ক্যাপ্টেন দুপুরে ভাত খেতে গেছে আর নাবিকেরা দখল নিয়েছে জাহাজের — অষ্টম পর্ব

চার্লস বুকাওস্কি

অনুবাদ : শুভঙ্কর দাশ

সপ্তম পর্বের পর

 

১০/১৪/৯১

রাত ১২/৪৭ মিনিট

অবশ্যই ঘোড়দৌড়ের মাঠে কিছু অদ্ভুত মাল আছে। একজন প্রায় রোজ আসত মাঠে। মনে হয় ও কখনওই একটাও রেস জেতেনি। প্রতিটা রেসের পর সে আতঙ্কে চিৎকার করত জিতে যাওয়া ঘোড়াটার দিকে তাকিয়ে। ‘ওটা একটা বালের ঘোড়া!’ ও চেঁচাত। তারপর চেঁচাত এই বলে যে কী কারণে ঘোড়াটার জেতা উচিৎ নয়। প্রায় মিনিট পাঁচেক ধরে চালাত কাণ্ডটা। বেশিরভাগ সময় ঘোড়াগুলো স্কোর করত ৫-এর ভেতর ২ আর ৩-এর ভেতর ১, ৭-এর ভেতর ২। এখন ওরকম একটা ঘোড়াকে কিছু একটা করে দেখাতে হবে নইলে ব্যাপারটা আরও খারাপ দাঁড়াবে। কিন্তু এই ভদ্রলোকের কাছে এসবের কোনও মানে নেই। আর তিনি যেন না হারেন একটা ফোটো ফিনিশে। তাহলে উনি এক্কেবারে কলরব করে উঠবেন, ‘ভগবানের তোমার মুখে ল্যাওড়া শালা। উনি এটা করতে পারেন না আমার সঙ্গে!’ আমি জানি না কেন ওনাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় না।

আমি একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আচ্ছা শুনুন, এই লোকটা কী করে চালিয়ে যাচ্ছে বলুন তো?’ আমি ওনাকে লোকটার সাথে কথা বলতে দেখেছি মাঝে মাঝে।

‘ও টাকা ধার করে চালায়’, সে বলে আমায়।

‘কিন্তু টাকা ধার দেওয়ার লোক কী কম পড়ে যায় না?’

‘ও ঠিক নতুন নতুন লোক খুঁজে নেয়। আপনি কি জানেন ওর প্রিয় অভিব্যক্তি?’

‘না।’

‘সকালবেলা ব্যাঙ্ক কখন খুলবে?’

আমার মনে হয় ও শুধু থাকতে চায় ঘোড়দৌড়ের মাঠে, যে করেই হোক, ওখানে থাকতে চায়। সমানে হেরে চললেও ওখানে থাকাটা তার কাছে কিছু মানে করে নিশ্চয়ই। থাকতে হবে ওখানেই। একটা পাগলের মতো স্বপ্ন আঁকড়ে। কিন্তু ওখানে থাকাটা তো ক্লান্তিকর। জায়গাটা মার খেয়ে হাঁটু কাঁপা জায়গার মতো। সবাই ভাবছে তারাই একমাত্র জানে অ্যাঙ্গেলটা। হেরে যাওয়া বোকা বোকা ইগো। আমিও ওদের মতোই একজন। আমার জন্য ব্যাপারটা শুধু হবি। আমি তাই মনে করি। আশা করি। কিন্তু এর ভেতরে একটা ব্যাপার আছে, যদিও তা হয়তো খুব ছোট একটা সময়ের জন্য, খুব ছোট, একটা বিদ্যুৎ চমকের মতো, যখন দেখি আমার ঘোড়াটা যেটা দৌড়চ্ছে আর সেটা জিতে যায়। আমি দেখি ব্যাপারটা ঘটতে। একটা মস্তি আছে, গর্বিত উল্লম্ফন। জীবনটার প্রায় একটা মানে দাঁড়ায় যখন ঘোড়াগুলো আপনার বাজি জেতে। কিন্তু এর ভেতরের স্পেসগুলো বড় সাদামাটা। লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। তাদের বেশিরভাগটাই হেরে গেছে। তাদের ধীরে ধীরে ধুলোর মতো শুকনো লাগে। তাদের চুষে নিয়ে শুকনো করা হয়েছে। তবু যখন নিজেকে বাধ্য করি বাড়ি থাকতে বড় অবসন্ন লাগে, অসুস্থ, আমার দ্বারা কিস্যু হবে না এমন। ব্যাপারটা অদ্ভুত। রাতগুলো সব সময় ঠিকঠাক থাকে। রাতে আমি টাইপ করি। কিন্তু দিনগুলোকে তো কাটাতে হবে। বলতে গেলে আমিও তো অসুস্থ একরকম। আমি বাস্তবতার মুখোমুখি হই না। কেইবা তা হতে চায় বাঁড়া?

