কমরেড প্রেসিডেন্ট? শ্রীলঙ্কায় পরিবর্তন এবং ধারাবাহিকতা

বালাসিঙ্ঘম স্কান্থাকুমার

 


২০২৪-এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০২২-এর গণ-অভ্যুত্থানকেই প্রতিফলিত করেছে। শ্রীলঙ্কায় প্রকৃতই কোনও প্রগতিশীল পরিবর্তন ঘটবে কি না তা নির্ভর করবে আগামী কয়েক মাসের রাজনৈতিক এবং সামাজিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর। বিশেষ করে নির্ভর করবে শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রাম এবং তাঁদের সংগঠনগুলি তন্দ্রা কাটিয়ে জেগে উঠছে কিনা তার ওপর

 

মধ্য-বামপন্থী ন্যাশনাল পিপল’স পাওয়ার (এনপিপি) জোটের প্রার্থী হিসেবে গত ২১ সেপ্টেম্বর অনুরা কুমারা দিসানায়েকে-র জয় প্রতীকী এবং বস্তুগত, দু-দিক দিয়েই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর পূর্বসূরিরা সকলেই সামাজিক এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের প্রতিনিধি ছিলেন, এবং শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮-এ ব্রিটেনের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার পর তাঁরা দেশকে অপশাসনই উপহার দিয়ে গেছেন। অনেকে জন্মসূত্রেই অভিজাতদের প্রতিনিধি ছিলেন, আর দুজন— রণসিঙ্ঘে প্রেমদাসা এবং মৈথ্রিপালা সিরিসেনা— রাজনীতির কারবারের মধ্যে দিয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই অভিজাত-কুলে উন্নীত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, দিসানায়েকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে একজন বহিরাগতই, সেইসঙ্গে তিনি এই অভিজাতদের একজন সমালোচকও বটে।

নতুন প্রেসিডেন্ট প্রকৃতপক্ষে জমি-বুভুক্ষু উচ্চভূমির এক গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। নিজেদের জীবন একটু উন্নত করবার আকাঙ্ক্ষায় অন্য অনেকের মতো তাঁরাও সেচের আওতায় থাকা উত্তর-মধ্যাঞ্চলের শুষ্ক অঞ্চলে চলে আসেন। তাঁর বাবা ছিলেন এক সরকারি দফতরের নিচুস্তরের কর্মী, আর তাঁর মা নিজেদের সামান্য ধানজমি দেখাশোনা করার পাশাপাশি একটা বড়সড় পরিবারের দায়ভার সামলাতেন। দিসানায়েকেই তাঁদের পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ মাড়িয়েছেন— এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।

১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে তিনি কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তৎকালীন নিষিদ্ধ ‘জনতা বিমুক্তি পেরামুনা’ (জেভিপি— পিপল’স লিবারেশন ফ্রন্ট)-র একজন ছাত্র কর্মী ছিলেন। এই দলটি ১৯৮৩ সালে দক্ষিণপন্থী ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির শাসনকালে নিষিদ্ধ হয় এবং ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৯-এর মধ্যে তাদের দ্বিতীয় রাষ্ট্রবিরোধী অভ্যুত্থানের সময়ে ব্যাপক দমনপীড়নের শিকার হয়।[1] তারপর পার্টির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে তিনি একজন সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী হয়ে ওঠেন এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে দলটিকে পুনর্গঠন করা শুরু করেন। শ্রীলঙ্কার গল-সদৃশ ব্যবস্থার মধ্যে তাঁর মতো একজনের রাষ্ট্র এবং সরকারের প্রধান নির্বাচিত হওয়া— যিনি কিনা একদিকে শোষিত এবং প্রান্তিক শ্রেণি থেকে উঠে এসেছেন আবার অন্যদিকে একটি প্রাক্তন মার্কসবাদী-লেনিনবাদী পার্টির নেতা ছিলেন— ছাঁচ ভেঙে ফেলার নিদর্শন তো বটেই।

 

