পঞ্চায়েত ও বীরভূম মডেল

মলয় তেওয়ারী

 

“যথার্থ এই বীরভূমি–
উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে
পেয়েছি শেষ তীরভূমি”

বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ার যে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলের সামনে রেখেছিলেন তা সবচেয়ে সফলভাবে কার্যকর হয় বীরভূম জেলাতে। তবে, পাঁচ বছর আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনেই বীরভূমের টিএমসি সুপ্রিমো অনুব্রত মণ্ডল অন্ততপক্ষে লাভপুর ও নানুর এই দু’টি ব্লকে সাফল্যের সাথে এই পদ্ধতি লাগু করেছিলেন। এবারে মমতা ব্যানার্জী তা সারা বাংলায় ছড়িয়ে দিলেন। কেবল ‘চড়াম চড়াম’, ‘গুড় বাতাসা’, ‘মশারি’ বা ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে যাবে’-র মতো কর্মপন্থার নিরিখেই নয়, বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বর্ণহিন্দু সাম্প্রদায়িকতার প্রয়োগের কৌশলেও মমতা ব্যানার্জী অনুব্রতর বীরভূম মডেলকেই গ্রহণ করেন। উপরে উদ্ধৃত, বহুল চর্চিত কবিতাটিতে শঙ্খ ঘোষ যে বীরভূমকে ‘শেষ তীরভূমি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তা নিছক অন্তমিলের তাগিদে নয়।

বীরভূম জেলার মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশের ওপর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এবং আর এস এস এই জেলায় দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছে। কুরবানি বনাম দূর্গাপূজার দ্বন্দ্ব, ঘর ওয়াপসি, মন্দিরে গো-মুণ্ড ফেলার ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন, ফেসবুক পোস্টে ধর্মীয় উস্কানি ও তাকে ধরে সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা, পীরের মাজারের নয়া তোরণ ও তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সমাবেশ, শেষে রামনবমী মিছিল ও হনুমানপূজার রাজনীতি, তারাপীঠে একান্নপীঠ মন্দির নির্মাণের ঘোষণা, কামাখ্যার পুরোহিত ডেকে একান্ন কেজি ঘৃত পুড়িয়ে যজ্ঞানুষ্ঠান ও পুরোহিত সম্মেলন — প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিতে বীরভূমই মমতাকে পথ দেখিয়েছে।

