাশ করে তরুণ নায়ার মাদ্রাজ মেলে চড়ে এসে পৌঁছেছিলেন কলকাতায়। তখনও কলকাতায় কাজের সুযোগসুবিধা যথেষ্ট ছিল ধরে নেওয়া যায়। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি পাশ করেন। শোনা যায় প্রথমে টাইপিস্টের কাজ শুরু করেছিলেন, মাইনে ছিল ১২৫ টাকা। ধরে নেওয়া যায় তখন কলকাতা আজকের মতো নিস্তরঙ্গ নয়— সে ফুটছে রাগে উত্তেজনায় রাজনৈতিক আন্দোলনে। তবু আশ্চর্য এই কেরল থেকে আসা তরুণটি মেতে উঠল তখনকার ভাইব্র্যান্ট কলকাতায় নয় বরং তার অনেক আগের প্রাচীন কলকাতার তত্ত্বতালাশ করতে। সে-কাজে নায়ার কাটিয়ে দিলেন জীবনের অধিকাংশ। দীর্ঘ ষাট-সত্তর বছর। শুনলে অবাক হতে হয়, কেননা এত দীর্ঘদিন ধরে কোনও একটা বিষয় নিয়ে পড়ে থাকার উদাহরণ আমাদের দেশে খুব বেশি নেই। তবে যে-কথা উল্লেখ না করলে নয়, নায়ারের আগ্রহ মূলত ব্রিটিশ রাজধানী ও উপনিবেশ নিয়ে। তার আগেকার রহস্যময়ী কলকাতার অস্তিত্ব বোধহয় অনেক ইউরোপীয় ঐতিহাসিকের মতো তিনি মানতে পারতেন না। সে-জন্যে বাঙালিদের কথা না ভেবে সরাইখানা থেকে হোটেল, আদালত থেকে পুলিশ বা দক্ষিণ ভারতীয়দের কলকাতায় থাকার ব্যাপারে বিস্তারিত লিখে গেছেন নায়ার। তাতে গ্রন্থসংখ্যা ৬২ ছুঁয়েছে। গান্ধিজির কলকাতায় অবস্থান সংক্রান্ত শেষ গ্রন্থটির (গান্ধিজি ইন ক্যালকাটা) প্রুফ পর্যন্ত কলকাতায় বসে শেষ করে তিনি জীবনের শেষ কটা দিনের জন্যে পাড়ি দিয়েছিলেন ফেলে আসা কেরলে চন্দ্রমঙ্গলমের ছোট্ট গ্রামের উদ্দেশ্যে (২০১৮ খ্রিস্টাব্দ)। সম্ভবত পরিবারের লোকেদের অনুরোধেই। তার আগে অতীতের কলকাতাকে ভালবেসেই বোধহয় জীবন কাটিয়েছিলেন। যথেষ্ট রোজগার না থেকেও কীভাবে যে কলকাতায় ভিড়ে মিশে জীবন কাটিয়েছেন তা ভাবলে অবাক হতে হয় নিশ্চিত। স্ত্রী স্কুলের শিক্ষিকা হওয়ায় পারিবারিক দিক থেকে খানিকটা স্বস্তি ছিল তাঁর। সে-জন্যেই বোধহয় সতেরো-আঠারো শতকের বিভিন্ন রিপোর্ট স্মৃতিকথা ভ্রমণবৃত্তান্তে ডুবে থাকতে পেরেছিলেন।

তাঁর লেখায় ইংরেজি সাহিত্যের মান খুব সাধারণ হলেও তাতে তথ্য থাকত প্রচুর। ইংরেজি ছাড়া মালয়ালমে তিনি কিছু লিখেছিলেন। কিন্তু এতদিন কলকাতায় থেকেও বাংলা নিয়ে আগ্রহ দেখাননি বিশেষ। বলা যায়, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন ক্যালকাটা ইন দ্য সেভেন্টিন্থ সেঞ্চুরি (১৯৮৬ খ্রিঃ) এবং ক্যালকাটা ইন দ্য এইটটিন্থ সেঞ্চুরি (১৯৮৪ খ্রিঃ) বইদুটোতে। নায়ার যে লেখক বা গবেষক তার সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি পড়ুয়া। কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার সময় আটশো বই বিনামূল্যে কলকাতার টাউন হল সোসাইটিতে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তার আগে (১৯৯৯ খ্রিঃ) তার সাত হাজার বই কলকাতা কর্পোরেশন দশ লক্ষ টাকায় কিনে নেয়। শোনা যায় তার জন্যে অক্সফোর্ড তাঁকে ব্ল্যাঙ্ক চেক অফার করেছিল। তিনি সম্ভবত তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কলকাতাকে ভালবাসার টানেই। সে ভালবাসা থেকেই কলকাতার অলিগলি বা রাস্তা ধরে গোটা শহরটা পাঠককে খুঁজতে শিখিয়েছিলেন তিনি। তার ‘আ হিস্ট্রি অফ ক্যালকাটা স্ট্রিটস’ বইটি সে হিসেবে অনন্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে তাতে নানা অসঙ্গতি থেকে গেছে আঞ্চলিক বাংলা ভাষা তিনি সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি বলে। যদিও এই কাজে যে মৌলিকত্ব দেখিয়েছেন তাতে মুগ্ধ হতে হয়।