পরিবর্তনের প্রতিনিধি

যদিও দিসানায়েকে কোনও সমাজতান্ত্রিক বা পুঁজিবাদ-বিরোধী অবস্থান থেকে তাঁর প্রচার চালাননি। বরং তাঁর প্রচারের মূল বক্তব্য ছিল দেশে কয়েক দশক ধরে চলা এক অবক্ষয়িত রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। শ্রেণি, লিঙ্গ, জাতি, অঞ্চল-নির্বিশেষে শ্রীলঙ্কার জনগণ এই রাজনৈতিক সংস্কৃতিকেই ২০২১-২২-এর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের[2] জন্য দায়ী করেন। যে-বিপর্যয়ের কারণে শ্রীলঙ্কা তার সেই সময়কার ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় এবং দেশে এক সর্বাঙ্গীন দেউলিয়া পরিস্থিতি নেমে আসে।

কেমন সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি? রাজনৈতিক নেতারা হচ্ছেন প্রভু। তাঁরা ভোটের সময় মানুষকে সরাসরি সুযোগসুবিধা বা নগদ অর্থ দিয়ে ভোট কিনবেন; সরকারি বিভিন্ন চুক্তির মধ্যে দিয়ে মুনাফা করবেন; অন্য রাজনৈতিক দল, স্থানীয় বা বিদেশি ব্যবসায়ীদের থেকে ঘুষ নেবেন; সরকারি এবং বৈদেশিক টেন্ডার এবং চুক্তিগুলিতে তাঁদের সরাসরি হস্তক্ষেপ থাকবে; এবং তাঁরা যেসব অপকর্ম এবং অপরাধ করে বেড়াবেন তার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত, সাজা, কয়েদ কিছুই হবে না। দিসানায়েকেকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, এবং যাঁরা দেননি তাঁদের মধ্যেও অনেক মানুষই তাঁর ওপর এই আশা রাখেন যে তাঁর সরকার এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাবে।

২০২২-এর গণ-আন্দোলন[3], যা ‘জনথা আরাগালয়া’ (সিংহলি জনতার সংগ্রাম) নামে পরিচিত, তার মনোভাব এটাই। সেই আন্দোলন ক্ষণস্থায়ী হলেও তাতে এনপিপি-র জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বলে রাখা দরকার, ২০১৯ সালে জেভিপি তাদের শ্রেণিভিত্তিকে বামপন্থী পেটিবুর্জোয়া এবং শ্রমিকশ্রেণির বাইরে রক্ষণশীলদের মধ্যেও প্রসারিত করার লক্ষ্যে এই জোট তৈরি করেছিল। সেই আন্দোলন থেকে প্রাপ্ত জনসমর্থনই আজকে দিসানায়েকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ সুগম করেছে।

দিসানায়েকের পার্টি এতদিন মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলির বাইরেই থেকে এসেছে। ফলে তাদের গায়ে কলঙ্কের ছিটে লাগেনি, এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি-বিরোধিতাকেই তাদের কেন্দ্রীয় স্লোগান হিসেবে ধরে রেখেছে। তাই যাঁরা “পরিবর্তন” চাইছিলেন কিন্তু সে পরিবর্তন কেমন হবে সে-বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না, তাঁদের সমর্থন তাঁর দলের দিকেই গেছে। তাঁরা খুব সঠিকভাবেই বাকি দুই মূলধারার দক্ষিণপন্থী জোট-প্রার্থীকে বর্জন করেছেন। এই জোট দুটি গড়ে উঠেছিল একটি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘেকে কেন্দ্র করে এবং অপরটি সংসদীয় বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসাকে কেন্দ্র করে।

সরকার গঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখনও না-হলেও, এনপিপি এবার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। সংখ্যার হিসেবে ৫.৬ মিলিয়নেরও বেশি এবং শতাংশের হিসেবে ৪২ শতাংশ। ২২টি নির্বাচনী জেলার মধ্যে ১৫টিতেই তারা এগিয়ে, এর বাইরেও রয়েছে মধ্য, পূর্ব এবং উত্তরাঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তা-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলি। তাদের ভোট-ভিত্তি এতদিন ছিল সংখ্যাগুরু সিংহলিরাই, যারা দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ। কিন্তু এবার দেখা গেল সংখ্যালঘু মুসলিম এবং তামিল জনগোষ্ঠীর মধ্যেও তারা তাদের গণভিত্তি প্রসারিত করেছে, বিশেষত এইসব সম্প্রদায়ের যুবাদের মধ্যে।