বিজেপি-আরএসএস কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হওয়ার মাস ছয়েকের মধ্যে ইলমবাজার, সাঁইথিয়া ও রামপুরহাট — এই তিনটি বিধানসভা ক্ষেত্রের ২৪টি পঞ্চায়েতের প্রায় ২৫০ গ্রাম বিজেপিতে যোগ দেয়, যে গ্রামগুলির অধিকাংশ মানুষই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। রাজ্যে টিএমসির ক্ষমতায় আসা ততদিনে তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পঞ্চায়েতকে বিরোধীশূন্য করার কথা বলেছিলেন অনুব্রত। সে প্রচেষ্টা সর্বাধিক নৃশংস চেহারা নিয়েছিল বোলপুর মহকুমার গ্রামগুলিতে। এই পর্বে আমরা পেয়েছিলাম অনুব্রতর “বোম্মারুন” ও মুখ্যমন্ত্রীর আদরভরা “ও ভালো সংগঠক, কিন্তু ওর মাথায় অক্সিজেন কম যায়।” বামফ্রন্টের দলগুলির সংগঠন ততদিনে ধ্বসে পড়েছে। পঞ্চায়েতের উন্নয়ন ব্যবসা ও বালি মাফিয়া রাজত্বের দখল নেওয়ার প্রতিযোগিতা টিএমসির রক্তাক্ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছিল। ফুলে ফেঁপে ওঠা টিএমসি নেতাদের অত্যাচার গ্রামবাসীদের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠছিল। গ্রামবাসীদের সাথে শাসকদলের সংঘাত তীব্র হয় একশো দিনের কাজের প্রশ্নে, যখন টিএমসির পক্ষ থেকে সমস্ত গ্রামীণ শ্রমিকের জব-কার্ড নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ার অভিযান শুরু হয়। প্রতিশ্রুতি মতো ‘একশো দিনের কাজ’ না পাওয়া, পুরনো কাজের বকেয়া মজুরি না পাওয়ার পর এই জব-কার্ড নিয়ে নেওয়ার অভিযান মেনে নেয়নি গ্রামবাসীরা। কিন্তু প্রতিবাদ করতেই শুরু হয় প্রবল দমন ও অত্যাচার। এই সমস্ত এলাকার মুসলমান চাষি ও মজুরেরা দীর্ঘদিন বামফ্রন্টের দলগুলিরই সদস্য সমর্থক ছিল। টিএমসিতে যোগ দেওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে দলের সাথে এই সংঘাতে, শাসক দলের অত্যাচারের মোকাবিলায়, অনন্যোপায় গ্রামবাসীরা ‘শক্ত খুঁটির’ সন্ধানে আরেক শাসক দল বিজেপির শরণাপন্ন হয়। পাড়ুই, মাকড়া ইত্যাদি গ্রামের নাম খবরের শিরোনামে আসতে থাকে। গ্রামবাসীদের এই মরিয়া প্রতিরোধে বিজেপি এই রাজ্যে পেয়ে যায় তাদের ‘প্রথম শহীদ’ যিনি ধর্মে মুসলমান। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে একটি ফেসবুক পোস্টকে ইস্যু করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইলমবাজারে হাজার হাজার মানুষের সাম্প্রদায়িক সমাবেশ এই প্রবণতাকে আটকে দেয়, জব-কার্ড দুর্নীতি ও পঞ্চায়েতে টিএমসির লুটতরাজের প্রশ্ন পেছনে চলে যায়। এরপর ধাপে ধাপে আসে একান্নপীঠ, হনুমান, যজ্ঞ, পুরোহিত সম্মেলন।

অজয় নদের উত্তর বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা ত্রিভুজাকৃতি বীরভূম জেলা পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড-বিহারের সীমানায় ছোটনাগপুর মালভূমির পূর্বঢাল থেকে নামো হয়ে হয়ে পূবের সীমানায় বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ জেলার গাঙ্গেয় সমভূমিতে মিশে যায়। পশ্চিম সীমানা বরাবর গাছপালা ও আবাদভূমিতে ছড়িয়ে থাকা আদিবাসী গ্রাম। আর সেসবের নীচে যক্ষের ধন। মালভূমির খনিজ মাল — পাথর ও কয়লা। সাঁওতাল বিদ্রোহের পুরনো এলাকা। বিদ্রোহ বামফ্রন্ট শাসনের শেষ দিকে আরেকবার দানা বাঁধে, লালগড়ে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফেটে পড়া বিদ্রোহের সমসময়েই, পাথর লুটেরা খাদান ক্রাশার মালিক চক্রের বিরুদ্ধে। পাথর লুঠ মানে আগে জমি লুঠ তারপর আকাশ বাতাস এবং সেই সাথে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনকেই লুটে নেওয়া। বিধ্বস্ত কৃষি, বিষাক্ত পরিবেশে সিলিকোসিস আর ফড়ে ও লম্পটদের দ্বারা প্রতারিত হতে হতে সাঁওতালরা অচানক বিদ্রোহে মাথা তোলে, মরে ও মারে। মালিকচক্র তাদের অমানবিক নৃশংস শোষণকে আড়াল করতে বাঙালি বনাম সাঁওতালের সমাবেশে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মালিক বা লাগোয়া গঞ্জ এলাকার এইসব বাঙালিরা তো মূলত মুসলমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের। ফলত বিজেপি মুসলমান বনাম হিন্দু সমাবেশ ঘটাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২০১০ সালে এই প্রচেষ্টায় বিজেপি তৎকালীন সাফল্য পায়নি, আদিবাসীদের আন্দোলন তাদের একটুও জমি দেয়নি। কিন্তু এক বছরের মধ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে টিএমসি আদিবাসীদের উত্থানকে দমন করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনুব্রত মণ্ডলের বাহিনীর সাথে আদিবাসীদের সংঘাত ক্রমশ বাড়তে থাকে। বোলপুর সাবডিভিশনের বেশ কয়েকটি জায়গায় আদিবাসী গাঁওতার কর্মীদের ওপর হামলা হয়। খাদান ক্রাশার এলাকায় আদিবাসী গাঁওতা বেশ কিছু পঞ্চায়েতে আসন জেতে। বোলপুরের সিয়ানে রাস্তার ওপর একটুকরো খাস জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করা আদিবাসী পরিবারগুলিকে বোম মেরে উৎখাত করা হয় টিএমসি নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতে। এবারকার নমিনেশন পর্বে জেলায় যেটুকু প্রত্যক্ষ প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয় অনুব্রত মণ্ডলকে তা মূলত আদিবাসীদের তীরধনুকের কাছেই। নলহাটিতে এই প্রতিরোধের সামনে ছিল রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে বাম দলগুলি। অন্যদিকে, মল্লারপুর হয়ে আদিবাসী বেল্টে ঢুকে পড়ে বিজেপি। এই মল্লারপুরেই আছে রাজ্যের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে পুরনো ‘বনবাসী আশ্রম’। আর এস এস এই আশ্রমে আদিবাসী ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার নামে হিন্দুত্বকরণ চালিয়ে আসছে বছরের পর বছর।