আমার মনে পড়ে যখন আমি এই ফিলাডেলফিয়ার বারে কাটাতাম ভোর ৫টা থেকে রাত ২টো অবধি। মনে হত ওটাই একমাত্র জায়গা যেখানে আমি থাকতে পারি। অনেক সময় মনে থাকত না কখন আমি নিজের ঘরে গেলাম আর কখনই বা ফিরে এলাম। সারাক্ষণই তো আমি রয়েছি ওই বার-টুলের উপর বসে। আমি এড়িয়ে চলেছি বাস্তবতা, আমার ভালো লাগত না ওটা।

হয়তো এই লোকটার জন্য ওই ঘোড়দৌড়ের মাঠ ছিল সেই বারের মতো যেখানে আমি কাটিয়েছি।

বেশ আপনি কিছু বলুন যা প্রয়োজনীয়। উকিল হওয়া উচিৎ? একজন ডাক্তার? একজন সরকারের লোক? ওসবই আসলে বাল। ওরা ভাবে ওটা বাল নয় কিন্তু আসলে ওটা বাল। ওরা একটা একটা সিস্টেমে বাঁধা পড়ে আছে যার থেকে ওরা ছেড়ে বেরোতে পারবে না। আর প্রায় সবাই যা করে তার জন্য তারা তেমন উপযুক্ত নয়। তাতে কিছু আসে যায় না, তারা রয়েছে নিরাপদ কুকুনের ভেতর।

একদিন একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। আমি আবার ঘোড়দৌড়ের মাঠের কথা বলছি।

ওই পাগলা চেল্লারাজ সেখানে ছিল যথারীতি। কিন্তু সেখানে আরেকজনও ছিল, আপনি দেখে বুঝতে পারবেন তার চোখে কিছু সমস্যা রয়েছে। ওদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে ওরা রেগে আছে। সে চেল্লারাজের কাছে দাঁড়িয়ে শুনছিল। তারপর সে শুনল চেল্লারাজের ভবিষ্যৎবাণী পরের রেসের জন্য। সেদিক থেকে চেল্লারাজ ভালোই বলতে হবে। আর চেল্লারাজের টিপ অনুযায়ী রেগে থাকা চোখ বাজি ধরছিল।

দিনটা শেষ হয়ে আসছিল। আমি টয়লেট থেকে বেরোতে বেরোতে শুনলাম আর দেখলাম। রাগী চোখ চেঁচাচ্ছে চেল্লারাজের উপর, ‘চুপ কর বোকাচোদা! আমি তোকে খুন করব।’ চেল্লারাজ পেছন ঘুরে চলে যেতে যেতে বলছিল, ‘দয়া করো… দয়া করো…’ খুব ক্লান্তি আর বিরক্তি নিয়ে। রাগী চোখ তার পেছন পেছন, ‘খানকির ছেলে! তোকে আমি খুন করব!’

সিকিউরিটি এসে ধরে ফেলল রাগী চোখকে আর তাকে সরিয়ে নিয়ে গেল। রেসের মাঠে মৃত্যু ক্ষমার অযোগ্য।

বেচারা চেল্লারাজ। দিনের অবশিষ্টাংশ তো সেই ছিল। সে ছিল পুরোপুরি তার পরিচয় নির্দেশক চাকতি নিয়ে। জুয়া খেলাতে অবশ্যই, আপনাকে জ্যান্ত গিলে নিতে পারবে।

