প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
১.
‘I don’t think we did go blind, I think we are blind, Blind but seeing, Blind people who can see, but do not see.’
জেএনইউ ছাত্রনেতা ওমর খালিদের উপর দিল্লিতে হওয়া সাম্প্রতিক আক্রমণ নিয়ে লিখতে বসেই সবার আগে মনে পড়ে গেল সারামাগোর কথা। নোবেলজয়ী পর্তুগিজ কথা-সাহিত্যিক হোসে সারামাগো। ‘ব্লাইন্ডনেস’ নামে তার একটা অদ্ভুত চমক দেয়া বই পড়েছিলাম বহুদিন আগে। আজ বারবার সেটাই ঘুরে ফিরে আসছে মাথার ভেতর। বরং একটু খুলেই বলা যাক।
মনে করুন, একটা শহর। সুন্দর আধুনিক উন্নত শহর। সেখানে তথাকথিত আধুনিকমনা, রুচিশীল, সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের বাস। আচমকাই অজ্ঞাত কারণে সেই শহরে এক মহামারীর প্রাদুর্ভাব হয়। সেই মহামারী ‘অন্ধত্ব’ নিয়ে। যেখানে সেখানে, যখন তখন মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে। অন্ধের দিকে যে তাকায় সেও অন্ধ হয়ে যায়। ক্রমে গোটা শহর অন্ধমানুষের আস্তানায় পরিণত হয়৷ কিন্তু মজার ব্যাপার, এই অন্ধত্ব ‘তমসাঘন’, নিকষাকার নয়। এই অন্ধত্ব শুভ্র, শ্বেতবর্ণের।
সাধারণত অন্ধত্বের রঙ কালো। কিন্তু সাদা অন্ধত্ব? তা কী করে সম্ভব? এমনও কি হয়? হ্যাঁ সম্ভব! কারণ, এই অন্ধত্ব দৃষ্টিশক্তিজনিত অক্ষমতা নয়৷ এই অন্ধত্ব আমাদের মননের, মেধার, বিবেকের অবক্ষয়ের প্রতিফলন।
বলতে দ্বিধা নেই, দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (কেন্দ্রীয় শাসকদলের একাংশের কাছে যা ইতিমধ্যেই শিক্ষিত ‘দেশদ্রোহী’দের আঁতুরঘর হিসেবে কুখ্যাত) ছাত্রনেতা ওমর খালিদের উপর হওয়া সাম্প্রতিক হামলা নতুন করে আমাদের প্রগাঢ় অন্ধত্ব দান করেছে। দান করেছে সেই ‘শ্বেতান্ধতা’ যার কাছে এসে আমরা আরও একবার বুঝতে পারছি, ক্রমশ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে আমাদের বোধ ও বিবেক।
২.
‘If we cannot live entirely like human beings, at least let us do everything in our power not to live entirely like animals.’
ওমরের উপর যখন হামলা হয় তখন আমি অফিসে। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কফি খেতে খেতে হঠাতই শুনি গুলির আওয়াজ। প্রথমে ভাবি বুঝি টায়ার ফাটার শব্দ। কিন্তু নিচে তাকাতেই কন্সটিটিউশন ক্লাবের সামনে জটলা চোখে পড়ে। চোখে পড়ে ভিড় ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা উত্তেজনার আবহ। সেদিন কন্সটিটিউশন ক্লাবে পাশাপাশি চলছিল দু’ দুটি অনুষ্ঠান। একটিতে ‘খওফ সে আজাদি’ শীর্ষক একটি হিংসাবিরোধী অ-রাজনৈতিক মঞ্চের আলোচনাসভা ও অন্যটিতে দিল্লি প্রদেশ বিজেপির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক। বলাবাহুল্য, প্রথম অনুষ্ঠানটি-তে বক্তা হয়ে এসেছিলেন খালিদ। ক্লাবের বাইরে চারবন্ধু চা খেতে গিয়ে সম্মুখীন হন এই ভয়াবহ হামলার। সাদা জামা পড়া এক ব্যক্তি অতর্কিতে পিছন