২২৫ আসনবিশিষ্ট আইনসভায় এনপিপি-র সদস্যসংখ্যা মাত্র ৩। ফলে দিসানায়েকের মন্ত্রিসভা সম্ভবত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মন্ত্রিসভা হতে চলেছে। তাঁর প্রথম কাজগুলির মধ্যে একটি অবশ্যই হবে সংবিধান-সম্মতভাবেই সংসদ ভেঙে দেওয়া। সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ১৪ নভেম্বর এবং নতুন সংসদের অধিবেশন বসবে তার এক সপ্তাহ পর। সরকার গড়তে এনপিপি-র ১১৩টি আসন দরকার। রাষ্ট্রপতিত্ব জেতার চেয়ে এটি নিঃসন্দেহে কঠিনতর চ্যালেঞ্জ।

তাদের সমর্থকরা যেমন প্রত্যাশা করে রয়েছেন, এনপিপি সরকার তেমনভাবে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে পারবে, নাকি এই রাজনৈতিক সংস্কৃতিই ধীরে ধীরে তাদের গ্রাস করে নেবে, যেমন নিয়েছিল তাদের একদা-প্রতিপক্ষ প্রাক্তন-ট্রটস্কিবাদী লঙ্কা সম সমাজ পার্টি এবং শ্রীলঙ্কার কমিউনিস্ট পার্টি-র মতো পুরনো বামপন্থীদের— এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

 

ধনীদের জন্য স্থিতাবস্থা

রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের সরকার, যা তিনি রাজাপক্ষ-পন্থীদের এবং বিরোধীদের কিছু অংশের সঙ্গে মিলে বানিয়েছিলেন, অর্থবানদের জন্য অর্থনীতিকে থিতু করতে এবং তাকে বৃদ্ধির রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছিল।[4] গত মাসে মুদ্রাস্ফীতি কমে ০.৫ শতাংশ হয়েছে। ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিনিময় হার বেড়ে মার্কিন ডলারের প্রেক্ষিতে এলকেআর৩০০-তে পৌঁছেছে। এ-বছর জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রায় ৪ শতাংশ হওয়ার কথা।

গরিবরা ধনীদের মতোই আর জ্বালানি, খাদ্য বা ওষুধের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে না, কারণ ধনীদের মতো তাদের এগুলি কেনার পয়সাই নেই। বিদ্যুতের দাম ১৪০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পর থেকে আর কোনও পাওয়ার-কাট হয়নি; কিন্তু গত বছর বিদ্যুতের বিল না মেটাতে পারার জন্য এক মিলিয়ন পরিবারের বিদ্যুৎ-সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হানা শুরু হওয়ার পর থেকে খাবারের দাম গড়ে তিনগুণ বেড়েছে, ২০২২-এর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে টাকার দাম হু হু করে পড়ে গিয়েছিল, যার ফলে ২৪ শতাংশ পরিবারের খাদ্য-নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। প্রতি চারটি পরিবারের একটি সরকারি দারিদ্র্যসীমার নিচে।

২০২৩-এর মার্চে শ্রীলঙ্কা আইএমএফ-এর সঙ্গে তাদের ১৭তম ঋণচুক্তিতে প্রবেশ করে। এই ঋণ নেওয়া শুরু হয়েছিল ১৯৬৫-তে। চার বছর ধরে মোট ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পাওয়া যাবে যা আসবে বছরে দুবার করে যদি শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক কাঠামো সংস্কারে আইএমএফ-এর বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে পারে।

যে-লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে হবে সেগুলি হল:

