তিনটি কবিতা
মরবিডিটি
কবিতা পাঠ করার সময় এই যে এক অস্থিরতা অথবা নিজের অসুস্থতা ধরা পড়ে যায় নিজের কাছেই সেসব গোপন বাক্সের ভিতর জমিয়ে রাখি। এরকম অস্থিরতা মুরগী কাটার সময় ছিটকে আসা রক্তে দেখেছিলাম। সেও এক ছটফটানি, অথচ পালাবার পথ নেই। ঠোঁটটুকু শেষবারের মত নড়ে ওঠে, চায়ের ভাঁড়টা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চুপচাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে পড়ে যায়, আমাদের ফেরার কথা ছিল। ফেরার হয়ে যাওয়ার আগে অন্তত একবার ফিরতে না পারা একরকমের বিচ্ছেদযন্ত্রণা। অথবা একরকমের যুদ্ধ। যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ছিটকে আসে একটা-দুটো গুলি, গা বাঁচিয়ে নিজেকে সরিয়ে ফেলার মতই। শুরুতে অস্বস্তির কথা বলছিলাম, মুরগীর পাঁজর থেকে উঠে আসা বিষাদ। লোকটি পাঁজর কাটছে তো, কাটছেই। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
অনুপস্থিতির শব্দ
এতদূর থেকে এই যে আমি তোমার কথা ভাবছি
আর দীর্ঘ ছায়ায় ঢেকে দিচ্ছি মাথার সিঁদুর
যা কিছু পুড়িয়ে দেবার নয়
ফেলে দিচ্ছি জলে
ভাসতে ভাসতে সেসব আটকে যাবে কোথাও,
বেশ কিছুদিন যেভাবে আটকে আছি স্রোতহীন…
রেডিও
নভেম্বর পেরিয়ে ক্রমশ শীতের দিকে ঝুঁকে পড়ছে বাড়ি।
শীর্ণকায়, ভেঙে পড়া বৃদ্ধস্য দিন-
ঈষৎ ধোঁয়াটে সকালে নিয়ম করে রেডিও শোনেন বাবা।
দাদুও শুনতেন, তারপর একদিন
জল গড়িয়ে দিলাম
হাঁ করা মুখে-
দেখেছিলাম গলার কাছে কীভাবে একটা আস্ত শীতকাল
রেডিওসমেত আটকে গেছেন দাদু
কিছুতেই বেরোতে পারছেন না নিজের কন্ঠ থেকে আর….