আমার এক বান্ধবী আমাকে একবার বলেছিল, ‘তোমার অবস্থা সত্যি খারাপ, তোমার দুটোতেই যাওয়া উচিৎ। অ্যালকোহলিক অ্যানোনিমাস আর গ্যাম্বলার অ্যানোনিমাসে।’ কিন্তু সে দুটোতেই কিছু মনে করত না যদি না তা বিছানার কুস্তির ব্যাঘাত ঘটাত। তখন সে ঘেন্না করত এগুলো।

একজন বন্ধুর কথা মনে পড়ছে যে ছিল ফুলটু জুয়াড়ি। সে একবার আমাকে বলেছিল, ‘আমি হারি বা জিতি তা নিয়ে আমি কেয়ার করি না, আমি শুধু জুয়া খেলে যেতে চাই।’

আমি সেরকম নই, আমি বড় বেশিবার না খেয়ে থেকেছি। আপনি যখন তরুণ তখন হাতে একটাও পয়সা না থাকাটা একটা হালকা রোমান্টিসিজম আনে।

যাইহোক চেল্লারাজ আবার পরের দিন উপস্থিত মাঠে। সেই একই ব্যাপার, প্রতিটা রেসের রেজাল্ট নিয়ে সেই চেঁচামিচি। বলতে গেলে ও কিছু কম জিনিয়াস নয় কারণ কখনওই ও এমন ঘোড়া বাছে না যেটা জিতবে। ভাবুন এটা। এটা করা কিন্তু খুব শক্ত ব্যাপার। মানে আমি বলতে চাইছি আপনি যদি কিছু নাও জানেন, আপনি শুধু একটা নাম্বার নিলেন, যেকোনও নাম্বার, ধরা যাক সেটা ৩। আপনি ওই ৩-এর উপর বাজি ধরলেন ২ বা ৩ দিন তাহলে নির্ঘাত আপনি পাবেন একটা ঘোড়া যেটা জিতবে অবশ্যই। কিন্তু ওর ভাগ্যে এটা ঘটে না। ও সত্যি একজন বিস্ময়। ও ঘোড়ার ব্যাপারে জানে সব, সময়ের ভগ্নাঙ্ক, ট্র্যাকের এদিক ওদিক, দ্রুতি, ক্লাস ইত্যাদি কিন্তু তবু সে বাছে হেরে যাওয়া ঘোড়াদের। ভাবুন এটা। তারপর এটা ভুলে যান কারণ এটা আপনাকে পাগলে দেবে।

আজ আমি পেয়েছি ২৭৫ ডলার। আমি রেস খেলা শুরু করেছিলাম অনেক দেরিতে, যখন আমার বয়স ৩৫। আমি গত ৩৬ বছর এটা চালিয়ে যাচ্ছি আর আমার মনে হয় আমি ওদের থেকে এখনও ৫০০০ ডলার পাই। যদি ভগবান আমাকে আরও ৮ বা ৯ বছর দেন আমি তাহলে মারাও যেতে পারি।

এই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে তাই না?

কী মনে হয় আপনার?

 

১০/১৫/৯১

রাত ১২টা ৫৫

সারা শরীর জুড়ে ক্লান্তি। এ সপ্তাহে কয়েকটা রাত কেটেছে মদ্যপানে। এটা মানতে হবে আগের মতো আর দ্রুত ফিট হতে পারি না আমি। ক্লান্তির সেরা ব্যাপারটা হল আপনি (লেখালিখিতে) কোনও অদ্ভুত বুনো ঘোষণা করেন না। যদিও সেটা যে খুব খারাপ এ কথা বলছি না আমি যদি না তা অভ্যাসে পরিণত হয়। লেখালিখির প্রাথমিকভাবে যা করা উচিৎ তা হল নিজের গাঁড় সামলানো। তা যদি সেটা করে তাহলে এমনিতেই তা হবে রসালো আর আমোদজনক।

একজন লেখককে আমি চিনি যে লোকজনকে ফোন করে বলে বেড়াচ্ছে সে প্রতি রাতে ৫ ঘণ্টা টাইপ করে। আমাদের হয়তো এটা শুনে চমৎকৃত হওয়া উচিৎ। নিশ্চয়ই, আমাকে এ কথা কি আপনাকে বলে দিতে হবে? আসলে সে কী টাইপ করছে সেটাই আসল কথা। আমি ভাবি সেকি তার ফোন করার সময়টুকু ওই ৫ ঘণ্টা লেখার সময়ের সাথে যোগ করে?