  • ২০২৫-এর মধ্যে প্রাথমিক বাজেট-উদ্বৃত্ত (সরকারের ব্যয়ের ওপর রাজস্ব আদায়) জিডিপি-র ২.৩ শতাংশ হতে হবে।
  • সরকারের ঋণগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ২০২৭ থেকে ২০৩২-এর মধ্যে জিডিপির ১৩ শতাংশে কমিয়ে আনতে হবে।
  • জিডিপি-র সাপেক্ষে সরকারি ঋণের অনুপাত ২০৩২ সালের মধ্যে ৯৫ শতাংশে কমিয়ে আনতে হবে।

ধরা যাক এই সব লক্ষ্যগুলিই পূরণ হল— সরকারি ব্যয় কমানোর যা যা সামাজিক এবং রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে সেগুলি দেওয়া হল, কর্মসংস্থান এবং মানুষের আয় বাড়ানোর জন্য সরকারি উদ্যোগ যা-সব নিতে হয় সে-সবের প্রতিও চোখ বুজে থাকা হল— তাতেও ২০২৭-এ শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের বোঝার পরিমাণ হবে ২০২৩-এরও বেশি, এবং সেই সময় নাগাদ কেবল বৈদেশিক ঋণ পরিশোধেই ব্যয়িত হবে দেশের জিডিপির ৩০ শতাংশ।[5] এই হিসাব মার্কিন রাজস্ববিভাগের এক প্রাক্তন অধিকর্তার, যাঁর ভবিষ্যদ্বাণী— শ্রীলঙ্কার আরেকটি সর্বাঙ্গীণ ঋণ-খেলাপ এক অনিবার্যতা মাত্র।

আইএমএফ প্রোগ্রাম যে-সব কাঠামোগত সংস্কারের কথা বলেছে, এবং রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও নাগরিক সমাজ থেকে যেগুলি উদ্বাহু সমর্থন পেয়েছে, সেগুলি হল:

  • পরোক্ষ কর বাড়াতে হবে। স্বভাবতই ধনীদের চেয়ে এর প্রভাব অনেক বেশি পড়বে গরিবদের ওপর।
  • ব্যাঙ্কের সুদের হার বাড়াতে হবে। এর ফলে ব্যাঙ্ক-ঋণ নেওয়া আরও ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে উঠবে। যার ফল ভুগতে হবে মাইক্রো এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলিকে।
  • ঘরোয়া ঋণ-কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে। সরকারি অবসরকালীন ফান্ডই হল এই ক্ষেত্রটির মূল বিনিয়োগকারী। তাঁদের অন্তিম প্রাপ্তিতে বড়সড় ঘাটতি হবে।
  • সরকারি কর্মী ছাঁটাই করে সরকারের ব্যয় কমাতে হবে। এতে সরকারি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আরও কমবে এবং বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি সস্তায় আরও কর্মী নেওয়ার সুযোগ পাবে।
  • পরিবহন এবং রান্নার জন্য জ্বালানি এবং বিদ্যুতের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে দিতে হবে। ফলে সবাইকেই এগুলি বাজারদরে কিনতে হবে।
  • ’সামাজিক নিরাপত্তা’ দেওয়ার জন্য সামাজিক সুরক্ষা-ব্যবস্থাগুলিকে উঠিয়ে দিতে হবে। তার পরিবর্তে আয় এবং সম্পদ অনুসারে কিছু গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে সাহায্য দিতে হবে।
  • লেবার কোডে বিনিয়ন্ত্রণমূলক সংশোধনী এনে লেবার মার্কেট শিথিল করে দিতে হবে।
  • কৃষিজমিগুলিকে বাণিজ্যিক ফসল চাষের উপযোগী বড় জোতে রূপান্তরিত করতে হবে। এর ফলে যেসব ক্ষুদ্র কৃষকরা এখন নিজেদের ছোট ছোট জমিতে খাদ্যশস্য চাষ করেন কোপ পড়বে তাদের ওপর।
  • সরকারের পুঁজিনিবিড় প্রকল্পগুলি বন্ধ করতে হবে। যার প্রভাব পড়বে সরকারি পরিকাঠামো, জনগণের জন্য দেয় সরকারি পরিষেবা, নির্মাণশিল্প এবং কর্মসংস্থানের ওপর।

