তিনটি কবিতা
বিরহী কান্না
মনোহরী বাতাসের গায়ে জড়িয়ে থাকুক ভোরের ঘুম
আলস্য ঘিরে থাকা দিনান্তের অসহ বেদনার গান
নির্বিকার আলোছায়া ফেলে যায় পত্র-পুষ্পের সঙ্গমে
তন্ময় ধমনীস্রোত বেয়ে বয়ে চলে অন্ধরাত্রির প্রহর।
নিভৃতের প্রহর জুড়ে ভেঙে ভেঙে পড়ে নৈঃশব্দের গুন
প্রেমিকার উদ্বাস্তু হৃদয়ে তখন ঘন শীত, তীব্র পৌষমাস
কেবল শিশির বোঝে আগন্তুকের দেমাকী পায়ের ছাপ।
তফাৎ যাক তীব্র অনুশোচনায় গাঢ় ফাগুনের রঙ
বাতাসেও প্রেম থাকে, মিশে থাকে বিরহীর কান্নার গৌরব।
খোঁজ
নিষ্পাপ জীবনের অসংলগ্ন গতিপথে নিহিত বিলাসী চাঁদ
বিস্তৃত সরলরেখায় হেঁটে গিয়ে খুবলে খায় জারজ বোধ
আজন্ম লালিত অহংবোধে নেমে আসে রাত্রির কায়া
মেলে ধরে বিদঘুটে স্বপ্ন জড়ানো প্যাঁচার আর্তনাদ……।
নিমেষ শেষ হয়ে যায় ঐকান্তিক ভালবাসার প্রহর খুঁজে
তৃষিত আলোর চারপাশে নিঝুম আগুনে ঝুঁকে থাকে পতঙ্গ
মৃত্যুদোষ অনিবার্য নিয়মে মেলে ধরে ডানার বর্ণমালা।
অবিরাম মস্তিষ্ক দহন চলে বিনম্র এক জীবনের খোঁজে,
নির্ভার আকাঙ্খার আলো থেকে নিভে যায় পথের নিশান।
কল্যাণ
চিকন পুঁটিমাছের গায়ে লাল রঙ সিঁথি যেন গৃহস্থের পথ
হেঁটে যায় সংসারের দৃশ্যবদল রূপের অনিবার্য আত্মকথন
চেনা-অচেনা মুখের ভিড়ে তলিয়ে যাওয়া দৃশ্যতর ছায়া
দিনান্তের চিতায় জ্বেলে যায় সন্ধ্যাতারা, গৃহস্থের কল্যাণ।
নৌকা কেবল বোঝে মাস্তুলে লেগে থাকা বাতাসের অভিমান
তেমনই গৃহস্থের কড়িকাঠে বাজে চেনা-অচেনা সুখ দুঃখ
নিষেধের বেড়া ভাঙা জোয়ারের মতো তীব্র মানুষ-মানুষীর ঘ্রাণ।
দিগন্ত জলের কাছে গচ্ছিত রেখে যায় ছুঁয়ে থাকার গৌরব
প্রিয় সব মুখের আদলে সংসারও খুঁজে যায় আগামীর বীজধান।