আমি এক থেকে ৪ ঘণ্টা টাইপ করতে পারি কিন্তু ওই ৪র্থ ঘণ্টা কীভাবে যেন হারিয়ে যায় একটা শূন্যতায়। একজনকে চিনতাম যে আমাকে বলেছিল, ‘আমরা সারা রাত লাগালাম।’ যে রাতে ৫ ঘণ্টা টাইপ করে এ সে নয়। কিন্তু দুজনের আলাপ আছে। হয়তো ওদের উচিৎ হবে কাজ ভাগ করে নেওয়া। মানে যে ৫ ঘণ্টা টাইপ করে সে লাগাল সারা রাত জুড়ে আর যে সারা রাত লাগায় সে টাইপ করল ৫ ঘণ্টা। বা তারা একে অপরকে লাগাল আর অন্য কেউ তখন টাইপ করে চলল। আমি এতে নেই বিশ্বাস করুন। মেয়েটিকে কাজে লাগান যদি আদৌ কোনও মেয়ে থেকে থাকে…

হুমমম… আজ রাতে কেমন যেন একটু বোকা বোকা লাগছে। সমানে ম্যাক্সিম গোর্কির কথা ভেবে চলেছি। কেন? আমি জানি না। খালি মনে হচ্ছে গোর্কি বলে আসলে কেউ ছিল না। কিছু লেখক যে ছিল তা আপনার মনে হবে যেমন তুর্গেনেভ বা ডি এইচ লরেন্স। হেমিংওয়েকে মনে হয় আধাআধি, কিছুটা আছে কিছুটা নেই। ও সত্যিই ছিল অথচ ছিল না ওখানে। কিন্তু গোর্কি? ও বেশ কিছু শক্তিশালী লেখাপত্র লিখেছিল। বিপ্লবের আগে। বিপ্লবের পরে ওর লেখালিখি কেমন ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গেল। পোঁদে লাগার জন্য সে আর বিশেষ কিছু পেল না। ঠিক ওই যুদ্ধবিরোধী লোকজনের মতো, যাদের একটা যুদ্ধ দরকার চালিয়ে যেতে গেলে। অনেকে আছে যারা ভালোই কামায় এইসব যুদ্ধবিরোধিতা করে। আর যখন যুদ্ধ থাকে না তারা বুঝতে পারে না কী করবে। যেমন গালফ যুদ্ধের সময় একদল লেখক, কবি একটা বিরাট প্রতিবাদের সভা প্ল্যান করে রেখেছিল, ওরা ওদের কবিতা আর বক্তৃতা নিয়ে তৈরি ছিল। হঠাৎ দুম করে যুদ্ধটা বন্ধ হয়ে গেল। আর প্রতিবাদ সভা করার সময়টা ছিল এক সপ্তাহ পরে। কিন্তু ওরা ওটাকে বাতিল না করে সভা করল। কারণ ওরা চাইছিল মঞ্চে উঠতে। ওদের দরকার ছিল মঞ্চটা। ব্যাপারটা অনেকটা যেন একজন রেড ইন্ডিয়ান বৃষ্টির নাচ নাচছে। আমি নিজে যুদ্ধবিরোধী। আমি অনেক আগে থেকেই যুদ্ধবিরোধী তখনও তা জনপ্রিয়, শালীন আর বুদ্ধিজীবিদের ব্যাপার স্যাপার হয়ে ওঠেনি। কিন্তু আমার সন্দেহ হয় এই পেশাদার যুদ্ধবিরোধীদের সাহস আর প্রেরণা নিয়ে। গোর্কি থেকে এই অবধি, কী সেটা? মাথায় ভাবনারা ঘুরে চলুক, কে পাত্তা দিচ্ছে?