 

আইএমএফ চুক্তি এবং অর্থনৈতিক ঝোঁক

ন্যাশনাল পিপল’স পাওয়ার জোটের প্রধান শক্তি জেভিপি-র উত্থান ১৯৬০-এর দশকের বিপ্লবী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। প্রথম থেকেই তারা গুয়েভারাবাদ এবং মাওবাদে বিশ্বাসী একটি বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল হিসেবে পরিচিত। অতএব, ঐতিহাসিকভাবেই তারা সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্কের মতো ব্রেটন উডস ইনস্টিটিশনগুলির প্রতি বিক্ষুব্ধ মনোভাবাপন্ন।

১৯৯৪-নাগাদ জেভিপি সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করে। সেই সময়ের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিতটা ছিল এরকম— ইউরোপের ‘সমাজতান্ত্রিক’ ব্লকের পতন ঘটছে; সমাজতন্ত্র যে পুঁজিবাদের একটা সার্থক বিকল্প সে-নিয়ে মানুষের মনে সংশয় দেখা দিচ্ছে; চিন বিকল্প বাজার অর্থনীতির মডেল আনার কথা বলে ব্যক্তি-পুঁজিকে উৎসাহ দিচ্ছে এবং বিশ্ব-পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় নিজেদের সামিল করে নিচ্ছে। জেভিপি-ও সে-সময় থেকেই অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রধান মডেল হিসেবে মিশ্র অর্থনীতিকে গ্রহণ করতে শুরু করে। সম্প্রতি তারা ভিয়েতনামের সাফল্যে অনুপ্রাণিত এবং তাদেরকেই অনুসরণ করতে চায়।

এনপিপি-জেভিপি যদিও নয়া-উদারিকরণের সমর্থক নয়, কিন্তু তারা যে এর কট্টর বিরোধী এমনটাও নয়। তাদের ২০২৪-এর ভোটপ্রচার, ইস্তেহার এবং নীতিমালা দেখলে সেটাই মালুম হয়। আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল এনপিপি যে আইএমএফ-এর সঙ্গে চলতি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসবে না, সে-নিয়ে তারা আগেই অঙ্গীকার করেছিল, এবং নতুন প্রেসিডেন্ট জাতির উদ্দেশে তাঁর প্রথম ভাষণে সেই কথার পুনরুক্তি করেছেন। তিনি আগেও বলেছিলেন যে এই চুক্তি সুষ্ঠুভাবে পূরণ করা উচিত, এবং এখন তো এই চুক্তিপূরণ সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই নতুন কোনও ঋণগ্রহণের পূর্বশর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, দিসানায়েকের হাত বাঁধা এবং এই দুটি কাজই ঠিকভাবে করার জন্য তাঁর উপর জনগণের প্রত্যাশাও বর্তমান।

এনপিপি বরং বলেছে তারা আইএমএফ-এর ঋণ-স্থায়িত্বের মূল্যায়নটি আবার খতিয়ে দেখবে। এই মূল্যায়নেই আইএমএফ-এর নীতিগত শর্তগুলির— যার মধ্যে অনেক কঠোর ব্যবস্থাও পড়ে— পেছনের যুক্তিবিন্যাসটি পাওয়া যায়। নতুন সরকার বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব দেবে। যেমন— গরিব এবং নিম্ন-মধ্যবিত্তদের ওপর করের বোঝা কমানো; অ-সামরিক সরকারি সংস্থাগুলি বিক্রি করা হলেও অন্যগুলির মধ্যে কিছু সংস্থা সরকারের হাতে রেখে দেওয়া (এদের মধ্যে বেশ কিছু সংস্থায় জেভিপি-র শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে); সরকারের ব্যয় যুক্তিসিদ্ধভাবে পুনর্বিন্যস্ত করে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা; এবং দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমদানি-ব্যয় কমানো ও রফতানি-আয় বাড়ানো, যাতে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার স্ফীত হবে।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে এনপিপি এ-ও বলেছে যে তারা সমস্ত বৈদেশিক ঋণের একটা “ফরেনসিক অডিট” করাবে। যার অর্থ, তারা মনে করছে যে ঋণের কিছু অংশ অন্তত ন্যক্কারজনক এবং অবৈধ— দেশের জনগণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই জাতীয় ঋণের বোঝা বইতে দেওয়ার কোনও মানে হয় না।

