চারটি কবিতা
শ্রেণিসংগ্রাম
ওরা বড়লোক…
ব্রাউন পেপারের মলাট দেওয়া
খাতাপত্তর নিয়ে স্কুলে
আসত বলে,… আমরা,…
খবর কাগজের মলাট দেওয়া
বই-খাতা নিয়ে ঢুকে পড়লাম
ক্লাসে,…
আর… খবর,…
ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে…
মাদারি
এরপর শুরু হল মোমবাতির খেলা,…
একটা গোটা লোক হাপিশ হয়ে গ্যালো,… একটা গোটা গ্রাম,..
কেউ জানতে পর্যন্ত পারলো না স্যার…
কী ভোগান্তি কী ভোগান্তি, মাঝরাতে এ-ওকে ধাক্কা দিয়ে তুলে
জিগ্যেস করে – ‘তুই হারালি, না, আমি হারালুম?’…
এ ওর গায়ে হাত দিয়ে দ্যাখে – আগুন জ্বলছে কিনা!…
আর শুধু কি তাই – শাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, বেলাউজ আছে…
মাগীটাই নেই… নেই মানে নেই,.. জামার ভেতরে নেই, গেঞ্জির ভেতরে,
প্যান্টের ভেতরে… মানে স্যার, কোত্থাও নেই… তারপর
এ থানা ও থানা… এ ডায়েরি, ও ডায়েরি… তো শালা দেখি
থানাও নেই, ডায়েরি নেই, বড়বাবু, মেজবাবু, জিপ, ভ্যান,
পতাকা মতাকা কিচ্ছু নেই শুধু এই আমি আর
আপনি, পোশাক আর বাতাস..
এ-ওর গায়ে হাত দিয়ে দেখে নিচ্ছি
আগুন জ্বলছে কিনা!…
গোলামচোর
একদিন গোলামেরা বলে উঠল – ‘রানি,…
ওই রানিই সর্বনাশের মূল’,…
চাপাস্বরে এই কথা চল্লিশ কান হয়ে
ঘুরতে থাকল তাস থেকে তাসে…
রানিরা শিউরে উঠল,..
রাজারা সন্ত্রস্ত,…
টেক্কারা হেসে গড়িয়ে পড়ল হেসে…
ঝরে পড়ল ফোঁটা ফোঁটা রক্ত আর জল
তাসের প্যাকেট ফেলে শিশির বলল-‘কে আবার
আলতা ঢেলেছে রে?… নিশ্চয়ই মালতী কাকিমা,..
জোকারদের পাওয়াই যাচ্ছে না!’…
পর্ণোরেখা
একজন লেহন করছে…
অন্যজন শোষণ…
উন্মুক্ত দেহাবয়ব… পেশীর সঙ্কোচন…
ঊষ্মা এবং ত্র্যহস্পর্শ…
আকুতি আর ক্রোধ…
প্রশ্ন করে – ‘ভালবাসা কেমন প্রতিশোধ?’…
একজন দোদুল্যমান…
অন্যজন স্থাণু…
তৃষ্ণাঋত এ-ওর কাছে করুণ নতজানু…
আঁচড় কাটে,… কামড়ে ধরে…
প্রবল নীল শিরা…
প্রেমের গভীর শীর্ষ ছোঁয় মানুষ কয়েদিরা…