 

একইভাবে কলকাতার ট্রাম থেকে কলকাতা পুলিশবিভাগ নিয়ে বই লিখে গেছেন তিনি। কলকাতার ৩০০ বছর উপলক্ষে ‘ক্যালকাটা টারসেন্টেনারি বিবলিওগ্রাফি’ তিনি প্রকাশ করেছিলেন এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে। কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরির ১৭৫তম বছরে ন্যাশানাল লাইব্রেরি অফ ইন্ডিয়া থেকে কলকাতা হেরিটেজ বিবলিওগ্রাফি শিরোনামে তা বেরোয়। পনেরোটি অধ্যায়ে নায়ারের উদ্যোগে জনসংখ্যা মানচিত্র খাদ্য পানীয় সাহিত্য ইত্যাদির ওপর প্রকাশনার দীর্ঘ তালিকা পাওয়া যায়। তবে ব্যাপার ওই ব্রিটিশদের তৈরি করা তিনশো বছরের মিথ মানে ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে জোব চার্নকের কলকাতায় আগমন ও শহর প্রতিষ্ঠার সূত্রে আটকে ছিলেন তিনি (Job Charnock: The Founder of Calcutta: an Anthology (1990))। তবে তাতে তাঁকে আলাদা করে দোষারোপ করা যায় না, বহু বাঙালি আজও তাই বিশ্বাস করে মহামান্য হাইকোর্টের উল্লেখযোগ্য রায়ের পরেও।

 

কলকাতার বাঙালি ঐতিহাসিকদের তাঁর সম্বন্ধে খানিকটা অবহেলা ছিল বলা চলে। অনেকে বলে থাকেন সরকারি নানা ইনফরমেশন তিনি পেয়েছিলেন কর্পোরেশনে ওপরের দিকে চাকরি করা এক মামার সাহায্যে। তবু প্রায় স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠা একজনের কলকাতার ইতিহাসবিদ হয়ে ওঠার কাহিনি নিঃসন্দেহে উদ্দীপক বলা যেতে পারে। তবে তাঁকে নিয়ে ইতিহাসে আগ্রহী বাঙালির বেশ খানিকটা অস্বস্তি থেকে গেছে বলা চলে। সে-জন্যেই হয়তো প্রকাশকরা তাঁর বই আজকাল পুনর্মুদ্রণ বা সংরক্ষণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখান না। তবে ছোট পরিসরে হলেও মৃত্যুর পর ৪ জুলাই তাঁর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে টাউন হলে। আয়োজন করেছিল পুরনো কলকাতার গল্প সোসাইটি।

 

কলকাতা শহর সম্বন্ধে কৌতূহলের জন্যে তাঁকে বলা হত ‘ওয়াকিং টকিং হিস্ট্রি ম্যান’। যদিও তাঁর লেখা ৬২টি বইয়ের সবকটির হদিস পর্যন্ত মেলে না আজ পর্যন্ত। সে-জন্যেই পাঠকদের জন্যে উল্লেখযোগ্য বইগুলোর নাম শেষে দেওয়া থাকল আগ্রহীদের জন্যে। হারিয়ে যাওয়া বইয়ের মতো তাঁর দুর্ভাগ্যের ব্যাপার— নায়ারের দীর্ঘ জীবনে সম্মান বা পুরস্কার খুব বেশি জোটেনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট বা এশিয়াটিক সোসাইটির সিনিয়র গবেষক ছাড়া স্বীকৃতি মেলেনি তেমন কিছু। মধ্য-পঞ্চাশে পৌঁছে এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলোশিপ পাওয়ার পরে নির্দিষ্ট উপার্জনের পথ তৈরি হলেও তার আগের এতগুলো বছর কীভাবে বেঁচেছিলেন ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। স্বপাক আহার করে অন্যান্য ক্ষেত্রে ন্যূনতম খরচ করে যে তিনি নিরলস গবেষণা চালিয়ে গেছেন সে-ব্যাপারে তাঁকে ঋষিতুল্য বলা যায়। দুধছাড়া কফি ও সিগারেট ছাড়া তাঁর বিলাসিতা কিছুমাত্র ছিল না জানা যায়। সেজন্যেই হয়তো বইয়ের রয়্যালিটি নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। ছোট প্রকাশককে দিয়ে বই করাতেন ও নিজে বিক্রির উদ্যোগ নিতেন। তবে ন্যাশনাল লাইব্রেরি বা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধের কারণে ক্লাসিফায়েড ডকুমেন্ট না পাওয়ায় বিরক্ত নায়ার গেছিলেন অনেকদূর। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু নাকি তাঁকে দেখে অবাক হয়ে বলেছিলেন, এত বই লিখেছেন আপনি!