এনপিপি বারংবার আইএমএফ-চুক্তির প্রতি দায়বদ্ধতার কথা ঘোষণা করেছে।[6] এর কারণ, অংশত, দেশের নীতিনির্ধারক প্রতিষ্ঠানগুলি এবং জনগণের একটা বড় অংশ যে ভয় পাচ্ছে, যে আইএমএফ-এর সঙ্গে চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে এলে অন্যান্য বৈদেশিক ঋণদাতারা আশঙ্কিত হবে এবং যার ফলে দেশে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে যাবে— সেই ভয়কে প্রশমিত করা। এবং এর মাধ্যমে জেভিপি শ্রীলঙ্কার মধ্যে এবং বহির্বিশ্বে এই বার্তাও দিতে চায় যে তারা বিপ্লবী নয়, বরং ‘দায়িত্বশীল’; গোঁড়া নয়, বরং বাস্তববাদী।

এনপিপি মুক্ত বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং রফতানিমুখিনতারও সমর্থক। তারা বেসরকারি স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা পরিষেবাকেও বন্ধ করতে চায় না। তারা শুধু ব্যবহারকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দেশের উৎপাদন বাড়িয়ে (অর্থাৎ নাম না করে আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে), সরকারি সংস্থাগুলির বেসকারিকরণের বিরোধিতা করে, এবং সামাজিক কর্মসূচিগুলিকে বিস্তৃত করে ও বয়স্ক, পেনশনার, যুবতী মা এবং বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ও ক্রনিক অসুস্থতাসম্পন্ন মানুষদের জন্য বাজেট-বরাদ্দের ব্যবস্থা করে তারা নয়া-উদারনীতিকে ব্যালেন্স করতে চায়।

সামরিক বাজেট, যা জাতীয় বাজেটের ৭ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাখাতে মোট বাজেট-বরাদ্দের প্রায় সমান, সে-সম্পর্কে পদক্ষেপ নিতেও এনপিপি-কে সতর্ক থাকতে হবে। এই কেলেঙ্কারিটি রাজনৈতিকভাবে অলঙ্ঘনীয়, কারণ ১৯৮৩ থেকে ২০০৯— এই প্রায় তিন দশকের গৃহযুদ্ধের সময়ের পুরোটাতেই সিংহল ন্যাশনালিস্ট স্টেট জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টিকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে হাজির করে এসেছে। এনপিপি যে সম্পদ এবং আয়ের পুনর্বণ্টনের কথা বলছে, তা নেহাতই চাপা স্বরে, এ-ব্যাপারে যে-শ্রেণিগুলির সম্মতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাদের যেন কোনও অস্বস্তি না হয় তেমন করে।

যেটা জানা নেই সেটা হল— আইএমএফ যখন বরাবরের মতো এবারও জোর দিয়ে জানাবে যে তাদের ঋণ-স্থায়িত্বের মূল্যায়ন পদ্ধতিগতভাবে একদম ত্রুটিমুক্ত, এবং তাদের প্রোগ্রাম এতটাই নিখুঁতভাবে বানানো যে তাতে আর উন্নতিরও কোনও অবকাশ নেই, তখন সরকার পিছু হটবে নাকি।