ঘোড়দৌড়ের মাঠে আরও একটা ভালো দিন। চিন্তা করবেন না, আমি সব টাকা জিতে যাচ্ছি না। সাধারণত আমি ১০ বা ২০ ডলার বাজি ধরি জেতার জন্য আর যখন মনে হয় সব ঠিকঠাক যাচ্ছে তখন সেটা বেড়ে ৪০ ডলার অবধি যেতে পারে।

ঘোড়দৌড়ের মাঠ লোকজনকে আরও ঘেঁটে দেয়। প্রতিটা রেসের আগে দুজন আসে টিভিতে আর তারা কে জিততে পারে তা নিয়ে বলে। প্রতিটা ঘোড়দৌড়ের মাঠে দেখায় কতটা লস হল। যেভাবে অপারগতা দেখায় অন্যান্যরা, দালালির কাগজগুলো আর রেসের বাজি ধরার পদ্ধতিগুলো। এমনকি কম্পিউটারও ধরতে পারবে না এই সমস্ত খুঁত, যতই না ইনফরমেশন তাতে ভরে দেওয়া হোক না কেন। যখনই আপনি কাউকে পয়সা দিন না কেন কিছু করতে আপনি হারবেনই। এটার ভেতর আছে আপনার সাইক্রিয়াটিস্ট, আপনার সাইকোলজিস্ট, আপনার ব্রোকার, আপনার ওয়ার্কশপের শিক্ষক আর আপনার ইত্যাদি ইত্যাদি।

পুনরায় বিন্যাস করে এগিয়ে চলা ছাড়া আপনাকে কিছুই কেউ শেখায় না একটা হারের পর। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ ভয়ে কেঁপে ওঠে। তারা হারটাকে এত ভয় পায় যে শেষ হয়ে যায়। তারা বড় বেশি প্রভাবিত, বড় বেশি অভ্যস্ত এটা শুনতে যে তাদের কী করতে হবে। এটা শুরু হয় ফ্যামিলি দিয়ে, স্কুলের ভেতর এটা খেলা করে আর গিয়ে পৌঁছোয় ব্যবসার জগতে।

দেখুন আমার কয়েকটা দিন ভালো কেটেছে রেসের মাঠে আর হঠাৎ আমি জেনে গেছি সব।

এই রাতের ভেতর একটা দরজা খোলা আছে আর আমি এখানে বসে বসে জমে যাচ্ছি কিন্তু আমি উঠে দরজাটা বন্ধ করতে যাব না কারণ এই শব্দগুলো আমার সাথে দৌড়চ্ছে আর আমার এত ভালো লাগছে তা যে আমি চাই না তা বন্ধ হোক। কিন্তু বাঁড়া আমি উঠে যাব। আমি উঠে দরজাটা বন্ধ করব আর মুতব।

যাক করে ফেললাম। দুটো জিনিসই। এমনকি একটা সোয়াটারও গায়ে দিয়ে নিয়েছি। বুড়ো এক লেখক সোয়েটার গায়ে দিল, বসল, আড়চোখে তাকাল কম্পিঊটারের দিকে আর লিখে চলল জীবন নিয়ে। আমরা আর কত ধার্মিক হতে পারি? হে যীশু, তুমি কি কখনও ভেবেছ এক জীবনে একটা মানুষ কতটা মোতে? কতটা সে খায়, হাগে? টন টন। ভয়ঙ্কর। সব থেকে ভালো হল আমরা যদি মরে গিয়ে কেটে পড়তে পারি এখান থেকে, আমরা বিষিয়ে ফেলছি সবকিছু তা দিয়ে যা আমরা ত্যাগ করছি। বাঁড়া ওই নাচের মেয়েরাও তাই করে।

কাল কোনও ঘোড়ার ব্যাপার নেই। মঙ্গলবার অফ ডে।

ভাবছি নিচে নামি আর বসি গিয়ে বৌয়ের সঙ্গে, দেখি বোকা বাস্কের দিকে। আমি হয় রেসের মাঠে নয়তো এই যন্ত্রের সাথে। হয়তো ওর ভালোই লাগে ব্যাপারটা। তাইতো মনে হয়। যাক এবার যাচ্ছি আমি। আমি একজন ভালো লোক, তাই না? সিঁড়ি দিয়ে নামছি। আমার সাথে থাকাটা অদ্ভুত নিশ্চয়ই। আমার কাছে তো ব্যাপারটা অদ্ভুত।

শুভ রাত্রি।

(আবার আগামী সংখ্যায়)

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4881 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...