 

যে-সময়ে নায়ার কাজ শুরু করেছিলেন অনেকে তখন মনে করতেন ব্রিটিশ কলকাতার ইতিহাস খুঁজে পেতে লন্ডনের লাইব্রেরিগুলোয় ঢুঁ মারতে হয়। নায়ারের সে উপায় ছিল না। বদলে সতেরো-আঠেরো শতকের কলকাতা-বিষয়ক উল্লেখযোগ্য নথি খুঁজে বের করেছেন তিনি কলকাতায় বসেই। সে-জন্যেই হয়তো তিনি পূর্ববর্তী বাঙালি ঐতিহাসিকদের কাজকে বিশেষ গুরুত্ব দেননি। হয়তো কলকাতার ইতিহাসের ক্ষেত্রে ইংরেজি সোর্সগুলো যে অনাঘ্রাত থেকে গেছে তাই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। ফলে প্রথাগত বা অ্যাকাডেমিক ইতিহাসচর্চার সঙ্গে তার একটা দূরত্ব থেকে গেছে চিরকাল। ইংরেজদের গেজেট বা তথ্য পরিসংখ্যানগুলো কিংবা ছবি অথবা প্রবন্ধ নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তাঁর নিজস্ব কলকাতার ইতিহাস। বলা যায়, কটনের বই কলকাতার গাইডবুককে অনুসরণ করেছিলেন নায়ার। তাই কলকাতার সম্বন্ধে বিদেশে বেরোনো প্রবন্ধগুলো খোঁজ করতেন লাইব্রেরির জার্নাল সেকশানে বসে। তার মতো সকাল নটা থেকে সারাদিন লাইব্রেরিতে কাটানোর প্রক্রিয়াও আজকাল আর দেখা যায় না বলা বাহুল্য। বলা যায়, অনেক নামজাদা ঐতিহাসিকের পরেও তিনি লিখতে চেয়েছিলেন কলকাতার নিজস্ব ইতিহাস। বলা যায় অকৃত্রিম ভালবাসাই ছিল তাঁর মূলধন। ভাবা যেতে পারে বুড়ি হয়ে যাওয়া তিলোত্তমার এমন একনিষ্ঠ প্রেমিক খুব বেশি জোটেনি।

তাঁর পেশা নেশা শয়ন জাগরণ বলতে ছিল দুষ্প্রাপ্য বই এবং তার থেকে গড়গড় করে বলে দেওয়া তথ্য। তবে মুখস্থবিদ্যা নয় সাধনা বলা যায় সেটাকে। কেরলের মফস্বলের এক মুদি দোকানির পুত্রের এহেন সিদ্ধি আগামীর কলকাতার ইতিহাসের দিকচিহ্ন হয়ে থাকবে বলা যায়।

আগ্রহীদের জন্যে নায়ারের উল্লেখযোগ্য কাজ:

  • First Circulating and College Libraries of Calcutta (2012)
  • Kalakātā āche kalakātātei (in Bengali) (2009)
  • Origin of the Kolkata Police (2007)
  • B.S. Kesavan: First National Librarian of India (2005)
  • South Indians in Kolkata: History of Kannadigas, Konkanis, Malayalees, Tamilians, Telugus, South Indian Dishes and Tippoo Sultan’s Heirs in Calcutta (2004)
  • John Alexander Chapman: Selections from the Works of a Lover of India (2004)
  • Echoes from Belvedere: Home of National Library, Kolkata (2004)
  • Hicky and his Gazette (2001)
  • The Mango in Indian Life and Culture (1995)
  • Calcutta Tercentenary Bibliography Volumes 1 & 2 (1993)
  • British Beginnings in Bengal, 1600-1660 (1991)
  • James Prinsep: Life and Work – Volume 1 (1991)
  • Job Charnock: The Founder of Calcutta: an Anthology (1990)
  • Calcutta Bevy: A Collection of Rare Poems (1989)
  • Calcutta Municipal Corporation at a Glance (1989)
  • Indian National Songs and Symbols (1987)
  • A History of Calcutta’s Streets (1987)
  • A History of the Calcutta Press, the Beginnings (1987)
  • Rainey’s a Historical and Topographical Sketch of Calcutta (edited work of H. James Rainey) (1986)
  • Calcutta in the Seventeenth Century (1986)
  • Calcutta: Origin of the Name (1985)
  • Bruton’s Visit to Lord Jagannatha 350 years ago (edited work of William Bruton) (1985)
  • Tribes of Arunachal Pradesh (1985)
  • Calcutta in the 18th Century (1984)
  • British Social Life in Ancient Calcutta: 1750 to 1850 (1983)
  • Marriage and Dowry in India (1978)
  • The Peacock: The National Bird of India (1977)

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4861 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...