তিনটি কবিতা

আন্তন

 

আমি মেঘদলের প্রেমিক, মালভূমি চিনিই না
হায় রক্তপাত, শিরস্ত্রাণ, চেক্‌ বসন্ত বৈকাল
তোমরা অল্প ভেসে এসো, স্কার্ফের পদ্ধতি ক্রীড়ায়
এসো আতরে, এখানে ঢেউয়ের প্রবাহে পালক
কত পাখিময় সন্ততি, কত ঠোঁটের প্রত্ন, দেশ
কী যে তোমাদের চালাঘর, তন্তু পরিভাষা ক্লাস
এখানে যে প্রাকৃতরেখা, ধৃতিমান তরঙ্গে স্ফীত
পরমাণুসমূহ ভেঙে কোয়ার্কে উত্তরণ ঘটে
ভাষাহীন মুখের কোনও প্রকার মল্লারে নেই
খুব কি ব্যঞ্জনা? পরমায়ু, কল্পভাষ্যে অপ্রতুল?
আমারও তো দুই হাতে এক পৃথিবী ভগ্নাংশে
ওলট-পালট হয়ে কিছুবা নক্ষত্রসংহিতা
অথবা জল, যে অঞ্চলে সম্বোধন, অদৃশ্যপদী
এইসব উপদ্রুত, তবে মানুষ, বিশ্বাস করো।।

 

ঠোঁটের সাঁড়াশিতে নিস্তার চাইছ অভূতপূর্ব
এমন দিবালোক, দুঃখের প্রহর, কোত্থাও পড়িনি
এ কি সেই কর্কশ ঘণ্টাধ্বনি, পাঁজর উপড়ে রন্ধন
তোমাকে ঘৃণা নয় যেহেতু শোকপ্রস্তাবে প্রাচীন হয়েছ
কী যে এক শরীরের কথা, ভূমিহীন, জলেরও বিপরীত
তীব্র গতি, সংকোচে হরিণ যার মুখ্য স্মারক
শহরের গাছগুলিতে ফুটে উঠেছে শিল্প, শিল্পের ক্রুশ
এইভাবে বারান্দায় গুটিয়ে আসে করবীর রুমাল
যে গল্পে সবাই যাযাবর, তাদেরই দীক্ষা, পৌষ আগুনে
আমায় খুঁজে পাবে, যেন ফাঁকা ঘরে উপজীব্য প্রেত।।

 

হাঃ, যতক্ষণ না এই একচক্ষু শিশুর দুঃখ ঘোচাচ্ছি
আমাদের মৃত্যু নেই, আমাদের করবী ফুলও নেই
ছেঁড়া কামিজে ঝুলে আছে অবৈতনিক শ্রমের হিসেব
নিমপথযাত্রী নিজের প্রণামটুকু ঢেকেছে কোথাও
আমাদের শ্রেষ্ঠ উপায়গুলো ক্ষয় হয়ে উড়েছে বাতাসে
আমাদের চাষাবাদ সম্প্রীতি লিখে রাখেনি প্রায় কেউই
সহস্র বৎসর জলবিন্দুতে ঠোঁট, অপর্ণা মাটির মলম
আমাদের নৌকার গানে ভিক্ষাপাত্র উল্টে দেয় বাউল
তবুও, যতটুকু বাষ্প, ততটাই পৃথিবী গড়ে যাব
যে অশ্রু কাগজের, গ্রামাঞ্চল পেরিয়ে নদ-নদীর
যে দৃষ্টি মীনপ্রবাহ, অরুন্ধতী ফুল তুলে ক্ষীণ আলো
তার শেষ প্রান্তটুকু সমর্পণ করে স্বর তুলে বলব
নির্বাপিত সমাজে পুনরায় মেধার সঞ্চার হবে, যেহেতু
এই ভাষা তোমার, তুমি এ’দেশের একমাত্র জাতক।।

 

About চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম 4661 Articles
ইন্টারনেটের নতুন কাগজ

Be the first to comment

আপনার মতামত...