থেকে টিপে ধরেছিল ওমরের গলা। প্রবল আক্রোশে। বেপরোয়াভাবে তাকে মারতে মারতে শুইয়ে দিয়েছিল মাটিতে। পকেট থেকে টেনে বের করেছিল পিস্তল। কিন্ত গুলি করার আগেই ওমরের বন্ধুরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ওপর। বেগতিক দেখে এক ছুটে চলন্ত রাস্তা পেরিয়ে পালানোর সময় পিস্তল মাটিতে ছিটকে পড়ে। এক রাউন্ড ফায়ার হয়। সাথেসাথে খবর ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র৷ আসে পুলিশ। ডিসিপি মধুর ভার্মার নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত। ওমরের সাথে কথা বলতে আমিও যাই সেখানে। কিন্তু পুলিশ তাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে দুজন দুষ্কৃতির ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। এই ঘটনার দুদিনের মাথায় একটি ভিডিও সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করে পাঞ্জাব থেকে এই দুই দুষ্কৃতি হামলার দায় স্বীকার করে। পরবর্তীকালে বিজেপি ও সংঘের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুজনের উপস্থিতি, এমনকী ‘সুদর্শন টিভি’ নামক বিজেপি মদতপুষ্ট নিউজ চ্যানেলের সংঘ ঘনিষ্ঠ মালিকের সাথে তাদের ছবিও ‘ভাইরাল’ হয়। সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এই ঘটনা নিয়ে আগুন জ্বলে ওঠে। এই হামলাকে কেন্দ্র করে রাতারাতি ভাগ হয়ে যায় ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’। একদিকে ওমরের উপর হওয়া এই প্রাণঘাতী হামলার যেমন নিন্দা ও সমালোচনা হয়েছে, তেমনই অন্য একটি দিক সরব হয়েছে আক্ষেপে, ওমর প্রাণে বেঁচে যাওয়ার অনুতাপে। আর এটাই ক্রমশ ভাবিয়ে তুলেছে আমায়।
ছবিসূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কেন আক্রান্ত হল ওমর? এই হামলা তার উপর নতুন কিছু নয়। এর আগেও হামলা হয়েছে তার উপর। নিরাপত্তা চেয়ে দিল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজও তা পাওয়া যায়নি। ওমর আক্রান্ত, কারণ দেশের একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভাবধারার অংশ তাকে ‘দেশদ্রোহী’ বলে ইতিমধ্যে আখ্যা দিয়েছে৷ কারন, জেএনইউ ক্যাম্পাসে আফজল গুরু বা ইয়াকুব মেমনের ‘অতর্কিত’ ফাঁসির বিরোধিতা করেছিলেন খালিদ। তিনি বলেছিলেন, ভারতীয় সংবিধান ও গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে নস্যাৎ করে আনা হয়েছিল ফাঁসির আদেশ। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দেয়া হয়নি এই দুই অভিজুক্তকে। তাই গোটা জেএনইউ ক্যাম্পাস জুড়ে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন। আর এই নিয়েই শুরু আরোপ-প্রত্যারোপের পালা। আজ যা ক্রমেই ‘মিথে’ পরিণত।
৩.
‘When all is said and done, what is clear is that all lives end before their time.’
