যে বই পড়তে চাই

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

 

কী  লেখা  পড়তে  চাই, কেমন  লেখা  পড়তে চাই  ভাবতে  বসলে… না, জ্ঞানসমুদ্রের তীরে বসে বসে নুড়ি কুড়োচ্ছি, অজ্ঞান-আমার, এই বোধ জাগে না বটে! কিন্তু একটা লাইব্রেরি রুম কিংবা গোটা একটা ওয়াল টু ওয়াল বইয়ের আলমারির (অবশ্যই বই ঠাসা) দিকে ভ্যাবলা মেরে চেয়ে আছি খুব, মনে হয়।

হা-হা! হাসি পেয়ে গেল হঠাৎ। এ লেখার সামনে তো বিপুল সম্ভাবনা, নিজের পড়ার পরিধি জানানোর। দেশি বিদেশি, সমসাময়িক শূন্যতামুখী বই কিংবা কিঞ্চিৎ উত্তর-আধুনিক হতে চেয়ে, ন্যাপথলিনের গন্ধ-ধরা দুষ্প্রাপ্য বইগুলির নেম ড্রপ করলেই তো কেল্লাফতে!

নাহ্! কালীকৃষ্ণ গুহ-র চাঁপাফুল রঙ মলাটের হস্টেল থেকে লেখা কবিতা, ভাস্কর চক্রবর্তীর একটু মেরুন-ঘেঁষা হলুদ  কভার, প্রিয় সুব্রত নামের চটি বই, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল-এর টেবিল, দূরের সন্ধ্যা, যুগান্তর চক্রবর্তীর কবিতার বই, একটু, লজ্জা-লজ্জা ভাব নিয়ে, জাঁ জেনের থিফ’স জার্নালও এই এলোমেলো তালিকায় ঢুকিয়ে, ফিরে-ফিরে পড়তে আর পড়াতে ইচ্ছে হয় সদ্য-লিখতে-আসা আত্মীয়দের।

হ্যাঁ, যাঁরা লেখেন না, পড়েন শুধু, তাঁদেরকেও।

ছোট-ছোট, চিন্তার প্রতিফলনগুলি, গদ্যে কী পদ্যে, ভোরের শিশিরবিন্দু অথবা অন্ধকার থেকে ঝরে পড়া রক্তফোঁটা, পড়তে ভালো লাগে আমার। এখনও পড়ি, বারবার পড়ি শঙ্খ ঘোষ-এর জার্নাল।

আহা! এমন বই আরেকটা লেখা হোক!

যে-লেখা, যে-বই আমাকে আক্রান্ত করে না… বুকের নীচে বালিশ গুঁজে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ব, ট্রেনে, বাসে পড়ব তারপর ফেলে রেখে উঠে যাব, ফিরেও চাইব না আর, অমন বই পড়তে চাই না আমি। আক্রমণকারী শীর্ণ বইটিই চাই আমার। চাই সে-বই, পড়া শেষে, মন আর শরীর বলবে… অসময়! তবু আবার গর্ভ হল!

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4880 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...