সরকারের যেসব আর্থিক ব্যয়ের পরিকল্পনা বা প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার জন্য সরকারকে বিনিয়োগ করতে হবে। আইএমএফ-এর এই চুক্তিতে বাঁধা থেকে সেটা কেমন করে সম্ভব হবে? নতুন সরকার যাতে এইরকম একটা অবস্থায় আটকা পড়ে সেইজন্য পূর্বতন সরকার তাড়াহুড়ো করে এই চুক্তিতে ঢুকে পড়েছিল। নতুন সরকার কি ঋণের ক্ষেত্রে আরও যদি বেশি কিছু সুযোগসুবিধা পাওয়া যায়, এক কথায় এই চুক্তির থেকে যদি কোনও ভাল চুক্তি সম্ভব হয় সেই লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং বাণিজ্যিক ঋণদাতাদের সঙ্গে কথাবার্তা পুনরায় শুরু করবে? কথাবার্তাগুলি কিন্তু বন্ধই হয়ে রয়েছে কেবল, একেবারে শেষ করে দেওয়া হয়নি।

আইএমএফ-এর যে প্রাথমিক বাজেট-উদ্বৃত্ত এবং জিডিপি-র সাপেক্ষে ঋণের অনুপাতের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেগুলি নয়, বরং এই অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং সে-জন্য নেওয়া কঠোর পদক্ষেপগুলি যাঁদের সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় ফেলেছে তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনীতির এমনভাবে বৃদ্ধি ঘটানো যাতে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের উপকারে আসে— এটাকেই যে তারা প্রাধান্য দিতে চায় এ-কথা কি তারা আইএমএফ এবং অন্য ঋণদাতাদের বলবে? এ-ও কি বলবে যে যে-সব দ্বিপাক্ষিক এবং বাণিজ্যিক ঋণ পরিশোধ বাকি রয়ে গেছে সেগুলি তারা আবার ২০২৭-এর পর থেকে শুরু করতে চায়?

 

সংখ্যালঘু প্রশ্ন

২০২২-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে শ্রীলঙ্কায় জাতিগত উত্তেজনা অনেক হ্রাস পেয়েছে। জাতি এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে ভেদাভেদ তৈরি করা ক্ষয়িষ্ণু ‘অভিজাত’ এবং তাদের নির্মিত ‘ব্যবস্থা’রই একটি কৌশল। গণ-অভ্যুত্থানটি যেহেতু পরিচালিত হয়েছিল তাদেরই বিরুদ্ধে ফলে জনগণের ঐক্যবদ্ধ রূপ দেখানোর একটা সচেতন প্রয়াস ছিল তখন। ২০২৪-এর ভোটপ্রচার যে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ছিল শুধু তা-ই নয়, প্রধান প্রার্থীরা কেউই জাতিগত এবং ধর্মীয় উত্তেজনায় (যেগুলি অবশ্যই এখনও বিদ্যমান) ইন্ধন দিতেও চেষ্টা করেননি।

এনপিপি বর্ণবাদী নয়। খুব বেশি সংখ্যায় না হলেও তাদের সদস্য এবং নেতৃত্বের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তামিলদের, পার্বত্য অঞ্চলের তামিলদের এবং মুসলিমদের (এরা শ্রীলঙ্কার এক ধর্মীয় সংখ্যালঘু জাতিসত্তা) মতো সংখ্যালঘু জাতিসত্তার প্রতিনিধিদের দেখতে পাওয়া যায়।

এনপিপি-র ইস্তেহারে উত্তর-পূর্বের সঙ্ঘাত-দীর্ণ অঞ্চলের তামিলদের গুরুতর কিছু দাবির কথা মাথায় রেখে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। যেমন— সন্ত্রাস-বিরোধী আইন তুলে নেওয়া হবে এবং রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে; নিরুদ্দিষ্টদের পরিবারকে সত্য জানানো হবে এবং ন্যায়বিচার দেওয়া হবে; সরকারি ভাষা আইনের কার্যকরী প্রয়োগ করে তামিল ভাষাভাষীদের জন্য সরকারি চাকরির সুযোগ তৈরি করা হবে; বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য প্রভিনশিয়াল কাউন্সিল সিস্টেম-কে পুনরায় কার্যকরী করা হবে; পার্বত্য অঞ্চলের তামিলদের (চা-শ্রমিক এবং তাদের উত্তরসূরিরা) বাড়ি, জমি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক বিষয়গুলির প্রতি যথাযথ যত্ন নেওয়া হবে; ইত্যাদি। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতিগুলির বেশিরভাগই ফাঁপা এবং সেগুলি পূরণের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমাও বলা হয়নি।