গণতান্ত্রিক দেশে আমার, আপনার, সকলের মতপ্রকাশের অধিকার থাকাটাই স্বাভাবিক। স্বাভাবিক তার বিরুদ্ধে মতপ্রকাশেরও। কিন্তু শুধুমাত্র মত জাহির করতে গিয়ে বা অন্যের মতপ্রকাশ চিরতরে থামিয়ে দেয়ার জন্য যখন চলে গুলি, এমনকি চেষ্টা হয় প্রাননাশের — তখন তা আর গণতান্ত্রিক থাকে না। বরং গণতন্ত্রের বাঁজা মাটি ফুঁড়ে ওঠে স্বৈরতন্ত্রের সুর। গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ উল্টোটাই জাঁকিয়ে বসে সেখানে। আমার চিন্তা এই হামলা নিয়ে যতটা তার চেয়ে বেশি উদ্বেগ এই হামলার পিছনে লুকিয়ে থাকা সেই ভয়ানক ‘মস্তিষ্ক’গুলির উর্বরতা নিয়ে। এই ক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে আমি এক সাংবাদিক। কোনও মতাদর্শের প্রতি আনুগত্য আমার নীতিবিরুদ্ধ। তাই ওমরের অবস্থান, ক্যাম্পাসে আন্দোলন, ‘লড়কে লেঙ্গে আজাদি’ বা রাজনৈতিক ভাবধারা কোনওটাতেই সম্পৃক্ত নই। সম্পৃক্ত নই, কিন্তু তা বলে তার মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করা বা বুলেটের জোরে তা বন্ধ করার কুপ্রচেষ্টা কোনওমতেই সমর্থন করি না। সমর্থন করি না ওমরের উপর এই আক্রমণের, যা তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম এই উন্নয়নশীল সমাজের একটি চূড়ান্ত মানসিক অবক্ষয়ের লক্ষণ। ওমর বরাবরই কেন্দ্র সরকারের এক বিদগ্ধ সমালোচক। আমার, আপনার মতনই। সরকারি প্রকল্প হোক বা কেন্দ্রীয় নীতি, গেরুয়া বাহিনীর সন্ত্রাস হোক বা কাশ্মিরে মিলিটারি ‘আফস্পা অ্যাক্ট’ — সবার বিরোধিতায় তিনি সিদ্ধ। আর এতেই আপত্তি গেরুয়া বাহিনীর। ভারতীয় গণতন্ত্রে চিরকালই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অধিকার এবং সুষ্ঠ তর্কবিতর্ক প্রাধান্য পেয়েছে৷ প্রাধান্য পেয়েছে শব্দের পালটা শব্দ, যুক্তির পাল্টা যুক্তির সংস্কৃতি। কিন্তু কালক্রমে সেই পরিবেশ ক্রমশ পাল্টাচ্ছে গোটা দেশজুড়ে। সহিষ্ণুতার বদলে ঢুকে পড়ছে অসহিষ্ণুতা, হিংসা ও সন্ত্রাসের বেনোজল। চলছে যুক্তির বদলে যুক্তি নয় বরং চোখ উপড়ে নেয়ার পালা। আর এতেই আশংকিত আমরা। এখানে মতামতের স্থান ক্রমেই সংকুচিত হয়ে হতাহতের আতিশয্যে ঢাকা পড়ছে গণতন্ত্রের ‘চোখ’। নেমে আসছে সেই ‘শ্বেত অন্ধত্ব’… যা অতিক্রম করা ক্রমেই অসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই আশংকা আরও গভীরতর হয়ে ওঠে যখন সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এ জাতীয় ঘটনার খোলাখুলি সমর্থন উঠে আসে। দৃষ্টান্তস্বরূপ ওমর খালিদের উপর হওয়া প্রানঘাতী হামলা ব্যর্থ হওয়ার পর যখন একাধিক ব্যক্তি বলেন তারা এই ঘটনায় দুঃখিত কারণ ওমর এখনও ‘জীবিত’ তাই। কী ভয়াবহ এই অন্ধত্ব! কী ভয়াবহ এই ‘শ্বেতান্ধকার’। অতীতে বিরুদ্ধ মতামত পোষণকারীকে টমেটো, জুতো, কালি ছুঁড়ে মারার ঘটনাও উঠেছে ‘প্রতীকি’ প্রতিবাদ রূপে৷ কিন্তু অপছন্দের নিদর্শন রূপে ‘বুলেট’ উপহার দেয়া ভারতীয় সংস্কৃতিতে ‘বিরল’ই নয়, তীব্র নিন্দনীয়ও বটে।
৪.
‘Inside us there is something that has no name, that something is what we are.’