কৃষকের জমির প্রশ্নে আন্দোলনকে ক্যাশ করে ক্ষমতায় আসার পর মমতা ব্যানার্জী জমির প্রশ্নেই প্রথম বিদ্রোহের সম্মুখীন হন বীরভূমের লোবা গ্রামে। কয়লা খনির জন্য গড়ে ওঠা জমি মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে। বিদ্রোহের ব্যাপকতা ও দৃঢ়তা দেখে দ্রুত সিদ্ধান্তে পিছিয়ে আসেন মমতা। কিন্তু সেই দ্বন্দ্ব এখনও নিরসন হয়নি। দেউচা-পাচামি-হরিণসিঙ্ঘার খাদান-ক্রাশার মালিক-চক্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আদিবাসীরাও নতুন আক্রমণের সম্মুখীন। ওই এলাকায় পাথরের নীচে আছে কয়লা। রাজ্য সরকার তা উত্তোলনের জন্য বেঙ্গল-বীরভূম কোলফিল্ড লিমিটেড গঠন করেছে। এই প্রকল্পকেই বিগত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে বীরভূমের উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে প্রচার করে আসছে টিএমসি। এই উন্নয়নে বলি হতে চলেছে ঐ এলাকার হাজার হাজার আদিবাসী পরিবারের জীবনযাত্রা। বোলপুরের শিবপুরে বাম জমানায় শিল্পের নামে অধিগৃহীত জমি এখন ‘বিশ্ব বাংলা’ ও ‘গীতবিতান থিম সিটি’র নামে অনুব্রত চালিত জমি মাফিয়াদের দখলে। বিদ্রোহ করেছে শিবপুরের কৃষকেরাও। এসবকে চাপা দিতে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকেই হাতিয়ার করে টিএমসি। কিন্তু তা তার গণভিত্তিকে বিজেপির কাছে সহজগম্য করে দেয়। উন্নয়ন লুঠে বখরা না পাওয়া, পঞ্চায়েতে দলের টিকিট না পাওয়া বিক্ষুব্ধরা বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে। উন্নয়ন লুটেরাদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের আহ্বানও তাই জরুরি হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে গত পঞ্চায়েতেই দু’টি ব্লকে সাফল্য পেয়েছিল অনুব্রত মণ্ডল। ফলত মডেল হয় অনুব্রতর বীরভূম।