জেভিপি-এনপিপি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ব্যক্তিদের এবং বৌদ্ধ যাজকদের সংগঠিত করে নিজেদের সমর্থক বানিয়েছে। এই দুটি গোষ্ঠীই কিন্তু যুদ্ধাপরাধের জন্য সামরিক বাহিনির বিরুদ্ধে কোনওরকম তদন্তের ঘোরতর বিরোধী। শ্রীলঙ্কা ইউনিটারি স্টেট থেকে একটি ফেডারেল স্টেট হয়ে উঠুক এটাও তারা চায় না। ভোট প্রচারে নতুন প্রেসিডেন্ট পরিষ্কারভাবে জানিয়েছিলেন সংবিধানে বৌদ্ধ ধর্মকে যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা প্রায় দেশের জাতীয় ধর্মের কাছাকাছি, তা অলঙ্ঘনীয়। অবশ্য তিনি সঙ্গে সঙ্গে এ-ও আশ্বাস দিয়েছেন যে খ্রিস্টান, মুসলিম এবং হিন্দুরা যাতে তাঁদের বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্মাচরণ করতে পারে রাষ্ট্র সেটা দেখবে।

নতুন প্রেসিডেন্ট একটি নতুন এবং গণতান্ত্রিক সংবিধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই সংবিধান প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্বমূলক একচ্ছত্র ক্ষমতার অবসান ঘটাবে, এবং সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত অঞ্চল-সহ দেশের সমস্ত অঞ্চলগুলিকেই আরও বেশি ক্ষমতা দেবে। কিন্তু নির্বাচন আর কয়েক সপ্তাহ দূরে। সেই নির্বাচনে তিনি যদি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারেন, বা অন্য দল থেকে নিজেদের সমর্থক তৈরি না করতে পারেন তবে এই কাজগুলি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না।

দিসানায়েকে এবং তাঁর পার্টি-জোট এ-বিষয়ে সম্যক অবহিত যে উত্তর-ঔপনিবেশিক শ্রীলঙ্কায় তাঁদের গণভিত্তি মুখ্যত সংখ্যাগুরু সিংহলি জনগণ। সংবিধান সংশোধন করে জাতীয় সংখ্যালঘুদের আরও বেশি অধিকার এবং রাষ্ট্রক্ষমতার অংশ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় তাঁরা সবচেয়ে ভাল অনাগ্রহী থাকতে পারেন, এবং সবচেয়ে খারাপ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারেন।

২০২৪-এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০২২-এর গণ-অভ্যুত্থানকেই প্রতিফলিত করেছে। শ্রীলঙ্কায় প্রকৃতই কোনও প্রগতিশীল পরিবর্তন ঘটবে কি না তা নির্ভর করবে আগামী কয়েক মাসের রাজনৈতিক এবং সামাজিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর। বিশেষ করে নির্ভর করবে শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রাম এবং তাঁদের সংগঠনগুলি তন্দ্রা কাটিয়ে জেগে উঠছে কিনা তার ওপর।


[1] Skanthakumar, Balasingham. People’s Liberation Front of Sri Lanka (JVP). WILEY. Apr 20, 2009.
[2] Toussaint, Eric & Skanthakumar, Balasingham. ‘The canary in the coal mine’: Sri Lanka’s crisis is a chronicle foretold. CADTM. Aug 7, 2022.
[3] Skanthakumar, Balasingham. Sri Lanka’s crisis is endgame for Rajapaksas. CADTM. Jul 11, 2022.
[4] Skanthakumar, Balasingham. The conjuncture in the crisis. POLITY.
[5] Setser, Brad W. The IMF needs to focus on setting good targets for external debt sustainability. Council on Foreign Relations. Feb 22, 2024.
[6] Alphonsus, Mimi. NPP Economic Council chief explains strategy for IMF talks. The Sunday Times. Sep 29, 2024.

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4861 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...