তবে আমরা কোন গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে এসেছি এতদিন? তবে কিসের দোহাই দিয়ে এসেছি আমাদের যাবতীয় শিক্ষার? এই যদি তার পরিণতি, তবে তা ভয়ংকর। অসহিষ্ণুতার আড়ালে কোথাও নিজের অজান্তেই দেশজোড়া ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ তৈরি করে চলিনি ত’ আমরা? ওমর খালিদ’ও এই গণতন্ত্রের ফসল, ঠিক তেমনই সেই ফসল তার উপর হামলাকারী ঘাতকেরা। কেন তবে দিন কে দিন এই সমাজ যুক্তি, প্রজ্ঞা ও মেধার বিচ্ছুরণ ভুলে ‘হস্ত থাকিতে কেন এত বাচালতা’-র আত্মবিধবংসী নীতিতে বেশি ভরসা করছে। এই সমস্যা শুধু ওমর খালিদ, কানহাইয়া কুমার, গোরক্ষপুরের ড. কাফিল খান বা রোহিত ভেমুলার মতো আক্রান্তদের নয়, এই সমস্যা আমাদের সকলের। এই জরা আকড়ে ধরছে গোটা দেশ৷ যেন দেখতে পাচ্ছি গোটা দেশজুড়ে ক্রমে নেমে আসছে সেই অনির্বচনীয় ‘শ্বেতান্ধকার’। তাই সময় থাকতে রুখে দাঁড়ানো, ঘুরে দাঁড়ানো উচিত। বড় অস্থির সময়ে আমাদের বেঁচে থাকা। বড় দুর্গম সময়ে শ্বাস নিতে চলেছে আগামী প্রজন্ম। কিন্তু গণতন্ত্রে ভরসা হারানো পাপ। গণতন্ত্রের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ১২৫ কোটি মানুষের অস্তিত্ব সংগ্রামের ইতিহাস। একমাত্র সত্য-আধারিত শব্দ-কল্পই আমাদের উদ্ধার করতে পারে এই ঝাপসা ‘বোধে’র অন্ধকার থেকে৷ তাই হয়তো অনেক বেশি প্রয়োজন নির্ভীক হয়ে চোখে চোখ রাখার, শিরদাঁড়ায় জোর এনে। এই শিক্ষাই তুলে দিতে হবে আগামী প্রজন্মের হাতে। সাক্ষর হওয়ার পাশাপাশি তাই দরকার প্রকৃত শিক্ষিত হয়ে ওঠার।
৫.
‘You never know beforehand what people are capable of, you have to wait, give it time, it’s time that rules, time is our gambling partner on the other side of the table and it holds all the cards of the deck in its hand, we have to guess the winning cards of life, our lives.’
কথা শুরু করেছিলাম সারামাগোর ‘অন্ধত্ব’ নিয়ে৷ শেষ করা যাক সেই গল্প। গল্পের শেষে দেখা যাবে বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের আবহের মধ্যে দিয়ে হেঁটে অবশেষে এক এক করে সমস্ত শহরবাসী ফিরে পাবে দৃষ্টি৷ ঠিক যেমন অপ্রত্যাশিতভাবে ‘শ্বেতান্ধকার’ গ্রাস করেছিল তাদের, তেমনই আশ্চর্য এবং অপ্রত্যাশিতভাবেই একে একে সকলে ফিরে পাবে দৃষ্টি। দৃষ্টি ফিরে পাবেন গল্পের কথাকার’ও। কিন্তু তিনি বিষণ্ণ। দৃষ্টি ফিরে পেয়েও যিনি খুশি হতে পারছেন না। কারণ, অন্ধত্বের সময় তারই সমাজ যে ঘৃণ্য ও কদর্য নানা কাজ বা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা চূড়ান্ত অমানবিক ও বর্বরোচিত। যে মানুষ অন্ধ থাকাকালীন একাধিক দুষ্কর্ম করতে পারে, দৃষ্টি ফিরে পেলে না জানি আর কটি ‘চেরনোবিল’ ঘটাবে তারা। কারণ সারামাগো বর্ণিত এই ‘শ্বেত অন্ধত্ব’ মানুষের মনের অন্ধকার দিকের উজ্জ্বল প্রতিফলন। যা অন্ধ থাকাকালীন চিরতরে হারিয়েছে শহরের মানুষ। এরপরেই সূত্রধর দেখেন আবার অন্ধকার গ্রাস করছে তাকে। তিনি দেখতে পাচ্ছেন না কিছু। কিন্তু এবার সেই অন্ধত্বের রঙ আর সাদা নয়, বরং প্রকৃত কালো, ঘনান্ধকার৷ গোটা সমাজের পাপের বোঝার ভার ওই ‘কালো’ শূন্যতা।
সময় এসেছে আমাদেরও। সময় এসেছে এবার আমাদের যাবতীয় মনন, বোধ ও বিবেকের উপর জমা হওয়া অন্ধত্বের দূরীকরণের। তবেই আবার প্রকৃত গণতন্ত্রের আবহে চর্চার সুষ্ঠ ‘শব্দ কল্প দ্রুমে’র আবাহন সম্ভব।
বিসমিল্লাহ!
ঋণ : দ্য ব্লাইন্ডনেস / হোসে সারামাগো/ ১৯৯৫
ওমরের মতো ‘দেশদ্রোহী’ ও আপনার মতো সাংবাদিক ঝাড়েবংশে বাড়ুক!
অন্ধত্ব চিরকাল সুবিধাবাদী মানুষের কমফোর্ট জোন। লেখাটা ভালো লাগল।