বিরোধীশূন্য করার পরিকল্পনা রচনা ও তার বাস্তবায়নে বীরভূম মডেল সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষিত হওয়ার সাথে সাথেই অনুব্রতর ‘মাছি গলতে না দেওয়া’ হুঙ্কার সমস্ত কাগজে রিপোর্টেড হয়। নমিনেশন শুরুর আগের রাত থেকেই সমস্ত বিডিও অফিসের সামনে প্যান্ডেল খাটিয়ে বসে পড়ে শাসক দল। প্রথম দিনেই অতর্কিত আক্রমণে বেহাল হয়ে পড়ে বিরোধী প্রার্থীরা। গাঁয়ে গাঁয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বার্তা ‘গেলেই বিস্ফোট মার হচ্ছে’, সন্ধ্যায় দাপিয়ে বেড়ায় বাইক বাহিনী। প্রথম দিনেই পুলিশ প্রশাসন বুঝিয়ে দেয় যে তারা শাসক দলের এই উদ্যোগে সরাসরি সামিল আছে। নানুর ও লাভপুর থানা অস্ত্র হাতে টিএমসি কর্মীদের দখল নেওয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। রামপুরহাটের পুলিশ কর্তা এমনকি সরাসরি একথাও জানিয়ে দেয় যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আছে বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের, তাদের কিছু করার নাই। এক মহিলার শাড়ি খুলে নেওয়া হয় রামপুরহাট এসডিও চত্বরে পুলিশ বাহিনীর সামনেই। এসডিও অফিস ও তার সামনের সমগ্র রাস্তা টিএমসির বাহিনী দখল নেয় আর বিরোধী দলগুলির জমায়েতকে ‘শান্তি রক্ষায়’ অনেক দূরে আটকে রাখে পুলিশের ব্যারিকেড। ডিএম অফিসের ভেতরেই কোপানো হয় এক বিরোধী নেতাকে। নলহাটিতে প্রতিরোধ গড়ে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন সেইসব বামপন্থী প্রার্থীদের বাড়ি রাতে থানার বড়বাবুর নেতৃত্বে পুলিশ যায় অস্ত্র ও গাঁজার প্যাকেট হাতে : প্রত্যাহার না করলে অস্ত্র ও নারকোটিক কেসে তুলবে। শীতলগ্রাম অঞ্চলে এরকম একটি ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পুলিশের পালিয়ে আসার ব্যতিক্রমী খবরও লোকমুখে পাই।

শেষে এই ‘শেষ তীরভূমি’ সম্পর্কে একটি কথা বলা দরকার। বিভিন্ন ‘শ্রী’-যুক্ত স্কিম বা প্রত্যন্ত গ্রামের ঢালাই রাস্তা কিংবা হাসপাতালগুলির চেহারা ফেরানোর প্রচেষ্টা ইত্যাদি যেটুকু সদর্থক কাজ মমতার সরকার বিগত দিনগুলিতে করেছে তাকে এই বীরভূম মডেল কার্যত নস্যাৎ করে দেয়। সুফল পাওয়া মানুষগুলিও এই মডেলে নিষ্ক্রিয় থেকে যায়। নিজেদের সমর্থন ভিত্তির ওপর নয়, সমগ্র উদ্যোগটাই দাঁড়িয়ে থাকে মূলত পুলিশ প্রশাসন ও অংশত ভাড়াটে বাহিনীর ওপর। টিকিট বিতরণে নিচুতলার কর্মীদের কোনও মতামত না থাকায় ভেতর থেকে দুর্বল হয়ে যায় ‘তৃণমূল’ কংগ্রেস, ওপরের কৃপায় পাওয়া আসন ও কর্মীদের দ্বারা সংগঠিত প্রচার ব্যাতিরেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাওয়া জয় পঞ্চায়েতকে করে তুলবে আরও স্বৈরাচারী, গ্রামের দলীয় কর্মীরা হয়ে পড়বে সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন। এবং বাস্তবে করা উন্নয়নের সমস্ত ছবি ঢেকে দিয়ে মানুষের নজরে প্রকট হয়ে উঠবে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষমতাতন্ত্রের ‘উন্নয়ন’।

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4879 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

1 Comment

আপনার মতামত...