সৌমিত দেব
বাজারে এখন একটাই গল্প, ফাঁসি, এই থুড়ি, ফাঁসি টাসি আউটডেটেড শব্দ, টাঙ্গিয়ে দেওয়া ইজ কুল। তো বাজারে এখন হেব্বি চলছে টাঙানো উচিত না উচিত না?
যারা বিপক্ষে তাদের লেজিট লজিক। রাষ্ট্র ( শব্দটার মধ্যে একটা ব্যাপার আছে, বললেই একটা ফিল আসে) যখন জন্ম দিতে পারে না তখন সে মৃত্যুদন্ড দেয় কী করে? এতো এক প্রকারের খুন?
পক্ষে যারা বলেছেন তাদের মতে, তো বাঁ? আমার দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় ওদের পুষবে ক্যানো? আর সংশোধনাগারে বাল হয়! কারোর যে কোনো সংশোধন হয় না সে কথা আমরা বদলাপুর দেখলেই জানতে পারি।
তাহলে উপায়? সলিটারি সেলে থাকবে যদ্দিন বাঁচবে? না, ট্যাক্সের টাকা, টাঙ্গনো হোক। আছা যদ্দিন বাঁচবে এদের দিয়ে কাজ করানো হোক? রাস্তা সারাই থেকে পায়খানার ট্যাংক পরিষ্কার? না, তাহলে যারা এই কাজগুলো করে তাদের ভাত মারা যাবে। তাহলে যে পাড়া দিয়েই যাবে ছেলে বুড়ো নির্বিশেষে চাটানো হোক? এটা কী ইয়ার্কি? জ্যো…..ইয়ে মানে নির্ভয়ার সাথে কী করা হয়েছিলো আইডিয়া আছে?
না আইডিয়া নেই। থাকা সম্ভব ও না। আমার যেমন নেই ঠিক তেমনই যে টাঙানোর পক্ষে তার পক্ষেও সম্ভব না, বোঝার। তাহলে টাঙাতে চাওয়া হচ্ছে ক্যানো? কিসের উল্লাস?
হচ্ছে কারণ রোজ রোজ রোজ রোজ, সইতে সইতে সইতে আমরা ক্লান্ত। আমরা ব্যাঙ্কের টেবিল থেকে টেবিলে ঘুরতে ঘু্রতে, মর্গেও বার্থ সার্টিফিকেট দেখাতে দেখাতে, পাড়ার দাদার ফেলা বালি ডজ করে কাজে যেতে যেতে, কিছু না পারার ফ্রাট্রেশন বের করতে করতে, বেড না পেতে পেতে, মুখ বুজে থাকতে থাকতে, কুত্তার বাচ্চা ধারের টাকা শোধ দিতে দিতে, পুলিশকে ভয় পেতে পেতে, ওখান দিয়ে আসার দরকার কী ছিলো বলতে বলতে, ঘুষ দিতে দিতে আমরা ক্লান্ত।
তাই যখন আমরা দেখছি ফাইনালি রায় বেরুলো আমাদের সব ঘেঁটে যাচ্ছে, সবার আগে বোধ। আমরাও সবাই সেই গণপিটুনির মোচ্ছবে আগে মুখটা থেঁতলে দিয়ে তারপরে….
জ্যোতির সাথে যেটা হয়েছে সেটা আমার বাড়ির কারোর সাথে হলে আমি চাইতাম শুয়োরের বাচ্চাদের জনসমক্ষে বেঁধে, পাথর ছুঁড়ে মারা হোক। বা আরও খারাপ কিছু। কিন্তু তাহলেও ভুলটা ঠিক হতো না। ওটা ভুলই থাকতো।
তবে সার কথা হলো সবসে বড়া রুপাইয়া। তাই আমার ট্যাক্সের টাকা শুধু আমার। কেএফসি হলে অন্য কথা।
ফুট নোটঃ শুধুমাত্র গান্ডুবাবাচোদাদের উদ্যেশ্যে বলা। মৃত্যুদণ্ড সমর্থন না করার সাথে ধর্ষককে সিম্প্যাথাসাইজ করার কোনো যোগাযোগ নেই। মৃত্যুদন্ড সমর্থন না করলে ধর্ষনকে লঘু অপরাধ ভাবা হয় না।